ঢাকা ০৯:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo নবীগঞ্জ শহরসহ ৭টি গ্রামের মানুষ জন শুন্য যৌথবাহিনী অভিযান ১৩ জন আটক Logo হবিগঞ্জে চালককে হত্যা করে ইজিবাইক ছিনতাই Logo নবীগঞ্জে ভয়াবহ সংঘর্ষ নিহত ১ আহত কয়েক শতাধিক Logo জুলাই অভ্যুত্থানে নৃশংস হামলার আসামি ও দালাল সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মৌলভীবাজারে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি Logo ৪দিনের উত্তেজনার পর নবীগঞ্জে কয়েক হাজার মানুষের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত কয়েক শতাধিক Logo নবীগঞ্জ দফায় দফায় সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত Logo এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১০ জুলাই Logo হবিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক নেতা সাকিব গ্রেপ্তার Logo শায়েস্তাগঞ্জ থানার সাবেক ওসি কামালের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা: সাংবাদিকসহ ২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ Logo হবিগঞ্জে ছুরিকাঘাতে এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত

নবীগঞ্জ মসজিদে মাইকিং করে পুলিশের ওপর হামলা, আসামি ছিনতাই আটক ১৩

মোঃ সাগর আহমেদ নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় মামলার আসামি ধরতে গেলে রাতে মসজিদে মাইকিং করে ‘ডাকাত’ ঘোষণা দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা, পুলিশের ভ্যান গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ মে নবীগঞ্জ উপজেলার জনতার বাজার পশুর হাট অপসারণে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিনের নেতৃত্বে পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও প্রায় ৭০ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হাট এলাকায় অভিযান চালান।

এক পর্যায়ে হাট কমিটির সদস্য ও অন্যরা সংঘবদ্ধ হয়ে তাদের কাজে বাধা দেন। তারা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সন্দ্বীপ তালুকদারকে টেলা ধাক্কা ও লাঞ্চিত করা হয়।

এরপরও দিনজুড়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পশুর হাট চালু রাখে হাট কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় পরদিন ১ জুন পানিউমদা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বাদী হয়ে ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করে নবীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

গত শনিবার ভোররাতে এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি দক্ষিণ গজনাইপুর গ্রামের নজর উদ্দিনকে (৪০) গ্রেপ্তার করতে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে নবীগঞ্জ থানা ও গোপলার বাজার তদন্ত কেন্দ্রের একটি পুলিশ দল অভিযান চালায়।

নজর উদ্দিনের বসতঘরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে এ সময় অন্য আসামিরা গ্রামের মসজিদে ‘ডাকাত এসেছে’ বলে মাইকিং করেন।

এতে গ্রামের দুই শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালান এবং পুলিশের কাছ থেকে নজর উদ্দিনকে ছিনিয়ে নেন।
পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া হয় এবং সংঘর্ষে পুলিশের একটি ভ্যান ও দুটি সিএনজি ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিকুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।

এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি শেখ মো. কামরুজ্জামান বলেন, জনতার বাজারের ঘটনায় দুপুরে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। যাছাই বাছাই করে কয়জন গ্রেপ্তার বলা যাবে। এই বিষয়ে বানিয়াচং সেনা ক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ বলেন, সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশের যৌথভাবে জটিকা অভিযান চালানো হয়।আমাদের ক্যাম্পের একদল সেনা সদস্য তাদের সহায়তা করেন। এসময় ১৩জনকে আটক করা হয়। তাদের নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার এ এন এম সাজেদুর রহমান বলেন, ‘এজাহারভুক্ত আসামি গ্রেপ্তারের সময় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। মামলার এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তারের সময় স্থানীয় লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের তিনজন সদস্য আহত হন, একটি ভ্যান ও দুটি সিএনজি ভাঙচুর করা হয়েছে।’ এ ঘটনায় নবীগঞ্জ থানায় নিয়মিত মামলা মামলা হয়েছে এবং দোষীদের গ্রেপ্তার অভিযান চলছে।’

এ ঘটনায় রোববার (২৯ জুন) দুপুরে জনতার বাজারে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‌্যাবের যৌথ ঝটিকা চিরুনি অভিযানে ১৩ জনকে আটক করা হয়।

শনিবার (২৮ জুন) রাতে হামলাকারীরা পুলিশ সদস্যদের মারধর, ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং পুলিশের একটি ভ্যান ও দুটি সিএনজি ভাঙচুর করেন। শনিবারভোররাতে উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গজনাইপুর গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
এতে নবীগঞ্জ থানার কনস্টেবল শাহ ইমরান (২৭), মোজাম্মেল হক (২৫) ও পল্টন চন্দ্র দাশ (২৫) আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যরা নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৫:৫৬:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
১২ বার পড়া হয়েছে

নবীগঞ্জ মসজিদে মাইকিং করে পুলিশের ওপর হামলা, আসামি ছিনতাই আটক ১৩

আপডেট সময় ০৫:৫৬:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় মামলার আসামি ধরতে গেলে রাতে মসজিদে মাইকিং করে ‘ডাকাত’ ঘোষণা দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা, পুলিশের ভ্যান গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ মে নবীগঞ্জ উপজেলার জনতার বাজার পশুর হাট অপসারণে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিনের নেতৃত্বে পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও প্রায় ৭০ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হাট এলাকায় অভিযান চালান।

এক পর্যায়ে হাট কমিটির সদস্য ও অন্যরা সংঘবদ্ধ হয়ে তাদের কাজে বাধা দেন। তারা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সন্দ্বীপ তালুকদারকে টেলা ধাক্কা ও লাঞ্চিত করা হয়।

এরপরও দিনজুড়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পশুর হাট চালু রাখে হাট কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় পরদিন ১ জুন পানিউমদা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বাদী হয়ে ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করে নবীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

গত শনিবার ভোররাতে এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি দক্ষিণ গজনাইপুর গ্রামের নজর উদ্দিনকে (৪০) গ্রেপ্তার করতে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে নবীগঞ্জ থানা ও গোপলার বাজার তদন্ত কেন্দ্রের একটি পুলিশ দল অভিযান চালায়।

নজর উদ্দিনের বসতঘরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে এ সময় অন্য আসামিরা গ্রামের মসজিদে ‘ডাকাত এসেছে’ বলে মাইকিং করেন।

এতে গ্রামের দুই শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালান এবং পুলিশের কাছ থেকে নজর উদ্দিনকে ছিনিয়ে নেন।
পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া হয় এবং সংঘর্ষে পুলিশের একটি ভ্যান ও দুটি সিএনজি ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিকুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।

এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি শেখ মো. কামরুজ্জামান বলেন, জনতার বাজারের ঘটনায় দুপুরে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। যাছাই বাছাই করে কয়জন গ্রেপ্তার বলা যাবে। এই বিষয়ে বানিয়াচং সেনা ক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ বলেন, সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশের যৌথভাবে জটিকা অভিযান চালানো হয়।আমাদের ক্যাম্পের একদল সেনা সদস্য তাদের সহায়তা করেন। এসময় ১৩জনকে আটক করা হয়। তাদের নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার এ এন এম সাজেদুর রহমান বলেন, ‘এজাহারভুক্ত আসামি গ্রেপ্তারের সময় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। মামলার এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তারের সময় স্থানীয় লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের তিনজন সদস্য আহত হন, একটি ভ্যান ও দুটি সিএনজি ভাঙচুর করা হয়েছে।’ এ ঘটনায় নবীগঞ্জ থানায় নিয়মিত মামলা মামলা হয়েছে এবং দোষীদের গ্রেপ্তার অভিযান চলছে।’

এ ঘটনায় রোববার (২৯ জুন) দুপুরে জনতার বাজারে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‌্যাবের যৌথ ঝটিকা চিরুনি অভিযানে ১৩ জনকে আটক করা হয়।

শনিবার (২৮ জুন) রাতে হামলাকারীরা পুলিশ সদস্যদের মারধর, ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং পুলিশের একটি ভ্যান ও দুটি সিএনজি ভাঙচুর করেন। শনিবারভোররাতে উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গজনাইপুর গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
এতে নবীগঞ্জ থানার কনস্টেবল শাহ ইমরান (২৭), মোজাম্মেল হক (২৫) ও পল্টন চন্দ্র দাশ (২৫) আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যরা নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।