ঢাকা ০৮:৫৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিখোঁজের দুইদিন পর ঢামেকে মিললো নবীগঞ্জ কলেজ অধ্যক্ষর মরদেহ

মোঃ সাগর আহমেদ নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

নিখোঁজের দুইদিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নবীগঞ্জ সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ ফজলুর রহমানের মরদেহ পাওয়া গেছে। গতকাল রবিবার ২০ অক্টোবর সকাল ৭টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এর আগে গত ১৮ অক্টোবর শুক্রবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি।

নিহত অধ্যক্ষ ফজলুর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সড়াইল থানার কাটানিশার গ্রামের মৃত আব্দুল করিমের পুত্র। যোগদানের পর থেকে তিনি নবীগঞ্জ শহরের ওসমানী রোডে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।

পরিবার ও পুলিশ সূত্র জানায়, গত ১৮ অক্টোবর শুক্রবার সকাল ৮টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া তার বোনের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন তিনি। এরপর থেকে তার সন্ধ্যান মিলছে না। এদিন সন্ধ্যা ৭টায় এক অজ্ঞাতি ব্যাক্তি তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীণ অবস্থায় গতকাল রবিবার সকাল ৭টায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সময় অধ্যক্ষকে নারায়নগঞ্জ জেলার রুপনগর থেকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান অজজ্ঞাত সেই ব্যাক্তি।

খবর পেয়ে শাহবাগ থানার এসআই খালেদ আহমেদসহ একদল পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেন। তবে কি কারণে তার মৃত্যু হয়েছে এ বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। তার পকেটে ব্যাংকে টাকা জমার রশিদ ও কলেজের হিসাব বিবরণীর কাগজপত্র ও কলেজের একটি শীল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তার স্ত্রী সৈয়দা সুলতানা আক্তার জানান, গত ১৮ অক্টোবর শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বোনের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেওয়ার পর থেকেই তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর গতকাল রবিবার সকালে কলেজে উপস্থিত হয়ে শিক্ষকগণকে বিষয়টি অবগত করেন তিনি। পরে নিখোঁজের বিষয়ে নবীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়।

তিনি আরও জানান, অধ্যক্ষ ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে কলেজ ছাত্রদের আন্দোলন নিয়ে মানসিক অস্থিরতায় ছিলেন তিনি। নিখোঁজের ডায়েরীতে তাকে মানসিকভাবে অসুস্থ্য হিসেবেও উল্লেখ করা হয়।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরেই অধ্যক্ষ ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছিল শিক্ষার্থীরা। গত বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে অধ্যক্ষ মো. ফজলুর রহমানকে প্রায় দেড় ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে। গতকাল রবিবারও অধ্যক্ষর পদত্যাগের দাবীতে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। এসময় কলেজের অন্যন্য শিক্ষকদের অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্র্থীরা।

তার মৃত্যুর খবরে পরিবার ও ছাত্র-শিক্ষকসহ সর্বমহলে চলছে শোকের মাতম। অনেকেই মৃত্যুর বিষয়টিকে রহস্যজনক হিসেবে মনে করে বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত দাবী করছেন।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি মোঃ কামাল হোসেন পিপিএম বলেন, নিখোঁজের বিষয়ে রবিবার ২০ অক্টোবর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। পরে আমরা অধ্যক্ষের মৃত্যুর খবর জানতে পেরে, পবিারকে বিষয়টি অবগত করেছি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১১:৪৬:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪
১৮ বার পড়া হয়েছে

নিখোঁজের দুইদিন পর ঢামেকে মিললো নবীগঞ্জ কলেজ অধ্যক্ষর মরদেহ

আপডেট সময় ১১:৪৬:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

নিখোঁজের দুইদিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নবীগঞ্জ সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ ফজলুর রহমানের মরদেহ পাওয়া গেছে। গতকাল রবিবার ২০ অক্টোবর সকাল ৭টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এর আগে গত ১৮ অক্টোবর শুক্রবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি।

নিহত অধ্যক্ষ ফজলুর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সড়াইল থানার কাটানিশার গ্রামের মৃত আব্দুল করিমের পুত্র। যোগদানের পর থেকে তিনি নবীগঞ্জ শহরের ওসমানী রোডে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।

পরিবার ও পুলিশ সূত্র জানায়, গত ১৮ অক্টোবর শুক্রবার সকাল ৮টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া তার বোনের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন তিনি। এরপর থেকে তার সন্ধ্যান মিলছে না। এদিন সন্ধ্যা ৭টায় এক অজ্ঞাতি ব্যাক্তি তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীণ অবস্থায় গতকাল রবিবার সকাল ৭টায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সময় অধ্যক্ষকে নারায়নগঞ্জ জেলার রুপনগর থেকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান অজজ্ঞাত সেই ব্যাক্তি।

খবর পেয়ে শাহবাগ থানার এসআই খালেদ আহমেদসহ একদল পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেন। তবে কি কারণে তার মৃত্যু হয়েছে এ বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। তার পকেটে ব্যাংকে টাকা জমার রশিদ ও কলেজের হিসাব বিবরণীর কাগজপত্র ও কলেজের একটি শীল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তার স্ত্রী সৈয়দা সুলতানা আক্তার জানান, গত ১৮ অক্টোবর শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বোনের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেওয়ার পর থেকেই তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর গতকাল রবিবার সকালে কলেজে উপস্থিত হয়ে শিক্ষকগণকে বিষয়টি অবগত করেন তিনি। পরে নিখোঁজের বিষয়ে নবীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়।

তিনি আরও জানান, অধ্যক্ষ ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে কলেজ ছাত্রদের আন্দোলন নিয়ে মানসিক অস্থিরতায় ছিলেন তিনি। নিখোঁজের ডায়েরীতে তাকে মানসিকভাবে অসুস্থ্য হিসেবেও উল্লেখ করা হয়।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরেই অধ্যক্ষ ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছিল শিক্ষার্থীরা। গত বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে অধ্যক্ষ মো. ফজলুর রহমানকে প্রায় দেড় ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে। গতকাল রবিবারও অধ্যক্ষর পদত্যাগের দাবীতে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। এসময় কলেজের অন্যন্য শিক্ষকদের অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্র্থীরা।

তার মৃত্যুর খবরে পরিবার ও ছাত্র-শিক্ষকসহ সর্বমহলে চলছে শোকের মাতম। অনেকেই মৃত্যুর বিষয়টিকে রহস্যজনক হিসেবে মনে করে বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত দাবী করছেন।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি মোঃ কামাল হোসেন পিপিএম বলেন, নিখোঁজের বিষয়ে রবিবার ২০ অক্টোবর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। পরে আমরা অধ্যক্ষের মৃত্যুর খবর জানতে পেরে, পবিারকে বিষয়টি অবগত করেছি।