রবিবার, ০২ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:২৮ পূর্বাহ্ন

আলোকিত মানুষ বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আব্দুল কবির’র জন্মদিন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ আব্দুল কবির এর জন্মদিন। ১৯৫৩ সালের ৩১শে ডিসেম্বর হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সাবাসপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মোঃ আশরাফ উল্লাহ ও মাতার নাম জহুর চান বিবি। এ মুক্তিযোদ্ধার প্রাথমিক শিক্ষার হাতে খড়ি হয় গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়
থেকে। এর পর শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে এসএসসি পাস করেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময়ই তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। ১৯৬৯ সালে মহকুমা ছাত্রলীগের প্রথম কমিটি গঠিত হয়। বৃন্দাবন সরকারি কলেজ হবিগঞ্জ-এ পড়ার সময় তিনি সে কমিটিতে সম্পাদকীয় পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সাল স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহŸানে সারা দিয়ে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ক্যাপ্টেন এজাজের অধীনে হবিগঞ্জের বিভিন্ন যুদ্ধ ক্ষেত্রে অসীম সাহসিকতার পরিচয় দেন। তিনি একজন গেরিলা যোদ্ধা হিসেবে যুদ্ধক্ষেত্রে নিজের দক্ষতা ও যোগ্যতার প্রমাণ রাখেন এবং দেশকে হানাদার মুক্ত করে ১৯৭১ সালের ৩১শে ডিসেম্বর শায়েস্তাগঞ্জে ফিরে আসেন।
মুহাম্মদ আব্দুল কবির একজন সফল ব্যবসায়ী। ৪০ বছরের ব্যবসায়ীক জীবনে ১৯৭৬ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন আশরাফিয়া লাইব্রেরী। ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন নিশান ওভারসিজ, আইডিয়াল বিজনেস সেন্টার রিক্রুটিং (লাইসেন্স নাম্বার ২১৮)। এই প্রতিষ্ঠানগুলো জনশক্তি রপ্তানী ব্যুরো আটাব, বায়রা, অয়োটা, ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের সাথে কাজ করে চলেছেন ঘনিষ্ঠ ভাবে এবং অত্যন্ত সুনামের সাথে। এছাড়া ও তিনি জালালাবাদ এসোসিয়েসন অব ঢাকা এবং হবিগঞ্জ সমিতি ঢাকা এর সাথে সংযুক্ত আছেন।
হবিগঞ্জে শিক্ষা বিস্তারে মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ আব্দুল কবির একজন নিরব বিপ্লবের নাম। স্বপ্নাতুর এই মানুষটি প্রতিষ্ঠা করেন সাবসপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৭৫ সালে। ২০০১ সালে শহরতলীর আনন্দপুর এলাকায় “কবির কলেজিয়েট একাডেমি” এবং নারী শিক্ষার আলোকবর্তিকায় উদ্বাসিত হউক প্রতিটি গৃহকোণ এই ¯েøাগানকে সামনে রেখে ২০০৯ সালে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহŸানে সাড়া দিয়ে নারী শিক্ষা বিস্তারে প্রতিষ্ঠা করেন উনার নিজ গ্রামে তার মায়ের নামে “জহুর চান বিবি মহিলা কলেজ” নামে দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। ধর্মের প্রতি অবিচল আস্থাশীল একজন মুসলিম মোহাম্মদ আব্দুল কবিরের প্রত্যক্ষ ও আর্থিক সহযোগীতায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বহু মসজিদ এবং মাদ্রাসা। তন্মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য সাবাসপুর জামে মসজিদ, শায়েস্তাগঞ্জ এবং তার বাবার নামে “আশরাফিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা” এবং “শায়েস্তাগঞ্জ কমপ্লেক্স” এর কাজ চলমান। ধর্মভীরু এই আলোকিত মানুষ নিজের পৈত্রিক ভ‚মি ব্যায় করেছেন মসজিদের উন্নয়নে। হবিগঞ্জের কৃতিসন্তান মোঃ আব্দুল কবির একজন স্মরণীয় ও বরণীয় ব্যক্তি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ যে, মোহাম্মদ আব্দুল কবিরের বড়ভাই অধ্যক্ষ সিরাজ হক ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিসার ও গবেষক লেখক। ২০১৫ সালে তিনি ইন্তেকাল করেন। আরেক ভাই মোঃ আব্দুস শহীদ একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারী চাকুরিজীবী। মোঃ আব্দুল কবিরের সর্বাত্মক সহযোতিায় ২০২১ সালে তিন ভাইয়ের নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সামাজিক ও মানবিক সংস্থা “এসএসকে (সিরাজ, শহীদ, কবির) ফাউন্ডেশন”। হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য মুহাম্মদ আব্দুল কবির একজন কর্মবীর ও নিঃস্বার্থ মানুষ আমাদের সামনে দৃষ্টান্ত। যুগেযুগে স্থানে স্থানে জন্ম হোক এমন অনেক কবিরের যাদের প্রয়াসে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। মহান আল্লাহ তায়ালা এই পরোপকারী নিঃস্বার্থ মানুষটির দীর্ঘ জীবন দান করুন এই শুভকামনা।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.
Developed by DesigUs