মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩, ০৪:১৩ অপরাহ্ন

জমজমাট হবিগঞ্জে কোরবানির পশুর হাট

মোঃ মহিবুর রহমানঃ আর মাত্র কয়েকদিন পরেই পবিত্র ঈদুল আজহা। আর ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে হবিগঞ্জ জেলায় জমে উঠেছে কোরবানির পশু কেনাবেচা। হাটগুলোতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে কেনাবেচা। কোনো কোনো হাটে আবার রাতেও চলছে বিক্রি।

মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে হবিগঞ্জ শহরের পশুর হাটে দেখা যায়, বিক্রেতারা দূরদূরান্ত থেকে পিকআপ ভ্যান ভর্তি করে গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়া নিয়ে আসছেন। আবার শহরতলীর আশপাশের গরু বিক্রেতারা হেঁটে গরু-ছাগল নিয়ে আসছেন। পরে এগুলো সারিবদ্ধ করে রাখছেন বাজারে। ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণে আবার অনেক গরু-ছাগলই সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। ক্রেতাদের দৃষ্টি ছোট মাঝারি আকারের গরুর প্রতি। এ ধরনের গরু ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর এসব গরু স্বাচ্ছন্দ্যে ক্রয় করছেন ক্রেতারা।

প্রতি বছরের মতো এবারো হবিগঞ্জ শহর ছাড়াও জেলার আজমিরীগঞ্জ, বানিয়াচং, নবীগঞ্জ, শায়েস্তাগঞ্জ, চুনারুঘাট উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কোরবানির পশুর হাট বসেছে। প্রতিদিনই কোনো কোনো বাজারে জমজমাট বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন দিন যত যাচ্ছে কেনাবেচাও বাড়ছে। তবে এরমধ্যে আবার অনেক ক্রেতাই গরুর দরদাম করছেন।

শায়েস্তাগঞ্জের তানিয়া ডেইরি ফার্ম থেকে হবিগঞ্জ শহরের হাটে নিয়ে আসা হয়েছে ১৫ মণ ওজনের গরু ‘রাজা বাবু’কে। এর মালিক সাহরাজ মিয়া জানান, ১৫ মণ ওজনের রাজা বাবুর দাম চাওয়া হয়েছে ৭ লাখ টাকা। সম্পূর্ণ দেশীয় খাবারের মাধ্যমে তিনি রাজাবাবুকে লালন-পালন করেছেন। বাজারের মধ্যে রাজাবাবু বড় হওয়া ক্রেতাদের দৃষ্টি কাড়ছে।

বিক্রেতা কালাম মিয়া জানান, বড়, ছোট ও মাঝারি আকারের মিলিয়ে তিনি ৭টি গরু হাটে তুলেছেন। এরই মধ্যে তিনি দুটি গরু বিক্রি করছেন। একটি ষাঁড় বিক্রি করছেন ৬৫ হাজার টাকায় এবং একটি গাভী বিক্রি করেছেন ৫৫ হাজার টাকায়।

তিনি আরো জানান, দুপুর গড়িয়ে বিকেল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে ক্রেতাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের দরদামের মাধ্যমে বেচাকেনা জমে উঠেছে।

ক্রেতা নজলিমিন চৌধুরী বলেন, হাটে আসার পর ছোট-বড় অনেক গরু দেখেছি। মাঝারি সাইজের গরু আমাদের বেশি পছন্দের। ৭০ হাজার টাকা মূল্যের একটি ষাঁড় কিনেছি। গত বছরের চেয়ে দাম সামান্য কিছু বেশি।

সুরুজ আলী নামে অপর এক ক্রেতা বলেন, বেশিরভাগ ক্রেতারাই ৬০ থেকে ১ লাখ টাকা মূল্যের গরু ক্রয় করছেন। যেকারণে এ সাইজের গরুর দাম বেশি। আমি একটি ষাঁড় কিনেছি ৬০ হাজার টাকায়।

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলি জানান, গরুর হাট কেন্দ্রিক ছিনতাই, চাঁদাবাজি, পকেটমার, মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টি ঠেকাতে র‌্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা পোশাকের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও মাঠে কাজ করছেন। এছাড়া জেলার ৫৫টি স্থায়ী হাটে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সার্বক্ষণিক পুলিশ সদস্যরা তৎপর রয়েছেন।

হবিগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কর্মকর্তা ডা. রঞ্জন বিশ্বাস জানান, এবারের কোরবানির ঈদে জেলায় প্রায় ৯০ হাজার গরু, ছাগল ও মহিষের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ৮০ হাজার পশুর চাহিদা হবিগঞ্জ থেকেই পূরণ হবে। বাকি পশু অন্যান্য জেলা থেকে নিয়ে আসা হবে।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.