রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩, ০২:০৭ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাহুবলে অবৈধভাবে কৃষি জমির মাটি বিক্রির ধুম পড়েছে। বিভিন্ন স্থানে সাময়িক লাভের আশায় জমির টপ সয়েল বিক্রি করে দিচ্ছেন কৃষকরা। আর এসব মাটি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা মুনাফা অর্জন করছে কতিপয় প্রভাবশালী। বিভিন্ন সময় প্রশাসনের তরফ থেকে অভিযান চালিয়েও তাদের দমানো যাচ্ছেনা।
সাংবাদিক পরিচয় গোপন রেখে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই উপজেলার স্নানঘাট ইউনিয়নের ফতেহপুর আলাপুর গ্রামের মাটি ব্যবসায়ী ইছার উদ্দিন বলেন, একেকটি গাড়ি দূরত্ব অনুযায়ী তারা মাটির দাম নিয়ে থাকেন। নিম্নে ৬শ’ থেকে উপরে ১২শ’ টাকা পর্যন্ত তারা প্রতি গাড়ি মাটির মূল্য নেন। মাটি কাটা অবৈধ। জমির মালিকদের কাছ থেকে মাটি ক্রয় করতে হয়। অনেক কষ্ট করে ব্যবসা করতে হয়। প্রশাসন ডিস্টার্ব করে। গাড়ি আটকে ফেলে। বেশি দূরে হলে তারা মাটি সরবরাহ করেননা। প্রতি গাড়িতে ১৫০ ফুট মাটি ধরে।
স্থানীয় বাসিন্দা লুৎফুর রহমান নামে আরেকজনের কাছে জানতে চাইলে কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে বলেন, আমি এসব ব্যবসার সাথে জড়িত নই। অনেকেই করে। তাদের কাছে এ বিষয়ে ভালো জানা যাবে।
ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ তোফাজ্জল হক বলেন, ধানী জমির মাটি কাটা সম্পূর্ণ অবৈধ। এসব কাজে আমরা কোন প্রশ্রয় দিইনা। আমরা প্রতিবাদ করি। আইনশৃংখলা কমিটি মিটিংয়েও এ বিষয়ে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দাবি জানিয়েছি।
উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি মোঃ রুহুল আমিন বলেন, মাটি কাটার একটি বাজে পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়েছি। আটক করি, জরিমানা করি। সব সময় সম্ভব হয়না, কারণ অন্যান্য সরকারি কাজও করতে হয়। লোকবলেরও কিছু ঘাটতি আছে। তবে অবশ্যই আবারও অভিযান চালানো হবে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ওই উপজেলার ফতেহপুর আলাপুর গ্রামের কতিপয় প্রভাবশালী প্রতিদিন সকাল থেকেই অর্ধশতাধিক ট্রাক্টর দিয়ে হাওর থেকে মাটি কাটা শুরু করেন। এসব মাটি বিক্রি করে চলে গভীর রাত পর্যন্ত। গ্রামের রাস্তা দিয়ে হরদম মাটির ট্রাক্টর চলাচলের কারণে স্কুল পড়-য়া কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। বাড়ি ঘরেও মানুষ থাকতে পারছেন না। ধু ধু ধুলোয় নষ্ট হচ্ছে সব। স্কুল, মাদ্রাসা ও এতিমখানার পড়ার পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে। মাটি ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে এলাকার কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পাচ্ছেন না। মাটির ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন স্থানীয় মাত্র কয়েকজন ব্যবসায়ী। তাদের একেকটি সিন্ডিকেটে রয়েছেন ১০ থেকে ১২ জন করে।