রবিবার, ০২ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:৪৬ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার প্রতিবাদে শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে বন্ধ রয়েছে বাস চলাচল। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। বাস না পেয়ে অনেকেই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে রিকশা কিংবা সিএনজিচালিত অটোরিকশা দিয়েই গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন। তবে স্বাভাবিক রয়েছে ট্রেন চলাচল। ফলে কমলাপুর রেলস্টেশনে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। শুক্রবারের মতো শনিবার সকাল থেকেই স্টেশনে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
যাত্রী বেশি হওয়ায় অনেকেই কাউন্টারে গিয়ে টিকিট কিনতে পারছেন না। আবার অনেকে টিকিট পেলেও ট্রেনে উঠতে পারছেন না। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় স্টেশনে যাত্রী বেড়েছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন কর্মকর্তা। যাত্রীরা জানান, বাস না পেয়ে বাধ্য হয়ে ট্রেনে যেতে হচ্ছে। অনেক কষ্টে টিকিট পেলেও ট্রেনে উঠতে পারা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাওয়ার জন্য পরিবার নিয়ে কমলাপুর স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষা করছেন আশিক রহমান। তিনি বলেন, জরুরি প্রয়োজনে যেতে হচ্ছে। কিন্তু টিকিট পাইনি। এখন কীভাবে যাব তা নিয়ে চিন্তা করছি।
কিশোরগঞ্জগামী এক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ঢাকায় জরুরি কাজে আসেন তিনি। এখন বাড়ি ফিরতে হবে। কিন্তু বাস বন্ধ, ট্রেনের টিকিটও নেই। আবার স্টেশনে যত মানুষ, ট্রেনে উঠতে পারবেন কিনা সেই আশঙ্কাও রয়েছে। মানুষের ভোগান্তি চিন্তা না করে বাস বন্ধের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
নরসিংদীগামী রাকিবুল বলেন, বাড়িতে মা অসুস্থ। তাই বাড়ি যেতে হবে। ডাবল ভাড়া দিয়ে ধানমন্ডি থেকে কমলাপুর এসেছি। ট্রেনের টিকিটও পাইনি। এছাড়া এত মানুষের ভিড় ঠেলে ঠিকভাবে যেতে পারব কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি।
কমলাপুর রেলস্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন বলেন, অন্য ছুটির দিনের তুলনায় যাত্রীদের চাপ ছিল বেশি। সাধারণত শুক্রবার এত যাত্রী থাকেন না। মূলত গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণে রেলের ওপর চাপ পড়েছে।
তিনি আরো বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে দাঁড়িয়ে যাওয়া যাত্রীদের টিকিট বিক্রি বন্ধ রয়েছে। এতে মানুষ আরো বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন। তবে যেসব যাত্রীর ঘরে ফেরা খুবই জরুরি, তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থায় টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে।
এদিকে, গণপরিবহন বন্ধে শুধু দূরের যাত্রীদের নয়, ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে রাজধানীর অফিসগামী অসংখ্য মানুষকে। বাস না থাকায় বিকল্প হিসেবে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশাযোগে অফিসে যেতে হচ্ছে তাদের। আবার এসব বাহন সংকটে অনেককে হেঁটেও গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। এভাবে অফিস যেতে কয়েকগুণ বেশি খরচের পাশাপাশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অনেকে।
৩ নভেম্বর মধ্যরাত থেকে ডিজেলের মূল্য লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। এ নিয়ে ৪ নভেম্বর পরিবহন খাতের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বৈঠক করেন। বৈঠক থেকে ভাড়া বাড়ানোর সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত পরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে এ বিষয়ে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ ঘোষণা ছাড়াই শুক্রবার সকাল থেকে চলছে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট।