মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০২:০০ অপরাহ্ন

খবরের শিরোনাম:

অতীতে এমন বন্যা দেখিনি

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি বেড়েই চলছে। এবার বন্যার ভয়াবহতা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৭ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সুনামগঞ্জের পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্ট দিয়ে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রভাবিত হচ্ছে ৷ গত বুধবার বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল।

সুনামগঞ্জ পৌর শহরের সবচেয়ে উঁচু স্থানও ডুবে গেছে। এরই মধ্যে সুনামগঞ্জ সদর,বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, দোয়ারা বাজার, ছাতক, জামালগঞ্জ, শান্তিগঞ্জসহ ৭ উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। সুনামগঞ্জ পৌর শহরের মূল ৮টির বেশি পয়েন্টে পানি থাকায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। এ ছাড়া জেলা সদরের সঙ্গে ছাতক, জামালগঞ্জ, বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুরের যোগাযোগ বিছিন্ন রয়েছে।

এদিকে বন্যার পানি সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকার ঘরবাড়িতে প্রবেশ করেছে। শহরের নবীনগর, ষোলঘর, দুপাখালি, বনানীপাড়া, বলাকা, বিলপাড়, হাসন নগর, পশ্চিম তেঘরিয়া, উত্তর আরপিন নগর, মরাটিলা, নতুন পাড়াসহ বেশ কিছু এলাকার ঘর বাড়িতে হাঁটু সমান পানি।

তারা বলছেন, সুনামগঞ্জে অতীতে এমন বন্যা তারা দেখেননি। বন্যার পানি বৃদ্ধির ফলে মানুষের বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা প্লাবিত হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বন্যা কবলিত মানুষরা। এসব এলাকার মানুষ গবাদি পশু নিয়ে পড়েছেন বিপাকে।

পশ্চিম তেঘরিয়া এলাকার বাসিন্দারা বলেন, সকালে এত পানি ছিল না। এখন আমাদের ঘরে কোমর সমান পানি। ঘরের মালপত্র নিয়ে বিছানার উপর বসে আছি। যেভাবে পানি বাড়তে শুরু করছে, এভাবে আর দেখি নাই। ২০০৪ সালেও এমন বন্যা আমরা দেখিনি।

ষোলঘর এলাকার বাসিন্দারা বলেন, আমাদের ঘরে কোমর পানি হয়ে গেছে। বেশিরভাগ মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। স্ত্রী-ছেলেদের নিয়ে বড় চিন্তার মধ্যেই আছি।

সুনামগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, সুনামগঞ্জে বৃষ্টি থাকলেও উজানের বৃষ্টিপাত হচ্ছে খুবই বেশি। এর ফলে নদ-নদীর পানি দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে। উজানে বৃষ্টিপাত যদি কম তাহলে এই পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে।

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, প্রতিটি উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ছাতকে ১৭টি, দোয়ারাবাজারে ১৬টি এবং সুনামগঞ্জ সদরে ১০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যা দুর্গদের মধ্যে বাড়িঘরে থাকার অনুপযোগী সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা, শুকনো খাবারসহ সাময়িক খাদ্য সহায়তা দিয়ে সহায়তা করবে প্রশাসন।

তিনি আরো বলেন, প্রথম দফা বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই আবার দ্বিতীয় দফা বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় মানুষ বিপাকে পড়েছেন। বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহতা অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। সবার কাছে অনুরোধ, সবাই সতর্ক থাকবেন।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.
Developed by DesigUs