ঢাকা ১২:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo মাধবপুর বাস ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২০ Logo হবিগঞ্জে ভুয়া চিকিৎসকের একমাসের কারাদণ্ড Logo স্বৈরাচার পতনে ১৬ বছর অপেক্ষা নয়, তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Logo বাংলাদেশের মানুষ কল্পনাও করেনি যে কেবল চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত ‘জুলাই বিদ্রোহে’ রূপ নেবে। গত বছরের ১ জুলাই বাংলাদেশ এক অবিশ্বাস্য ঘটনার সাক্ষী হয়। এদিন শিক্ষার্থীদের ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন’ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’ রূপ নেয়। এটি ছিল প্রায় ১৬ বছরের স্বৈরতান্ত্রিক আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সূচনাবিন্দু। মানুষ কল্পনাও করেনি যে শুরুতে কেবল চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত ‘জুলাই বিদ্রোহে’ রূপ নেবে, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে। ছাত্রদের এই অসন্তোষের সূচনা ঘটে ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের সরকারি প্রজ্ঞাপনকে হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষণা করার রায়ের পর। সরকার ২০১৮ সালে তীব্র ছাত্র আন্দোলনের চাপে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করেছিল। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ে ৫৬ শতাংশ কোটা পুনঃপ্রবর্তিত হয়, যাতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, পশ্চাৎপদ জেলার জন্য ১০ শতাংশ, সংখ্যালঘুদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়। ছাত্ররা এই ব্যবস্থাকে মেধাবীদের প্রতি বৈষম্য হিসেবে মনে করে প্রতিবাদে রাস্তায় নামে। সরকার প্রতিবাদকারীদের কঠোরভাবে দমন করতে চাইলে পরিস্থিতি বিদ্রোহে রূপ নেয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারপন্থী সন্ত্রাসীরা একযোগে আক্রমণ চালালে অন্তত ১ হাজার ৪০০ জন নিহত এবং প্রায় ২০ হাজার জন আহত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাসে এটা ছিল সবচেয়ে নিষ্ঠুর দমনপীড়ন। অনেকে বিশ্বাস করেন, এই জুলাই বিদ্রোহের মধ্য দিয়েই ২০০৮ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন অনিবার্য হয়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ১ জুলাই এই আন্দোলন পুরো মাত্রায় শুরু হলেও এর গোড়াপত্তন ঘটে ৫ জুন। ওইদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রাস্তায় নামে। আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার ‘জুলাই : মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু’ বইতে লিখেছেন, ‘৫ জুন বিকেলে আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজের পাশে চানখারপুলে স্কুটি মেরামত করাচ্ছিলাম। তখন ফেসবুকে দেখি- হাইকোর্ট কোটা পুনর্বহাল করেছে। মনে হলো ২০১৮ সালের অর্জনগুলো ধূলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে।’ এরপর কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক বৈঠকের মাধ্যমে প্রতিবাদ কর্মসূচির সূচনা হয়। রাত সাড়ে ৭টায় ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী’ ব্যানারে একটি মিছিল বের হয় এবং সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যদিয়ে তা শেষ হয়। এই সমাবেশে তারা হাইকোর্টের রায়কে ‘মেধাবীদের সাথে তামাশা’ বলে প্রত্যাখ্যান করে। সমাবেশে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র, বর্তমানে জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপির প্রধান নাহিদ ইসলাম পরদিন ৬ জুন বিকেল ৫টায় রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশের ঘোষণা দেন। প্রায় পাঁচ থেকে ছয় শ’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওই মিছিলে অংশ নেয় এবং স্লোগান দেয়- ‘কোটা পদ্ধতি মানি না’, ‘হাইকোর্টের রায় মানি না’, ‘কোটা বাতিল করতেই হবে’। আসিফের বক্তব্যের সাথে একমত প্রকাশ করে নাহিদও ৫ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে তাদের প্রথম বৈঠকের কথা এবং কিভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে পেরেছিলেন তা স্মরণ করেন। নাহিদ পরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ঈদুল আজহার ছুটির আগে মাত্র তিন দিন আন্দোলনের সুযোগ পেয়েছিলাম।’ ৬ জুন ঢাবি, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জগন্নাথসহ দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করে। ৯ জুন শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল করে অ্যাটর্নি জেনারেল বরাবর একটি স্মারকলিপি জমা দেয়। এর প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে। শুনানির দিন ধার্য হয় ৪ জুলাই। ১০ জুন আবারো মিছিল হয় এবং শিক্ষার্থীরা সরকারকে ৩০ জুনের মধ্যে ২০১৮ সালের প্রজ্ঞাপন পুনর্বহাল করতে আল্টিমেটাম দেয়, না হলে সর্বাত্মক আন্দোলন শুরু করার ঘোষণা দেয়। আসিফ স্মরণ করেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ৩০ জুন পর্যন্ত ঈদের ছুটি ঘোষণা করেছিল, তাই আমরা সেই দিনটিকে আল্টিমেটামের সময়সীমা হিসেবে নির্ধারণ করি। আমরা সরকারকে সতর্কও করেছিলাম- যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হয়, তাহলে আমরা আবার আন্দোলন শুরু করব।’ ৩০ জুন সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা না আসায় ১ জুলাই ঢাবি, জগন্নাথ, জাবি, রাবি, চবি, বরিশাল ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমে পড়ে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কিছু সময়ের জন্য ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণ থেকে একটি মিছিল বের করে, যা রাজু ভাস্কর্যে শেষ হয়। সমাবেশ থেকে নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন, আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ও পরীক্ষার বর্জন চলবে। তিনি তিন দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন- ২ জুলাই দেশব্যাপী মহাসড়কে মিছিল, ৩ ও ৪ জুলাই রাজধানীর রাজু ভাস্কর্যে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সমাবেশ। সমাবেশে নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন- ৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন চলবে। সেই সাথে তিনি চারটি দাবি উত্থাপন করেন- ১. দ্রুত কোটা সংস্কারে কমিশন গঠন, যেন পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠী উপকৃত হয়। ২. কোটা পূরণ না হলে মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করা। ৩. নিয়োগে একাধিকবার কোটা সুবিধা ব্যবহার বন্ধ করা। ৪. প্রশাসনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। Logo হবিগঞ্জে শুঁটকি উৎপাদনে ভাটা Logo নবীগঞ্জ মসজিদে মাইকিং করে পুলিশের ওপর হামলা, আসামি ছিনতাই আটক ১৩ Logo চুনারুঘাটে হত্যা মামলার আসমী আ. মান্নান আটক-তাবলীগ জামাতে গিয়ে অপহরণ মামলা সাজিয়েছেন Logo আজমিরীগঞ্জ কালনী নদীর ভাঙনে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে পাড়ে বসে চোখ মুছছেন সুনিতী Logo কুলাউড়ায় হত্যাকান্ডের শিকার আনজুমের বাড়িতে আমিরে জামায়াত Logo মাধবপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ফার্মাসিস্ট নেই ৩০ বছর ধরে

নির্মাণের দেড় বছরেও চালু হয়নি বাল্লা স্থলবন্দর

চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

হবিগঞ্জের বাল্লা স্থলবন্দরের অবকাঠামোর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার দেড় বছরেও আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়নি। শুরুর দিকে স্থলবন্দরটিকে ঘিরে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ থাকলেও, এখন তারা অনেকটাই হতাশ। কর্তৃপক্ষ বলছে, ভারত অংশে ইমিগ্রেশনসহ কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ না হওয়ায় এই বন্দরের কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।

জানা গেছে, ২০১৬ সালে জেলার চুনারুঘাট উপজেলার বাল্লা শুল্কস্টেশনকে দেশের ২৩তম স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করা হয়। একটি আধুনিক স্থলবন্দর তৈরির লক্ষ্যে ২০১৭ সালে উপজেলার কেদারাকোর্ট এলাকায় জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু করে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। ৪৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে এর নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০২৩ সালের জুন মাসে।

তবে অবকাঠামো নির্মাণের দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও শুরু হয়নি আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। ফলে এই স্থলবন্দর নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে যে আশা ছিল, তা এখন হতাশায় পরিণত হচ্ছে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, মূলত বাল্লা স্থলবন্দরের বাংলাদেশ অংশে উন্নত অবকাঠামো হলেও, সীমান্তের ওপারে ভারত অংশে কোনো প্রকার শুল্কস্টেশন বা ইমিগ্রেশন সুবিধা নেই। যে কারণে বন্দরটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।

সম্প্রতি বাল্লা স্থলবন্দর ঘুরে দেখা যায়, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ অংশে নির্মাণ করা হয়েছে ইয়ার্ড, অফিস ভবন, ওজন মাপার যন্ত্র, ডরমেটরি এবং অন্যান্য স্থাপনা। নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন জনবল। অন্যদিকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়মুড়া এলাকায় এই বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণ করার কথা। সেখানে কোনো কার্যক্রমের খবর পাওয়া যায়নি। পুরো জায়গাটি এখনো ঝোপঝাড়ে ভরে আছে। কাছেই আছে একটি গ্রাম।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বন্দরের কার্যক্রম শুরু হলে ভারতের ত্রিপুরাসহ সাতটি অঙ্গরাজ্যে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার সৃষ্টি হবে। বিশেষ করে কৃষিপণ্য, মৎস্য, সিরামিক, স্যানিটারি সামগ্রী, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এবং বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস রপ্তানিতে এই স্থলবন্দর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে। এ ছাড়া এই বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ, আদা-রসুন ও বিভিন্ন ধরনের ফলমূল ভারত থেকে আমদানি সহজ হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মতিন বলেন, ‘চুনারুঘাট ও আশপাশ এলাকার জনগণ স্থলবন্দর চালু নিয়ে ব্যাপক আগ্রহী। তারা মনে করেন, বন্দর চালু হলে শুধু ব্যবসায়ীরা নন, সাধারণ মানুষের জন্যও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। ট্রান্সপোর্ট সেক্টর, কাস্টমস কার্যক্রম এবং বন্দরের আনুষঙ্গিক কার্যক্রমে স্থানীয়দের নিয়োগের সুযোগ বাড়বে।’

স্থানীয় ব্যবসায়ী তোফাজ্জল মহালদার বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম বন্দর চালু হলে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। আমরা এখানে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারব। কিন্তু নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার দেড় বছর পরও বন্দরটি চালু হয়নি। এটা আমাদের জন্য খুবই হতাশার। সরকারের উচিত এই বন্দরটি দ্রুত চালু করা।’

চুনারুঘাট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সদস্য সচিব সাজিদুর রহমান বলেন, ‘এই বন্দর থেকে কৃষিপণ্য, মৎস্য, প্লাস্টিক, সিরামিক সামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। কার্যক্রম চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে বিরাট প্রভাব পড়বে। কিন্তু দেখা গেল সুন্দর স্থাপনা নির্মাণ হয়েছে, কিন্তু কার্যক্রম চালু হচ্ছে না। এতে শতকোটি টাকা খরচ করে নির্মাণ করা এই স্থাপনা নষ্ট হয়ে যাবে।’

হবিগঞ্জ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি সামছুল হুদা বলেন, ‘শুনেছি ভারত অংশে শুল্কস্টেশন নির্মাণ না হওয়াটা বন্দরের প্রধান বাধা। দুই দেশের সরকারের মধ্যে দ্রুত সমঝোতা হওয়া দরকার। কারণ আমরা অনেক ব্যবসায়ী এখানে ব্যবসা করার পরিকল্পনা নিয়ে বসে আছি। এ ছাড়া এখানে প্রচুর লোকের কর্মসংস্থান হবে। এক কথায় বন্দরটি চালু হলে জেলার অর্থনৈতিক অবস্থা বদলে যাবে।’

বাল্লা স্থলবন্দরের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর লুৎফুর রহমান বলেন, ‘আমাদের অংশ পুরোপুরি প্রস্তুত। জনবলও অনেক আছে। আমরা চাইলে আজই আমদানি-রপ্তানি শুরু করতে পারব। কিন্তু ভারত অংশে ইমিগ্রেশন না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না।’

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মানজারুল মান্নান সম্প্রতি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ভারত সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের নিয়মিত আলোচনা চলছে। নভেম্বর মাসে দিল্লিতে একটি বৈঠক হওয়ার কথা। সেখানে বাল্লা স্থলবন্দর নিয়ে আলোচনা হবে। আশা করা হচ্ছে, খুব শিগগিরই দুই দেশের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করা যাবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৭:৫৩:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
৬৩ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের মানুষ কল্পনাও করেনি যে কেবল চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত ‘জুলাই বিদ্রোহে’ রূপ নেবে। গত বছরের ১ জুলাই বাংলাদেশ এক অবিশ্বাস্য ঘটনার সাক্ষী হয়। এদিন শিক্ষার্থীদের ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন’ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’ রূপ নেয়। এটি ছিল প্রায় ১৬ বছরের স্বৈরতান্ত্রিক আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সূচনাবিন্দু। মানুষ কল্পনাও করেনি যে শুরুতে কেবল চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত ‘জুলাই বিদ্রোহে’ রূপ নেবে, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে। ছাত্রদের এই অসন্তোষের সূচনা ঘটে ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের সরকারি প্রজ্ঞাপনকে হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষণা করার রায়ের পর। সরকার ২০১৮ সালে তীব্র ছাত্র আন্দোলনের চাপে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করেছিল। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ে ৫৬ শতাংশ কোটা পুনঃপ্রবর্তিত হয়, যাতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, পশ্চাৎপদ জেলার জন্য ১০ শতাংশ, সংখ্যালঘুদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়। ছাত্ররা এই ব্যবস্থাকে মেধাবীদের প্রতি বৈষম্য হিসেবে মনে করে প্রতিবাদে রাস্তায় নামে। সরকার প্রতিবাদকারীদের কঠোরভাবে দমন করতে চাইলে পরিস্থিতি বিদ্রোহে রূপ নেয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারপন্থী সন্ত্রাসীরা একযোগে আক্রমণ চালালে অন্তত ১ হাজার ৪০০ জন নিহত এবং প্রায় ২০ হাজার জন আহত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাসে এটা ছিল সবচেয়ে নিষ্ঠুর দমনপীড়ন। অনেকে বিশ্বাস করেন, এই জুলাই বিদ্রোহের মধ্য দিয়েই ২০০৮ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন অনিবার্য হয়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ১ জুলাই এই আন্দোলন পুরো মাত্রায় শুরু হলেও এর গোড়াপত্তন ঘটে ৫ জুন। ওইদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রাস্তায় নামে। আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার ‘জুলাই : মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু’ বইতে লিখেছেন, ‘৫ জুন বিকেলে আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজের পাশে চানখারপুলে স্কুটি মেরামত করাচ্ছিলাম। তখন ফেসবুকে দেখি- হাইকোর্ট কোটা পুনর্বহাল করেছে। মনে হলো ২০১৮ সালের অর্জনগুলো ধূলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে।’ এরপর কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক বৈঠকের মাধ্যমে প্রতিবাদ কর্মসূচির সূচনা হয়। রাত সাড়ে ৭টায় ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী’ ব্যানারে একটি মিছিল বের হয় এবং সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যদিয়ে তা শেষ হয়। এই সমাবেশে তারা হাইকোর্টের রায়কে ‘মেধাবীদের সাথে তামাশা’ বলে প্রত্যাখ্যান করে। সমাবেশে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র, বর্তমানে জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপির প্রধান নাহিদ ইসলাম পরদিন ৬ জুন বিকেল ৫টায় রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশের ঘোষণা দেন। প্রায় পাঁচ থেকে ছয় শ’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওই মিছিলে অংশ নেয় এবং স্লোগান দেয়- ‘কোটা পদ্ধতি মানি না’, ‘হাইকোর্টের রায় মানি না’, ‘কোটা বাতিল করতেই হবে’। আসিফের বক্তব্যের সাথে একমত প্রকাশ করে নাহিদও ৫ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে তাদের প্রথম বৈঠকের কথা এবং কিভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে পেরেছিলেন তা স্মরণ করেন। নাহিদ পরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ঈদুল আজহার ছুটির আগে মাত্র তিন দিন আন্দোলনের সুযোগ পেয়েছিলাম।’ ৬ জুন ঢাবি, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জগন্নাথসহ দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করে। ৯ জুন শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল করে অ্যাটর্নি জেনারেল বরাবর একটি স্মারকলিপি জমা দেয়। এর প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে। শুনানির দিন ধার্য হয় ৪ জুলাই। ১০ জুন আবারো মিছিল হয় এবং শিক্ষার্থীরা সরকারকে ৩০ জুনের মধ্যে ২০১৮ সালের প্রজ্ঞাপন পুনর্বহাল করতে আল্টিমেটাম দেয়, না হলে সর্বাত্মক আন্দোলন শুরু করার ঘোষণা দেয়। আসিফ স্মরণ করেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ৩০ জুন পর্যন্ত ঈদের ছুটি ঘোষণা করেছিল, তাই আমরা সেই দিনটিকে আল্টিমেটামের সময়সীমা হিসেবে নির্ধারণ করি। আমরা সরকারকে সতর্কও করেছিলাম- যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হয়, তাহলে আমরা আবার আন্দোলন শুরু করব।’ ৩০ জুন সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা না আসায় ১ জুলাই ঢাবি, জগন্নাথ, জাবি, রাবি, চবি, বরিশাল ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমে পড়ে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কিছু সময়ের জন্য ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণ থেকে একটি মিছিল বের করে, যা রাজু ভাস্কর্যে শেষ হয়। সমাবেশ থেকে নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন, আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ও পরীক্ষার বর্জন চলবে। তিনি তিন দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন- ২ জুলাই দেশব্যাপী মহাসড়কে মিছিল, ৩ ও ৪ জুলাই রাজধানীর রাজু ভাস্কর্যে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সমাবেশ। সমাবেশে নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন- ৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন চলবে। সেই সাথে তিনি চারটি দাবি উত্থাপন করেন- ১. দ্রুত কোটা সংস্কারে কমিশন গঠন, যেন পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠী উপকৃত হয়। ২. কোটা পূরণ না হলে মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করা। ৩. নিয়োগে একাধিকবার কোটা সুবিধা ব্যবহার বন্ধ করা। ৪. প্রশাসনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

নির্মাণের দেড় বছরেও চালু হয়নি বাল্লা স্থলবন্দর

আপডেট সময় ০৭:৫৩:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

হবিগঞ্জের বাল্লা স্থলবন্দরের অবকাঠামোর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার দেড় বছরেও আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়নি। শুরুর দিকে স্থলবন্দরটিকে ঘিরে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ থাকলেও, এখন তারা অনেকটাই হতাশ। কর্তৃপক্ষ বলছে, ভারত অংশে ইমিগ্রেশনসহ কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ না হওয়ায় এই বন্দরের কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।

জানা গেছে, ২০১৬ সালে জেলার চুনারুঘাট উপজেলার বাল্লা শুল্কস্টেশনকে দেশের ২৩তম স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করা হয়। একটি আধুনিক স্থলবন্দর তৈরির লক্ষ্যে ২০১৭ সালে উপজেলার কেদারাকোর্ট এলাকায় জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু করে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। ৪৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে এর নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০২৩ সালের জুন মাসে।

তবে অবকাঠামো নির্মাণের দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও শুরু হয়নি আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। ফলে এই স্থলবন্দর নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে যে আশা ছিল, তা এখন হতাশায় পরিণত হচ্ছে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, মূলত বাল্লা স্থলবন্দরের বাংলাদেশ অংশে উন্নত অবকাঠামো হলেও, সীমান্তের ওপারে ভারত অংশে কোনো প্রকার শুল্কস্টেশন বা ইমিগ্রেশন সুবিধা নেই। যে কারণে বন্দরটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।

সম্প্রতি বাল্লা স্থলবন্দর ঘুরে দেখা যায়, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ অংশে নির্মাণ করা হয়েছে ইয়ার্ড, অফিস ভবন, ওজন মাপার যন্ত্র, ডরমেটরি এবং অন্যান্য স্থাপনা। নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন জনবল। অন্যদিকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়মুড়া এলাকায় এই বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণ করার কথা। সেখানে কোনো কার্যক্রমের খবর পাওয়া যায়নি। পুরো জায়গাটি এখনো ঝোপঝাড়ে ভরে আছে। কাছেই আছে একটি গ্রাম।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বন্দরের কার্যক্রম শুরু হলে ভারতের ত্রিপুরাসহ সাতটি অঙ্গরাজ্যে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার সৃষ্টি হবে। বিশেষ করে কৃষিপণ্য, মৎস্য, সিরামিক, স্যানিটারি সামগ্রী, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এবং বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস রপ্তানিতে এই স্থলবন্দর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে। এ ছাড়া এই বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ, আদা-রসুন ও বিভিন্ন ধরনের ফলমূল ভারত থেকে আমদানি সহজ হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মতিন বলেন, ‘চুনারুঘাট ও আশপাশ এলাকার জনগণ স্থলবন্দর চালু নিয়ে ব্যাপক আগ্রহী। তারা মনে করেন, বন্দর চালু হলে শুধু ব্যবসায়ীরা নন, সাধারণ মানুষের জন্যও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। ট্রান্সপোর্ট সেক্টর, কাস্টমস কার্যক্রম এবং বন্দরের আনুষঙ্গিক কার্যক্রমে স্থানীয়দের নিয়োগের সুযোগ বাড়বে।’

স্থানীয় ব্যবসায়ী তোফাজ্জল মহালদার বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম বন্দর চালু হলে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। আমরা এখানে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারব। কিন্তু নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার দেড় বছর পরও বন্দরটি চালু হয়নি। এটা আমাদের জন্য খুবই হতাশার। সরকারের উচিত এই বন্দরটি দ্রুত চালু করা।’

চুনারুঘাট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সদস্য সচিব সাজিদুর রহমান বলেন, ‘এই বন্দর থেকে কৃষিপণ্য, মৎস্য, প্লাস্টিক, সিরামিক সামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। কার্যক্রম চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে বিরাট প্রভাব পড়বে। কিন্তু দেখা গেল সুন্দর স্থাপনা নির্মাণ হয়েছে, কিন্তু কার্যক্রম চালু হচ্ছে না। এতে শতকোটি টাকা খরচ করে নির্মাণ করা এই স্থাপনা নষ্ট হয়ে যাবে।’

হবিগঞ্জ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি সামছুল হুদা বলেন, ‘শুনেছি ভারত অংশে শুল্কস্টেশন নির্মাণ না হওয়াটা বন্দরের প্রধান বাধা। দুই দেশের সরকারের মধ্যে দ্রুত সমঝোতা হওয়া দরকার। কারণ আমরা অনেক ব্যবসায়ী এখানে ব্যবসা করার পরিকল্পনা নিয়ে বসে আছি। এ ছাড়া এখানে প্রচুর লোকের কর্মসংস্থান হবে। এক কথায় বন্দরটি চালু হলে জেলার অর্থনৈতিক অবস্থা বদলে যাবে।’

বাল্লা স্থলবন্দরের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর লুৎফুর রহমান বলেন, ‘আমাদের অংশ পুরোপুরি প্রস্তুত। জনবলও অনেক আছে। আমরা চাইলে আজই আমদানি-রপ্তানি শুরু করতে পারব। কিন্তু ভারত অংশে ইমিগ্রেশন না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না।’

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মানজারুল মান্নান সম্প্রতি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ভারত সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের নিয়মিত আলোচনা চলছে। নভেম্বর মাসে দিল্লিতে একটি বৈঠক হওয়ার কথা। সেখানে বাল্লা স্থলবন্দর নিয়ে আলোচনা হবে। আশা করা হচ্ছে, খুব শিগগিরই দুই দেশের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করা যাবে।