ঢাকা ০৯:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo নবীগঞ্জে যৌথ অভিযানে ৬২২ পিস ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার Logo শায়েস্তাগঞ্জের উন্নয়নে কাজ করছে ‘শায়েস্তাগঞ্জ সমিতি ইউকে’, নতুন কমিটি গঠন Logo মাধবপুরে হজ করে বাড়ি ফেরা হল না, সড়কে নিহত ৩, আহত ৬ Logo শহীদ জিয়া স্মৃতি নাইট মিনিবার ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন Logo বাহুবল প্রেসক্লাবের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত সভাপতি মাসুম, সেক্রেটারী ইমন Logo নবীগঞ্জের এক মহিলার পর্নোগ্রাফি মামলায় গোয়ালা বাজারের ব্যবসায়ী কারাগারে Logo নবীগঞ্জে আর্ন্তজাতিক প্রতিরোধ পক্ষ ৯ ডিসেম্বর ২০২৪ এবং বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৪ Logo সাংবাদিক নওরোজুল ইসলাম চৌধুরীর মৃত্যুতে শায়েস্তাগঞ্জ প্রেসক্লাবে শোক সভা Logo নবীগঞ্জে দুই ভাবির পরকীয়ার বলি মোস্তাকিন: রোমহর্ষক বর্ণনা খুনির Logo বাহুবলে ইজিবাইকের ভাড়া নিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, আহত অন্তত ৫০

বানিয়াচংয়ে কুশিয়ারা নদীতে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

বানিয়াচং প্রতিনিধিঃ

বানিয়াচং উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের হিলাল নগর ও তেলঘরি গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকা থেকে চলছে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন। দিন রাত অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তোলার কারণে হুমকির মুখে রয়েছে নদী পারের শত শত ফসলী জমি। এছাড়াও অবাধে বালু তোলার কারণে ভেঙ্গে যাচ্ছে এলাকার রাস্তা ঘাট, বিলীন হচ্ছে ঘর বাড়ি। এমতাবস্থায় বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করা হলেও নেয়া হচ্ছে না কার্যকরি কোন ব্যবস্থা। তাই এলাকাবাসির স্বার্থে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী পরিবেশবাদীসহ এলাকার সচেতন মহলের।

জানা যায়- হিলাল নগর ও তেলঘরি গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছেন স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র। আর এ চক্রের নেতৃত্বে রয়েছে দৌলতপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি উমর ফারুকসহ তার লোকজন। তাকে সহযোগিতা করছেন দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা মনজু কুমার দাস। তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে স্থানীয় ইউপি সদস্য এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চক্রটি এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে। তারা দীর্ঘদিন যাবত নদী থেকে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে আসছেন। কেউ এ বিষয়ে কথা বললে দেয়া হয় হুমকী। ফলে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে নারাজ। দিনের পর দিন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে চক্রটি হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমান রাজস্ব। এমতাবস্থায় এলাকবাসির স্বার্থে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী এলাকাবাসির।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- হিলাল নগর ও তেলঘরি গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকায় বড় একটি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আর এতে কাজ করছে ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক। বালু উত্তোলন শেষে সেগুলোকে বড় নৌকায় করে মার্কুলি বাজারের পার্শ্ববর্তী একটি স্থানে নিয়ে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন- প্রতিদিন অন্তত কয়েক লাখ টাকার বালু ও মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে কুশিয়ারা নদী থেকে। যে কারণে নদীর তলদেশে সৃষ্টি হচ্ছে বিশাল বিশাল গর্ত।

স্থানীয় বাসিন্দা মোজাহিদ মিয়া বলেন- অবৈধভাবে দীর্ঘদিন যাবত ওই এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করা হলেও প্রশাসন কোন ব্যবস্খা নিচ্ছে না। বালু তোলার কারণে হুমকিতে রয়েছে নদী পারের ফসলিম জমি। অনেক স্থানে আবার ঘর বাড়িতে ধ্বসও দেখা দিয়েছে। তাই এখনই এসব বন্ধ করা জরুরি। তারেক মিয়া নামে আরো ব্যক্তি বলেন- চক্রটি খুবই প্রভাবশালী। তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই তারা নানা ভাবে হয়রানি করে সাধারণ লোকজনদের। তাদের বালু তোলার কোন ধরণের অনুমতি নেই। অথচ তারা দীর্ঘদিন যাবত পরিবেশ নষ্ট করে বালু উত্তোলন করে আসছে।

কাজল মিয়া বলেন- আমার সবজির জমিতে তারা জোরপুর্বক বালু স্তুপ করে রাখছে। তারা আমাকে বলেছিল ক্ষতিপূরণ দিবে কিন্তু দেইনি।

হবিগঞ্জ জেলা বাপা’র সাধারণ তোফাজ্জুল সোহেল বলেন- নদীর তলদেশ থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন আমাদের পরিবেশের জন্য মরাত্মক হুমকি। এখন এর প্রভাব তেমন একটা না পড়লেও পরবর্তীতে বিস্তর প্রভাব ফেলবে বালু তোলার ঘটনা। তাই পরিবেশ রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের এসব বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

অভিযোগের বিষয়ে দৌলতপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি উমর ফারুক জানান- আমার এলাকায় নদী ভাঙ্গনরোধে একটি বড় উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে। এই প্রকল্পে এলাকার কিছু যুবকসহ লোকজন কুশিয়ারা নদী থেকে বালু-মাটি দিচ্ছে। তার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইউপি সদস্য মনির ও হেদায়ত উল্ল্যাহ। বালু তোলার বিষয়ে আমি জড়িত নই।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) প্রিয়াংকা পাল বলেন- বালু তোলার বিষয়টি আমাদের জানা নেই। তবে তারা একটি আবেদন দিয়েছে আমাদের কাছে। আবেদনটি তদান্তাধীন রয়েছে। যদি তারা এরকমটি করে থাকে তা হলে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৪:৩৭:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪
১৩ বার পড়া হয়েছে

বানিয়াচংয়ে কুশিয়ারা নদীতে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

আপডেট সময় ০৪:৩৭:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪

বানিয়াচং উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের হিলাল নগর ও তেলঘরি গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকা থেকে চলছে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন। দিন রাত অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তোলার কারণে হুমকির মুখে রয়েছে নদী পারের শত শত ফসলী জমি। এছাড়াও অবাধে বালু তোলার কারণে ভেঙ্গে যাচ্ছে এলাকার রাস্তা ঘাট, বিলীন হচ্ছে ঘর বাড়ি। এমতাবস্থায় বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করা হলেও নেয়া হচ্ছে না কার্যকরি কোন ব্যবস্থা। তাই এলাকাবাসির স্বার্থে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী পরিবেশবাদীসহ এলাকার সচেতন মহলের।

জানা যায়- হিলাল নগর ও তেলঘরি গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছেন স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র। আর এ চক্রের নেতৃত্বে রয়েছে দৌলতপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি উমর ফারুকসহ তার লোকজন। তাকে সহযোগিতা করছেন দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা মনজু কুমার দাস। তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে স্থানীয় ইউপি সদস্য এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চক্রটি এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে। তারা দীর্ঘদিন যাবত নদী থেকে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে আসছেন। কেউ এ বিষয়ে কথা বললে দেয়া হয় হুমকী। ফলে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে নারাজ। দিনের পর দিন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে চক্রটি হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমান রাজস্ব। এমতাবস্থায় এলাকবাসির স্বার্থে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী এলাকাবাসির।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- হিলাল নগর ও তেলঘরি গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকায় বড় একটি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আর এতে কাজ করছে ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক। বালু উত্তোলন শেষে সেগুলোকে বড় নৌকায় করে মার্কুলি বাজারের পার্শ্ববর্তী একটি স্থানে নিয়ে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন- প্রতিদিন অন্তত কয়েক লাখ টাকার বালু ও মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে কুশিয়ারা নদী থেকে। যে কারণে নদীর তলদেশে সৃষ্টি হচ্ছে বিশাল বিশাল গর্ত।

স্থানীয় বাসিন্দা মোজাহিদ মিয়া বলেন- অবৈধভাবে দীর্ঘদিন যাবত ওই এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করা হলেও প্রশাসন কোন ব্যবস্খা নিচ্ছে না। বালু তোলার কারণে হুমকিতে রয়েছে নদী পারের ফসলিম জমি। অনেক স্থানে আবার ঘর বাড়িতে ধ্বসও দেখা দিয়েছে। তাই এখনই এসব বন্ধ করা জরুরি। তারেক মিয়া নামে আরো ব্যক্তি বলেন- চক্রটি খুবই প্রভাবশালী। তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই তারা নানা ভাবে হয়রানি করে সাধারণ লোকজনদের। তাদের বালু তোলার কোন ধরণের অনুমতি নেই। অথচ তারা দীর্ঘদিন যাবত পরিবেশ নষ্ট করে বালু উত্তোলন করে আসছে।

কাজল মিয়া বলেন- আমার সবজির জমিতে তারা জোরপুর্বক বালু স্তুপ করে রাখছে। তারা আমাকে বলেছিল ক্ষতিপূরণ দিবে কিন্তু দেইনি।

হবিগঞ্জ জেলা বাপা’র সাধারণ তোফাজ্জুল সোহেল বলেন- নদীর তলদেশ থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন আমাদের পরিবেশের জন্য মরাত্মক হুমকি। এখন এর প্রভাব তেমন একটা না পড়লেও পরবর্তীতে বিস্তর প্রভাব ফেলবে বালু তোলার ঘটনা। তাই পরিবেশ রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের এসব বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

অভিযোগের বিষয়ে দৌলতপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি উমর ফারুক জানান- আমার এলাকায় নদী ভাঙ্গনরোধে একটি বড় উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে। এই প্রকল্পে এলাকার কিছু যুবকসহ লোকজন কুশিয়ারা নদী থেকে বালু-মাটি দিচ্ছে। তার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইউপি সদস্য মনির ও হেদায়ত উল্ল্যাহ। বালু তোলার বিষয়ে আমি জড়িত নই।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) প্রিয়াংকা পাল বলেন- বালু তোলার বিষয়টি আমাদের জানা নেই। তবে তারা একটি আবেদন দিয়েছে আমাদের কাছে। আবেদনটি তদান্তাধীন রয়েছে। যদি তারা এরকমটি করে থাকে তা হলে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।