ঢাকা ১০:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo শহীদ নূর হোসেন দিবস আজ Logo হবিগঞ্জ-১: রেজা কিবরিয়ার যোগদানে বিএনপিতে এখন ত্রিমুখী লড়াই Logo হবিগঞ্জের নতুন ডিসি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন Logo ড. ফরিদুর রহমান বদলি, নতুন ডিসি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন Logo মসজিদে নামাজরত অবস্থায় ছুরিকাঘাত করে খুন : অভিযুক্ত আটক Logo ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত: শায়েস্তাগঞ্জে তরুণী গ্রেপ্তার Logo ৭ই নভেম্বর ও একজন দেশ প্রেমিক জিয়াউর রহমান Logo হবিগঞ্জ-১ আসনে মনোনয়ন নিয়ে তোড়জোর, বিএনপিতে যোগ দিলেন ড. রেজা কিবরিয়া, বদলে যাচ্ছে সমীকরণ! Logo হবিগঞ্জে ৮টির মধ্যে ৪ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ, বেড়েছে লোডশেডিং Logo হবিগঞ্জে চুনারুঘাট শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেপ্তার

বৈশাখকে সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে হবিগঞ্জের মৃৎ শিল্পীদের

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:-

বাংলা নববর্ষ পয়লা বৈশাখকে সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে হবিগঞ্জের মৃৎশিল্পীদের। দিন-রাত কঠোর পরিশ্রম করে তৈরি করা মাটির খেলনা, পুতুল ও ব্যাংকসহ নানান জিনিসপত্র আগুনে পুড়িয়ে ও রংতুলির আঁচড় শেষে বৈশাখী মেলায় তোলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন শিল্পীরা।

জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সুরাবই গ্রামে পালপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়- বাড়ির সামনে সারিবদ্ধভাবে সাজানো রয়েছে মাটি দিয়ে তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, ব্যাংক, কলস, দইয়ের কাপ ও সরাসহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী। এসব জিনিসপত্র তৈরি করার পর তা রোদে শুকানো হচ্ছে। আবার কেউ কেউ রংতুলির আঁচড় দিচ্ছেন।

পালপাড়ার ছোট-বড় ছেলেমেয়ে সবাই উৎসবের মতো করে এ কাজটি চালিয়ে যাচ্ছেন। ছোট ছোট শিশুরাও তাদের বাবা-মায়েদের এই কাজে সহযোগীতা করছে।

শিল্পীরা বলছেন, পয়লা বৈশাখকে সামনে রেখে তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। বছরের এই সময়টাতেই তাদের ভালো আয় রোজগার হয়।

স্থানীয়রা জানান, বাজারে প্লাস্টিক পণ্যের ছড়াছড়ির কারণে এক সময়ে গ্রামগঞ্জের জনপ্রিয় মাটির তৈরি জিনিসপত্র এখন তাদের ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। এ কারণে মৃৎশিল্পীদের আগের সুদিন নেই। পালপাড়ায় একসময় এই পেশার সঙ্গে ৫০টিরও অধিক পরিবার জড়িত ছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে এখন মাত্র ১০ থেকে ১৫টি পরিবার এই পেশার সঙ্গে জড়িত রয়েছে। উপকরণের দাম বাড়ায় এ কাজে আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেকেই। ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পটিকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন তারা।
পালপাড়ার বাসিন্দা শিক্ষার্থী অনন্যা রানী পাল জানান, এটা আমাদের পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি মা-বাবাকে এই কাজে সহযোগিতা করেন। কারণ, এই মাটির জিনিসপত্র বিক্রি করেই তার পড়ালেখাসহ সংসারের খরচ চলে।

রনজিত পাল নামে এক মৃৎশিল্পী বলেন, “এ পেশায় এখন টিকে থাকা মুশকিল। সরকার সহযোগিতা না করলেই অচিরেই এই পেশা থেকে নতুন প্রজন্ম মুখ ফিরিয়ে নেবে। ইতোমধ্যে অনেকেই এই পেশা ছেড়ে দিয়েছে। আমরা যারা এই পেশায় রয়েছি, খুব কষ্টে আছি। আমাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।”

হবিগঞ্জ বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. বিল্লাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, “মৃৎশিল্প গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের একটি অংশ। মাটির তৈরি এসব জিনিসপত্র আধুনিকায়নে এবং মৃৎশিল্পীদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ঋণ প্রদানসহ সার্বিক সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হবে।”

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৪:০৫:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
১২৮ বার পড়া হয়েছে

বৈশাখকে সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে হবিগঞ্জের মৃৎ শিল্পীদের

আপডেট সময় ০৪:০৫:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

বাংলা নববর্ষ পয়লা বৈশাখকে সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে হবিগঞ্জের মৃৎশিল্পীদের। দিন-রাত কঠোর পরিশ্রম করে তৈরি করা মাটির খেলনা, পুতুল ও ব্যাংকসহ নানান জিনিসপত্র আগুনে পুড়িয়ে ও রংতুলির আঁচড় শেষে বৈশাখী মেলায় তোলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন শিল্পীরা।

জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সুরাবই গ্রামে পালপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়- বাড়ির সামনে সারিবদ্ধভাবে সাজানো রয়েছে মাটি দিয়ে তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, ব্যাংক, কলস, দইয়ের কাপ ও সরাসহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী। এসব জিনিসপত্র তৈরি করার পর তা রোদে শুকানো হচ্ছে। আবার কেউ কেউ রংতুলির আঁচড় দিচ্ছেন।

পালপাড়ার ছোট-বড় ছেলেমেয়ে সবাই উৎসবের মতো করে এ কাজটি চালিয়ে যাচ্ছেন। ছোট ছোট শিশুরাও তাদের বাবা-মায়েদের এই কাজে সহযোগীতা করছে।

শিল্পীরা বলছেন, পয়লা বৈশাখকে সামনে রেখে তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। বছরের এই সময়টাতেই তাদের ভালো আয় রোজগার হয়।

স্থানীয়রা জানান, বাজারে প্লাস্টিক পণ্যের ছড়াছড়ির কারণে এক সময়ে গ্রামগঞ্জের জনপ্রিয় মাটির তৈরি জিনিসপত্র এখন তাদের ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। এ কারণে মৃৎশিল্পীদের আগের সুদিন নেই। পালপাড়ায় একসময় এই পেশার সঙ্গে ৫০টিরও অধিক পরিবার জড়িত ছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে এখন মাত্র ১০ থেকে ১৫টি পরিবার এই পেশার সঙ্গে জড়িত রয়েছে। উপকরণের দাম বাড়ায় এ কাজে আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেকেই। ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পটিকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন তারা।
পালপাড়ার বাসিন্দা শিক্ষার্থী অনন্যা রানী পাল জানান, এটা আমাদের পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি মা-বাবাকে এই কাজে সহযোগিতা করেন। কারণ, এই মাটির জিনিসপত্র বিক্রি করেই তার পড়ালেখাসহ সংসারের খরচ চলে।

রনজিত পাল নামে এক মৃৎশিল্পী বলেন, “এ পেশায় এখন টিকে থাকা মুশকিল। সরকার সহযোগিতা না করলেই অচিরেই এই পেশা থেকে নতুন প্রজন্ম মুখ ফিরিয়ে নেবে। ইতোমধ্যে অনেকেই এই পেশা ছেড়ে দিয়েছে। আমরা যারা এই পেশায় রয়েছি, খুব কষ্টে আছি। আমাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।”

হবিগঞ্জ বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. বিল্লাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, “মৃৎশিল্প গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের একটি অংশ। মাটির তৈরি এসব জিনিসপত্র আধুনিকায়নে এবং মৃৎশিল্পীদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ঋণ প্রদানসহ সার্বিক সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হবে।”