ঢাকা ০৮:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নবীগঞ্জে টিলা কেটে রাস্তা নির্মাণ ॥ চড়াদামে লালমাটি বিক্রি

মোঃ সাগর আহমেদ নবীগঞ্জ( হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি:

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলখ্যাত দিনারপুরে প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে টিলা কাটার অভিযোগ ওঠেছে খায়রুল ইসলাম নামে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। টিলা কেটে রাস্তা নির্মাণের নামে টিলার লাল মাটি বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক লক্ষাধিক টাকা। খবর পেয়ে টিলা কাটারস্থান পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন।

জানা যায়- উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলখ্যাত দিনারপুর পরগণার পানিউমদা ইউনিয়নের পানিউমদা কুদনের টিলা নামকস্থানে গত দুই সাপ্তাহ ধরে এক্সভেটর (ভেকু) মেশিনের সাহায্যে একটি বিশাল টিলা কেটে বিভিন্নস্থানে টিলার লাল মাটি বিক্রি করেছেন পানিউমদা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খায়রুল ইসলাম। প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে সরকারি প্রজেক্টের নামে টিলা কেটে রাস্তা নির্মাণ করেছেন তিনি। কুদনের টিলার প্রায় ১০ ফুট গভীর করে বৃহৎ আকারে টিলা কাটা হয়েছে। ইউপি সদস্য খায়রুল ইসলাম টিলা কেটে উচ্চমূল্যে টিলার লাল মাটি বিভিন্নস্থানে বিক্রি করেছেন। জানাগেছে- টিলা কেটে টিলার মাটি দিয়ে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা ইমরান, যুক্তরাজ্য প্রবাসী পারুল, ও গ্রিস প্রবাসী আইনুর মিয়ার জায়গা ভরাট করা হয়েছে। এদিকে টিলা কাটার খবর পেয়ে গত বুধবার নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন সরেজমিনে টিলা কাটারস্থান পরিদর্শন করেন। স্থানীয়দের অভিযোগ এক সময়ের ছাত্রলীগ নেতা থেকে কথিত বিএনপি নেতা হয়ে ওঠা প্রভাবশালী ইউপি সদস্য খায়রুল ইসলাম পাহাড়ি এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে পাহাড় কাটাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সিন্ডিকেট গড়ে তোলেছেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে ইউপি সদস্য খায়রুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন- আমি টিলা কাটার সঙ্গে সম্পৃক্ত নই, কুদনের টিলার পাড়ার মানুষ টিলা কেটেছে এবং সেনাবাহিনী টিলা কাটার অনুমতি দিয়েছে বলে দাবী করেন তিনি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) হবিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য তোফাজ্জল সোহেল বলেন, ‘হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় পাহাড়, টিলা কেটে পরিবেশবিধ্বংসী কার্যক্রম চলছে বহু বছর ধরে। এতে পরিবেশ, প্রতিবেশ ও প্রকৃতির অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। নবীগঞ্জে প্রতিনিয়ত পাহাড় কাটা হলেও স্থানীয় প্রশাসনের কার্যত কোনো ভূমিকা লক্ষ্য করা যায় না, দ্রুত দায়ীদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থাসহ পাহাড়-টিলাকে সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।’

এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন বলেন- পানিউমদায় স্থানীয় ইউপি সদস্য একটি টিলা কেটে রাস্তা নির্মাণ করেছেন, আমি ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৪:২৩:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫
১৬ বার পড়া হয়েছে

নবীগঞ্জে টিলা কেটে রাস্তা নির্মাণ ॥ চড়াদামে লালমাটি বিক্রি

আপডেট সময় ০৪:২৩:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলখ্যাত দিনারপুরে প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে টিলা কাটার অভিযোগ ওঠেছে খায়রুল ইসলাম নামে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। টিলা কেটে রাস্তা নির্মাণের নামে টিলার লাল মাটি বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক লক্ষাধিক টাকা। খবর পেয়ে টিলা কাটারস্থান পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন।

জানা যায়- উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলখ্যাত দিনারপুর পরগণার পানিউমদা ইউনিয়নের পানিউমদা কুদনের টিলা নামকস্থানে গত দুই সাপ্তাহ ধরে এক্সভেটর (ভেকু) মেশিনের সাহায্যে একটি বিশাল টিলা কেটে বিভিন্নস্থানে টিলার লাল মাটি বিক্রি করেছেন পানিউমদা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খায়রুল ইসলাম। প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে সরকারি প্রজেক্টের নামে টিলা কেটে রাস্তা নির্মাণ করেছেন তিনি। কুদনের টিলার প্রায় ১০ ফুট গভীর করে বৃহৎ আকারে টিলা কাটা হয়েছে। ইউপি সদস্য খায়রুল ইসলাম টিলা কেটে উচ্চমূল্যে টিলার লাল মাটি বিভিন্নস্থানে বিক্রি করেছেন। জানাগেছে- টিলা কেটে টিলার মাটি দিয়ে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা ইমরান, যুক্তরাজ্য প্রবাসী পারুল, ও গ্রিস প্রবাসী আইনুর মিয়ার জায়গা ভরাট করা হয়েছে। এদিকে টিলা কাটার খবর পেয়ে গত বুধবার নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন সরেজমিনে টিলা কাটারস্থান পরিদর্শন করেন। স্থানীয়দের অভিযোগ এক সময়ের ছাত্রলীগ নেতা থেকে কথিত বিএনপি নেতা হয়ে ওঠা প্রভাবশালী ইউপি সদস্য খায়রুল ইসলাম পাহাড়ি এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে পাহাড় কাটাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সিন্ডিকেট গড়ে তোলেছেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে ইউপি সদস্য খায়রুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন- আমি টিলা কাটার সঙ্গে সম্পৃক্ত নই, কুদনের টিলার পাড়ার মানুষ টিলা কেটেছে এবং সেনাবাহিনী টিলা কাটার অনুমতি দিয়েছে বলে দাবী করেন তিনি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) হবিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য তোফাজ্জল সোহেল বলেন, ‘হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় পাহাড়, টিলা কেটে পরিবেশবিধ্বংসী কার্যক্রম চলছে বহু বছর ধরে। এতে পরিবেশ, প্রতিবেশ ও প্রকৃতির অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। নবীগঞ্জে প্রতিনিয়ত পাহাড় কাটা হলেও স্থানীয় প্রশাসনের কার্যত কোনো ভূমিকা লক্ষ্য করা যায় না, দ্রুত দায়ীদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থাসহ পাহাড়-টিলাকে সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।’

এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন বলেন- পানিউমদায় স্থানীয় ইউপি সদস্য একটি টিলা কেটে রাস্তা নির্মাণ করেছেন, আমি ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।