ঢাকা ১১:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo মাধবপুর বাস ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২০ Logo হবিগঞ্জে ভুয়া চিকিৎসকের একমাসের কারাদণ্ড Logo স্বৈরাচার পতনে ১৬ বছর অপেক্ষা নয়, তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Logo বাংলাদেশের মানুষ কল্পনাও করেনি যে কেবল চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত ‘জুলাই বিদ্রোহে’ রূপ নেবে। গত বছরের ১ জুলাই বাংলাদেশ এক অবিশ্বাস্য ঘটনার সাক্ষী হয়। এদিন শিক্ষার্থীদের ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন’ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’ রূপ নেয়। এটি ছিল প্রায় ১৬ বছরের স্বৈরতান্ত্রিক আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সূচনাবিন্দু। মানুষ কল্পনাও করেনি যে শুরুতে কেবল চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত ‘জুলাই বিদ্রোহে’ রূপ নেবে, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে। ছাত্রদের এই অসন্তোষের সূচনা ঘটে ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের সরকারি প্রজ্ঞাপনকে হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষণা করার রায়ের পর। সরকার ২০১৮ সালে তীব্র ছাত্র আন্দোলনের চাপে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করেছিল। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ে ৫৬ শতাংশ কোটা পুনঃপ্রবর্তিত হয়, যাতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, পশ্চাৎপদ জেলার জন্য ১০ শতাংশ, সংখ্যালঘুদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়। ছাত্ররা এই ব্যবস্থাকে মেধাবীদের প্রতি বৈষম্য হিসেবে মনে করে প্রতিবাদে রাস্তায় নামে। সরকার প্রতিবাদকারীদের কঠোরভাবে দমন করতে চাইলে পরিস্থিতি বিদ্রোহে রূপ নেয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারপন্থী সন্ত্রাসীরা একযোগে আক্রমণ চালালে অন্তত ১ হাজার ৪০০ জন নিহত এবং প্রায় ২০ হাজার জন আহত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাসে এটা ছিল সবচেয়ে নিষ্ঠুর দমনপীড়ন। অনেকে বিশ্বাস করেন, এই জুলাই বিদ্রোহের মধ্য দিয়েই ২০০৮ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন অনিবার্য হয়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ১ জুলাই এই আন্দোলন পুরো মাত্রায় শুরু হলেও এর গোড়াপত্তন ঘটে ৫ জুন। ওইদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রাস্তায় নামে। আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার ‘জুলাই : মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু’ বইতে লিখেছেন, ‘৫ জুন বিকেলে আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজের পাশে চানখারপুলে স্কুটি মেরামত করাচ্ছিলাম। তখন ফেসবুকে দেখি- হাইকোর্ট কোটা পুনর্বহাল করেছে। মনে হলো ২০১৮ সালের অর্জনগুলো ধূলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে।’ এরপর কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক বৈঠকের মাধ্যমে প্রতিবাদ কর্মসূচির সূচনা হয়। রাত সাড়ে ৭টায় ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী’ ব্যানারে একটি মিছিল বের হয় এবং সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যদিয়ে তা শেষ হয়। এই সমাবেশে তারা হাইকোর্টের রায়কে ‘মেধাবীদের সাথে তামাশা’ বলে প্রত্যাখ্যান করে। সমাবেশে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র, বর্তমানে জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপির প্রধান নাহিদ ইসলাম পরদিন ৬ জুন বিকেল ৫টায় রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশের ঘোষণা দেন। প্রায় পাঁচ থেকে ছয় শ’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওই মিছিলে অংশ নেয় এবং স্লোগান দেয়- ‘কোটা পদ্ধতি মানি না’, ‘হাইকোর্টের রায় মানি না’, ‘কোটা বাতিল করতেই হবে’। আসিফের বক্তব্যের সাথে একমত প্রকাশ করে নাহিদও ৫ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে তাদের প্রথম বৈঠকের কথা এবং কিভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে পেরেছিলেন তা স্মরণ করেন। নাহিদ পরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ঈদুল আজহার ছুটির আগে মাত্র তিন দিন আন্দোলনের সুযোগ পেয়েছিলাম।’ ৬ জুন ঢাবি, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জগন্নাথসহ দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করে। ৯ জুন শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল করে অ্যাটর্নি জেনারেল বরাবর একটি স্মারকলিপি জমা দেয়। এর প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে। শুনানির দিন ধার্য হয় ৪ জুলাই। ১০ জুন আবারো মিছিল হয় এবং শিক্ষার্থীরা সরকারকে ৩০ জুনের মধ্যে ২০১৮ সালের প্রজ্ঞাপন পুনর্বহাল করতে আল্টিমেটাম দেয়, না হলে সর্বাত্মক আন্দোলন শুরু করার ঘোষণা দেয়। আসিফ স্মরণ করেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ৩০ জুন পর্যন্ত ঈদের ছুটি ঘোষণা করেছিল, তাই আমরা সেই দিনটিকে আল্টিমেটামের সময়সীমা হিসেবে নির্ধারণ করি। আমরা সরকারকে সতর্কও করেছিলাম- যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হয়, তাহলে আমরা আবার আন্দোলন শুরু করব।’ ৩০ জুন সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা না আসায় ১ জুলাই ঢাবি, জগন্নাথ, জাবি, রাবি, চবি, বরিশাল ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমে পড়ে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কিছু সময়ের জন্য ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণ থেকে একটি মিছিল বের করে, যা রাজু ভাস্কর্যে শেষ হয়। সমাবেশ থেকে নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন, আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ও পরীক্ষার বর্জন চলবে। তিনি তিন দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন- ২ জুলাই দেশব্যাপী মহাসড়কে মিছিল, ৩ ও ৪ জুলাই রাজধানীর রাজু ভাস্কর্যে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সমাবেশ। সমাবেশে নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন- ৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন চলবে। সেই সাথে তিনি চারটি দাবি উত্থাপন করেন- ১. দ্রুত কোটা সংস্কারে কমিশন গঠন, যেন পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠী উপকৃত হয়। ২. কোটা পূরণ না হলে মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করা। ৩. নিয়োগে একাধিকবার কোটা সুবিধা ব্যবহার বন্ধ করা। ৪. প্রশাসনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। Logo হবিগঞ্জে শুঁটকি উৎপাদনে ভাটা Logo নবীগঞ্জ মসজিদে মাইকিং করে পুলিশের ওপর হামলা, আসামি ছিনতাই আটক ১৩ Logo চুনারুঘাটে হত্যা মামলার আসমী আ. মান্নান আটক-তাবলীগ জামাতে গিয়ে অপহরণ মামলা সাজিয়েছেন Logo আজমিরীগঞ্জ কালনী নদীর ভাঙনে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে পাড়ে বসে চোখ মুছছেন সুনিতী Logo কুলাউড়ায় হত্যাকান্ডের শিকার আনজুমের বাড়িতে আমিরে জামায়াত Logo মাধবপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ফার্মাসিস্ট নেই ৩০ বছর ধরে

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

শায়েস্তাগঞ্জের বাণী ডেস্ক ,

গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রীসহ ১০ জনকে আসামি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করা হয়েছে। পরে এ অভিযোগটি গ্রহণ করেছে তদন্ত সংস্থা।

বুধবার (১৪ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের কো-অর্ডিনেটর বরাবর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম এ আবেদন করেন।

আবেদনে গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে সারা বাংলাদেশে নিহত এবং এ সময়ে আহত হয়ে পরবর্তীতে বিভিন্ন তারিখে নিহতদের বিষয়ে অভিযোগটি কমপ্লেইন্ট রেজিস্টার ভুক্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩ এর ৮ ধারা অনুযায়ী আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বরা হয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩ এর ৩(২) ও ৪(১)/৪ (২) ধারা অনুযায়ী গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ করা হয়েছে।

অপরাধের ধরন হিসেবে বলা হয়েছে, ১ থেকে ৯ নং আসামীদের নির্দেশে ও পরিকল্পনায় অন্যান্য আসামীরা দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত ছাত্রজনতাদের হত্যা করে তাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দ্যেশ্যে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে।

অভিযোগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এছাড়া এ অভিযোগে সাবেক সেতুমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ২ নম্বর আসামি, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে তিন নম্বর সাবেক ডাক টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলককে চার নম্বর আসামি, সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ আলী আরাফাত ও তৎকালীন সরকারের কতিপয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যকে পাঁচ নম্বর আসামি, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে ছয় নম্বর আসামি, অতিরিক্ত আই জি পি ও সাবেক ডিবি প্রধান হারুন আর রশিদকে সাত নম্বর আসামি, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান ও কতিপয় অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যকে আট নম্বর আসামি, র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক মো. হারুন আর রশিদ এবং কতিপয় অসাধু র‍্যাব কর্মকর্তা ও সদস্যসহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কতিপয় অজ্ঞাতনামা অস্ত্রধারী নেতাকর্মীকে ৯ নম্বর আসামি এবং সংগঠন হিসাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনসমূহকে ১০ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
অভিযোগে প্রমাণ হিসেবে ১৬ জুলাই থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন তারিখে প্রকাশিত প্রথম আলো, বাংলাদেশ প্রতিদিন, বিবিসি বাংলা, দি ডেইলি স্টার বাংলা, আজকের পত্রিকা, দৈনিক ইনকিলাব, আনন্দ বাজার পত্রিকা, বাংলা পত্রিকা, আমাদের সময় ডট কমসহ অন্যান্য পত্রিকার কপি এবং শহীদ আলিফ আহমেদ সিয়ামের জন্ম সনদ, স্টুডেন্ট আইডি কার্ড ও মৃত্যু সনদ সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া বাদির এনআইডি কার্ড ও ওকালাতনামাও যুক্ত করা হয়েছে।

আবেদনে বলা হয়েছে, এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করছি যে,গত ১ জুন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ ছাত্রজনতা কর্তৃক সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংরক্ষণ পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে সমগ্র বাংলাদেশে আন্দোলন শুরু হয়। উক্ত আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে দেশব্যাপী ছাত্রজনতা কর্তৃক অবস্থান কর্মসূচি, বিক্ষোভ কর্মসূচি, অবরোধ কর্মসূচিসহ বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালিত হয়। উক্ত কর্মসূচি থেকে সরকারের প্রতি কোটা সংরক্ষণ পদ্ধতি সংস্কারের জোর দাবি জানানো হয়। আন্দোলনকারী ছাত্র জনতাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার হীন উদ্দেশ্যে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী আসামি শেখ হাসিনা সাংবাদিক সম্মেলনে আন্দোলন প্রতিহত করার জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান করেন এবং বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের আন্দোলনকারী ছাত্র জনতাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার নির্দেশনা প্রদান করেন, যা বিভিন্ন দেশী ও বিদেশি পত্র পত্রিকা ও টিভি নিউজ এ প্রকাশিত হয়।

এতে বলা হয়েছে, আসামি সাবেক সেতুমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং তৎকালীন সরকারের কতিপয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য একই উদ্দেশ্যে উসকানিমূলক বক্তব্য ও নির্দেশনা প্রদান করেন। আসামি ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলনকারী ছাত্র জনতাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার জন্য ছাত্রলীগই যথেষ্ট। তিনি আরো বলেন, কারফিউ চলাকালে দেখা মাত্র গুলি করা হবে। (বিবিসি বাংলা ২০/০৭/২০২৪ তারিখ এর অনলাইন রিপোর্ট)

এতে আরও বলা হয়, আসামি শেখ হাসিনা, আসামি ওবায়দুল কাদের ও অন্যান্য আসামিদের এহেন নির্দেশনায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনার তারিখে দেশব্যাপী বিভিন্ন স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের উপর আগ্নেয় ও দেশীয় অস্ত্র সন্ত্র নিয়ে হামলা করে এবং তাদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে এবং কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠন করে। উক্ত আক্রমণে দেশব্যাপী অসংখ্য সাধারণ ছাত্রীরা যৌন নির্যাতনের স্বীকার হয়। উক্ত কোটা সংস্কারের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ ছাত্রজনতা কর্তৃক দেশব্যাপী কমপ্লিট শাট ডাউনের ডাক দেয়া হয়।।

এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশব্যাপী সাধারণ ছাত্রজনতা রাস্তায় নেমে আসে। আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার লক্ষ্যে উক্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ১-৭ নং আসামির প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় অন্যান্য আসামিরা সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র জনতার উপর নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করে। এতে ১৬ ‍জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আবু সাইদ পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। একই দিনে আরো পাঁচজনকে আসামি কতিপয় পুলিশ সদস্য ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৮ জুলাই ৪২ জন, ১৯ তারিখে ৮৬ জন, ২০ তারিখে ৩৮ জন, ২১ জুলাই থেকে ০৩ আগস্ট পর্যন্ত ৪৫ জন, ০৪ আগস্ট ১১৪ জন এবং ০৫ আগস্ট ১০৮ জনসহ কমপক্ষে ৪৩৯ জন আন্দোলনরত ছাত্র জনতাদের আসামি পুলিশ/র‍্যাব সদস্য ও আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা কর্তৃক গুলি করে ও কুপিয়ে গণহত্যা করা হয়। এরপর ০৫ তারিখে ছাত্র জনতার অসহযোগ গণআন্দোনের মুখে ১ নং আসামি শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে সামরিক হেলিকপ্টার যোগে পালিয়ে যায়। অন্যান্য আসামিদের মধ্যে অনেকেই আত্মগোপনে চলে যায়।

এছাড়া গত ০৫ আগস্ট ঢাকার সাভারস্থ ডেইরি ফার্ম হাইস্কুলের ৯ম শ্রেণির ছাত্র আরিফ আহমেদ সিয়াম আন্দোলনরত অবস্থায় আন্দোলনকারী ছাত্র হওয়ার কারণে আসামিদের নির্দেশে পুলিশ সদস্য কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হয়ে ০৭ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।এইভাবে ১৫ জুলাই থেকে ০৫ আগস্ট পর্যন্ত সমগ্র বাংলাদেশের বিভিন্ন স্কুল কলেজ মাদ্রাসা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ সমগ্র দেশের বিভিন্ন স্থানে আসামি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার সরকারের কতিপয় মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কতিপয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশে ও পরিকল্পনায় কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্য, কতিপয় র‍্যাব কর্মকর্তা ও র‍্যাব সদস্য, কতিপয় অস্ত্রধারী আওয়ামী লীগ, যুবলীগের ও ছাত্রলীগ নেতা কর্মী কর্তৃক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্রজনতাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দ্যেশ্যে তাদের উপর দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে কমপক্ষে ৪৩৯ জন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী হত্যা করা হয়।

উক্ত ঘটনায় কমপক্ষে ১০ হাজার আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক জখম হয় এবং এক হাজার হাজার আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা গুলিবিদ্ধ হয়ে চিরতরে অন্ধ ও পঙ্গুত্ব বরণ করে। কয়েক হাজার ছাত্র জনতা শারীরিক ও মানসিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উক্ত ঘটনায় আসামি কর্তৃক আন্দোলনরত ছাত্রজনতা সহ কমপক্ষে ৩২ জন শিশু নির্মম গণহত্যার শিকার হয়। আন্দোলনরত জনতাকে নির্মূল করতে আসামি র‍্যাব সদস্যরা হেলিকপ্টার ব্যবহার করে নির্বিচারে গুলি বর্ষণ ও বোমা নিক্ষেপ করে গণহত্যা করে।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ৪ ও৫ নং আসামিদ্বয় অন্যান্য আসামিদের নির্দেশে দেশব্যাপী ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে গণহত্যা চালায়, হত্যাযজ্ঞের সময় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয় যাতে করে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের তথ্য গোপন রাখা যায় ও গুজব ছড়ানোর যায়। আসামিরা দেশের সকল ইলেকট্রনিক/প্রিন্ট মিডিয়া জোরপূর্বক নিয়ন্ত্রণ করে মানুষকে গণহত্যার তথ্য জানতে বাধাগ্রস্ত করে।

৭ নং আসামি অন্যান্য আসামিদের নির্দেশে গণহত্যার উদ্দেশ্যে আন্দোলনরত ৭ জন সমন্বায়ক ছাত্রনেতাসহ অনেককে বেআইনিভাবে ডিবি কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে আটক করে রেখে তাদের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে।

১ থেকে ৯ নং আসামির নির্দেশে ও পরিকল্পনায় সারা দেশে ২৮৬টি মিথ্যা মামলায় সাড়ে ৪ লাখ আন্দোলনরত ছাত্রজনতাকে আসামি করে, তার মধ্যে ১২ হাজার আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করে কারাগারে রেখে তাদের মারাত্মক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়।

আবেদনে বলা হয়, এহেন কার্যকক্রমের মাধ্যমে সকল আসামিরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩ এর ৩(২), ৪(১)/৪ (২) ধারা অনুযায়ী গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠন করেছেন। যা দেশেবিদেশের বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় ও টিভি নিউজে প্রকাশিত হয়। অতএব নিবেদন, অভিযোগটি কমপ্লেইন্ট রেজিস্টারভুক্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে উপর্যুক্ত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ এর যথাযথ তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মর্জি হয়।

গণহত্যা

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৬:০৭:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪
৭৮ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের মানুষ কল্পনাও করেনি যে কেবল চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত ‘জুলাই বিদ্রোহে’ রূপ নেবে। গত বছরের ১ জুলাই বাংলাদেশ এক অবিশ্বাস্য ঘটনার সাক্ষী হয়। এদিন শিক্ষার্থীদের ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন’ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’ রূপ নেয়। এটি ছিল প্রায় ১৬ বছরের স্বৈরতান্ত্রিক আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সূচনাবিন্দু। মানুষ কল্পনাও করেনি যে শুরুতে কেবল চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত ‘জুলাই বিদ্রোহে’ রূপ নেবে, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে। ছাত্রদের এই অসন্তোষের সূচনা ঘটে ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের সরকারি প্রজ্ঞাপনকে হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষণা করার রায়ের পর। সরকার ২০১৮ সালে তীব্র ছাত্র আন্দোলনের চাপে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করেছিল। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ে ৫৬ শতাংশ কোটা পুনঃপ্রবর্তিত হয়, যাতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, পশ্চাৎপদ জেলার জন্য ১০ শতাংশ, সংখ্যালঘুদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়। ছাত্ররা এই ব্যবস্থাকে মেধাবীদের প্রতি বৈষম্য হিসেবে মনে করে প্রতিবাদে রাস্তায় নামে। সরকার প্রতিবাদকারীদের কঠোরভাবে দমন করতে চাইলে পরিস্থিতি বিদ্রোহে রূপ নেয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারপন্থী সন্ত্রাসীরা একযোগে আক্রমণ চালালে অন্তত ১ হাজার ৪০০ জন নিহত এবং প্রায় ২০ হাজার জন আহত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাসে এটা ছিল সবচেয়ে নিষ্ঠুর দমনপীড়ন। অনেকে বিশ্বাস করেন, এই জুলাই বিদ্রোহের মধ্য দিয়েই ২০০৮ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন অনিবার্য হয়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ১ জুলাই এই আন্দোলন পুরো মাত্রায় শুরু হলেও এর গোড়াপত্তন ঘটে ৫ জুন। ওইদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রাস্তায় নামে। আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার ‘জুলাই : মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু’ বইতে লিখেছেন, ‘৫ জুন বিকেলে আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজের পাশে চানখারপুলে স্কুটি মেরামত করাচ্ছিলাম। তখন ফেসবুকে দেখি- হাইকোর্ট কোটা পুনর্বহাল করেছে। মনে হলো ২০১৮ সালের অর্জনগুলো ধূলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে।’ এরপর কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক বৈঠকের মাধ্যমে প্রতিবাদ কর্মসূচির সূচনা হয়। রাত সাড়ে ৭টায় ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী’ ব্যানারে একটি মিছিল বের হয় এবং সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যদিয়ে তা শেষ হয়। এই সমাবেশে তারা হাইকোর্টের রায়কে ‘মেধাবীদের সাথে তামাশা’ বলে প্রত্যাখ্যান করে। সমাবেশে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র, বর্তমানে জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপির প্রধান নাহিদ ইসলাম পরদিন ৬ জুন বিকেল ৫টায় রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশের ঘোষণা দেন। প্রায় পাঁচ থেকে ছয় শ’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওই মিছিলে অংশ নেয় এবং স্লোগান দেয়- ‘কোটা পদ্ধতি মানি না’, ‘হাইকোর্টের রায় মানি না’, ‘কোটা বাতিল করতেই হবে’। আসিফের বক্তব্যের সাথে একমত প্রকাশ করে নাহিদও ৫ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে তাদের প্রথম বৈঠকের কথা এবং কিভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে পেরেছিলেন তা স্মরণ করেন। নাহিদ পরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ঈদুল আজহার ছুটির আগে মাত্র তিন দিন আন্দোলনের সুযোগ পেয়েছিলাম।’ ৬ জুন ঢাবি, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জগন্নাথসহ দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করে। ৯ জুন শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল করে অ্যাটর্নি জেনারেল বরাবর একটি স্মারকলিপি জমা দেয়। এর প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে। শুনানির দিন ধার্য হয় ৪ জুলাই। ১০ জুন আবারো মিছিল হয় এবং শিক্ষার্থীরা সরকারকে ৩০ জুনের মধ্যে ২০১৮ সালের প্রজ্ঞাপন পুনর্বহাল করতে আল্টিমেটাম দেয়, না হলে সর্বাত্মক আন্দোলন শুরু করার ঘোষণা দেয়। আসিফ স্মরণ করেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ৩০ জুন পর্যন্ত ঈদের ছুটি ঘোষণা করেছিল, তাই আমরা সেই দিনটিকে আল্টিমেটামের সময়সীমা হিসেবে নির্ধারণ করি। আমরা সরকারকে সতর্কও করেছিলাম- যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হয়, তাহলে আমরা আবার আন্দোলন শুরু করব।’ ৩০ জুন সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা না আসায় ১ জুলাই ঢাবি, জগন্নাথ, জাবি, রাবি, চবি, বরিশাল ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমে পড়ে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কিছু সময়ের জন্য ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণ থেকে একটি মিছিল বের করে, যা রাজু ভাস্কর্যে শেষ হয়। সমাবেশ থেকে নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন, আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ও পরীক্ষার বর্জন চলবে। তিনি তিন দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন- ২ জুলাই দেশব্যাপী মহাসড়কে মিছিল, ৩ ও ৪ জুলাই রাজধানীর রাজু ভাস্কর্যে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সমাবেশ। সমাবেশে নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন- ৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন চলবে। সেই সাথে তিনি চারটি দাবি উত্থাপন করেন- ১. দ্রুত কোটা সংস্কারে কমিশন গঠন, যেন পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠী উপকৃত হয়। ২. কোটা পূরণ না হলে মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করা। ৩. নিয়োগে একাধিকবার কোটা সুবিধা ব্যবহার বন্ধ করা। ৪. প্রশাসনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

আপডেট সময় ০৬:০৭:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪

গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রীসহ ১০ জনকে আসামি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করা হয়েছে। পরে এ অভিযোগটি গ্রহণ করেছে তদন্ত সংস্থা।

বুধবার (১৪ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের কো-অর্ডিনেটর বরাবর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম এ আবেদন করেন।

আবেদনে গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে সারা বাংলাদেশে নিহত এবং এ সময়ে আহত হয়ে পরবর্তীতে বিভিন্ন তারিখে নিহতদের বিষয়ে অভিযোগটি কমপ্লেইন্ট রেজিস্টার ভুক্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩ এর ৮ ধারা অনুযায়ী আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বরা হয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩ এর ৩(২) ও ৪(১)/৪ (২) ধারা অনুযায়ী গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ করা হয়েছে।

অপরাধের ধরন হিসেবে বলা হয়েছে, ১ থেকে ৯ নং আসামীদের নির্দেশে ও পরিকল্পনায় অন্যান্য আসামীরা দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত ছাত্রজনতাদের হত্যা করে তাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দ্যেশ্যে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে।

অভিযোগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এছাড়া এ অভিযোগে সাবেক সেতুমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ২ নম্বর আসামি, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে তিন নম্বর সাবেক ডাক টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলককে চার নম্বর আসামি, সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ আলী আরাফাত ও তৎকালীন সরকারের কতিপয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যকে পাঁচ নম্বর আসামি, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে ছয় নম্বর আসামি, অতিরিক্ত আই জি পি ও সাবেক ডিবি প্রধান হারুন আর রশিদকে সাত নম্বর আসামি, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান ও কতিপয় অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যকে আট নম্বর আসামি, র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক মো. হারুন আর রশিদ এবং কতিপয় অসাধু র‍্যাব কর্মকর্তা ও সদস্যসহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কতিপয় অজ্ঞাতনামা অস্ত্রধারী নেতাকর্মীকে ৯ নম্বর আসামি এবং সংগঠন হিসাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনসমূহকে ১০ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
অভিযোগে প্রমাণ হিসেবে ১৬ জুলাই থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন তারিখে প্রকাশিত প্রথম আলো, বাংলাদেশ প্রতিদিন, বিবিসি বাংলা, দি ডেইলি স্টার বাংলা, আজকের পত্রিকা, দৈনিক ইনকিলাব, আনন্দ বাজার পত্রিকা, বাংলা পত্রিকা, আমাদের সময় ডট কমসহ অন্যান্য পত্রিকার কপি এবং শহীদ আলিফ আহমেদ সিয়ামের জন্ম সনদ, স্টুডেন্ট আইডি কার্ড ও মৃত্যু সনদ সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া বাদির এনআইডি কার্ড ও ওকালাতনামাও যুক্ত করা হয়েছে।

আবেদনে বলা হয়েছে, এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করছি যে,গত ১ জুন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ ছাত্রজনতা কর্তৃক সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংরক্ষণ পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে সমগ্র বাংলাদেশে আন্দোলন শুরু হয়। উক্ত আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে দেশব্যাপী ছাত্রজনতা কর্তৃক অবস্থান কর্মসূচি, বিক্ষোভ কর্মসূচি, অবরোধ কর্মসূচিসহ বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালিত হয়। উক্ত কর্মসূচি থেকে সরকারের প্রতি কোটা সংরক্ষণ পদ্ধতি সংস্কারের জোর দাবি জানানো হয়। আন্দোলনকারী ছাত্র জনতাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার হীন উদ্দেশ্যে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী আসামি শেখ হাসিনা সাংবাদিক সম্মেলনে আন্দোলন প্রতিহত করার জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান করেন এবং বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের আন্দোলনকারী ছাত্র জনতাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার নির্দেশনা প্রদান করেন, যা বিভিন্ন দেশী ও বিদেশি পত্র পত্রিকা ও টিভি নিউজ এ প্রকাশিত হয়।

এতে বলা হয়েছে, আসামি সাবেক সেতুমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং তৎকালীন সরকারের কতিপয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য একই উদ্দেশ্যে উসকানিমূলক বক্তব্য ও নির্দেশনা প্রদান করেন। আসামি ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলনকারী ছাত্র জনতাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার জন্য ছাত্রলীগই যথেষ্ট। তিনি আরো বলেন, কারফিউ চলাকালে দেখা মাত্র গুলি করা হবে। (বিবিসি বাংলা ২০/০৭/২০২৪ তারিখ এর অনলাইন রিপোর্ট)

এতে আরও বলা হয়, আসামি শেখ হাসিনা, আসামি ওবায়দুল কাদের ও অন্যান্য আসামিদের এহেন নির্দেশনায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনার তারিখে দেশব্যাপী বিভিন্ন স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের উপর আগ্নেয় ও দেশীয় অস্ত্র সন্ত্র নিয়ে হামলা করে এবং তাদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে এবং কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠন করে। উক্ত আক্রমণে দেশব্যাপী অসংখ্য সাধারণ ছাত্রীরা যৌন নির্যাতনের স্বীকার হয়। উক্ত কোটা সংস্কারের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ ছাত্রজনতা কর্তৃক দেশব্যাপী কমপ্লিট শাট ডাউনের ডাক দেয়া হয়।।

এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশব্যাপী সাধারণ ছাত্রজনতা রাস্তায় নেমে আসে। আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার লক্ষ্যে উক্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ১-৭ নং আসামির প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় অন্যান্য আসামিরা সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র জনতার উপর নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করে। এতে ১৬ ‍জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আবু সাইদ পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। একই দিনে আরো পাঁচজনকে আসামি কতিপয় পুলিশ সদস্য ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৮ জুলাই ৪২ জন, ১৯ তারিখে ৮৬ জন, ২০ তারিখে ৩৮ জন, ২১ জুলাই থেকে ০৩ আগস্ট পর্যন্ত ৪৫ জন, ০৪ আগস্ট ১১৪ জন এবং ০৫ আগস্ট ১০৮ জনসহ কমপক্ষে ৪৩৯ জন আন্দোলনরত ছাত্র জনতাদের আসামি পুলিশ/র‍্যাব সদস্য ও আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা কর্তৃক গুলি করে ও কুপিয়ে গণহত্যা করা হয়। এরপর ০৫ তারিখে ছাত্র জনতার অসহযোগ গণআন্দোনের মুখে ১ নং আসামি শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে সামরিক হেলিকপ্টার যোগে পালিয়ে যায়। অন্যান্য আসামিদের মধ্যে অনেকেই আত্মগোপনে চলে যায়।

এছাড়া গত ০৫ আগস্ট ঢাকার সাভারস্থ ডেইরি ফার্ম হাইস্কুলের ৯ম শ্রেণির ছাত্র আরিফ আহমেদ সিয়াম আন্দোলনরত অবস্থায় আন্দোলনকারী ছাত্র হওয়ার কারণে আসামিদের নির্দেশে পুলিশ সদস্য কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হয়ে ০৭ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।এইভাবে ১৫ জুলাই থেকে ০৫ আগস্ট পর্যন্ত সমগ্র বাংলাদেশের বিভিন্ন স্কুল কলেজ মাদ্রাসা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ সমগ্র দেশের বিভিন্ন স্থানে আসামি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার সরকারের কতিপয় মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কতিপয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশে ও পরিকল্পনায় কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্য, কতিপয় র‍্যাব কর্মকর্তা ও র‍্যাব সদস্য, কতিপয় অস্ত্রধারী আওয়ামী লীগ, যুবলীগের ও ছাত্রলীগ নেতা কর্মী কর্তৃক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্রজনতাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দ্যেশ্যে তাদের উপর দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে কমপক্ষে ৪৩৯ জন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী হত্যা করা হয়।

উক্ত ঘটনায় কমপক্ষে ১০ হাজার আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক জখম হয় এবং এক হাজার হাজার আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা গুলিবিদ্ধ হয়ে চিরতরে অন্ধ ও পঙ্গুত্ব বরণ করে। কয়েক হাজার ছাত্র জনতা শারীরিক ও মানসিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উক্ত ঘটনায় আসামি কর্তৃক আন্দোলনরত ছাত্রজনতা সহ কমপক্ষে ৩২ জন শিশু নির্মম গণহত্যার শিকার হয়। আন্দোলনরত জনতাকে নির্মূল করতে আসামি র‍্যাব সদস্যরা হেলিকপ্টার ব্যবহার করে নির্বিচারে গুলি বর্ষণ ও বোমা নিক্ষেপ করে গণহত্যা করে।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ৪ ও৫ নং আসামিদ্বয় অন্যান্য আসামিদের নির্দেশে দেশব্যাপী ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে গণহত্যা চালায়, হত্যাযজ্ঞের সময় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয় যাতে করে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের তথ্য গোপন রাখা যায় ও গুজব ছড়ানোর যায়। আসামিরা দেশের সকল ইলেকট্রনিক/প্রিন্ট মিডিয়া জোরপূর্বক নিয়ন্ত্রণ করে মানুষকে গণহত্যার তথ্য জানতে বাধাগ্রস্ত করে।

৭ নং আসামি অন্যান্য আসামিদের নির্দেশে গণহত্যার উদ্দেশ্যে আন্দোলনরত ৭ জন সমন্বায়ক ছাত্রনেতাসহ অনেককে বেআইনিভাবে ডিবি কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে আটক করে রেখে তাদের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে।

১ থেকে ৯ নং আসামির নির্দেশে ও পরিকল্পনায় সারা দেশে ২৮৬টি মিথ্যা মামলায় সাড়ে ৪ লাখ আন্দোলনরত ছাত্রজনতাকে আসামি করে, তার মধ্যে ১২ হাজার আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করে কারাগারে রেখে তাদের মারাত্মক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়।

আবেদনে বলা হয়, এহেন কার্যকক্রমের মাধ্যমে সকল আসামিরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩ এর ৩(২), ৪(১)/৪ (২) ধারা অনুযায়ী গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠন করেছেন। যা দেশেবিদেশের বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় ও টিভি নিউজে প্রকাশিত হয়। অতএব নিবেদন, অভিযোগটি কমপ্লেইন্ট রেজিস্টারভুক্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে উপর্যুক্ত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ এর যথাযথ তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মর্জি হয়।

গণহত্যা