মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন
মোঃ মহিবুর রহমানঃ দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। আর একদিন পরই সারাদেশে উদযাপিত হবে ঈদুল আজহা। তবে এবারের ঈদে হবিগঞ্জে অনেকের ঘরেই নেই উৎসবের আমেজ। অনেকে কোরবানির গরু কেনা নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও এ জেলার বাসিন্দারা বন্যায় ক্ষতি হওয়া বাড়িঘর নিয়ে চিন্তিত।
এরই মধ্যে জেলার আজমিরীগঞ্জ ও বানিয়াচংয়ের হাওর থেকে নামতে শুরু করেছে বন্যার পানি। আর পানি নামায় অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়তে শুরু করেছেন। অনিশ্চয়তা জেনেও ফিরছেন বাড়িঘরে।
জানা গেছে, বন্যার পানিতে জেলার সাতটি উপজেলার ৫৪টি ইউনিয়নের প্রায় ছয় শতাধিক গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েন লাখো মানুষ। প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয় নিয়েছেন ৩৫০টি আশ্রয়কেন্দ্রে। বর্তমানে বন্যার পানি নামায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরছেন তারা।
কথা হয় আজমিরীগঞ্জ পৌর শহরের ঈসমাইল হোসেনের সঙ্গে। তিনি পেশায় একজন ছাতা মেরামতের কারিগর। ঈসমাইল জানান, ১৭ জুন রাতে বন্যায় তার একমাত্র ঘরটি পানিতে তলিয়ে যায়। এতে ভেসে যায় ঘরে থাকা যাবতীয় আসবাবপত্রও। কোনোরকম সেই রাতটুকু কাটিয়ে পরদিন সকালে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে আশ্রয় নেন আজমিরীগঞ্জ সরকারি ডিগ্রি কলেজ আশ্রয়ণ কেন্দ্রে। প্রায় দুই সপ্তাহের অধিক সময় সেখানে থাকার পর বাড়ি ফিরেছেন তিনি। বাড়ি ফিরলেও দেখা দিয়েছে নতুন করে অনিশ্চয়তা।
শুধু ঈসমাইল মিয়াই নয়, তার মতো অনেকেরই এখন এমন অবস্থা। তবে জেলা প্রশাসন বলছে, বন্যায় যাদের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের পুনর্বাসন করা হবে। বন্যার পানি পুরোপুরিভাবে নেমে গেলেই বরাদ্দ অনুযায়ী তালিকা করে পুনর্বাসনের কাজ শুরু হবে।মুরাদপুর আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা বছির মিয়া বলেন, বন্যার পানিতে আমার ঘরবাড়ি তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নষ্ট হয়েছে ঘরে থাকা যাবতীয় মালামাল। ভেসে গেছে ধান ও চাল। এখন সরকারের সহযোগিতা ছাড়া আমাদের বেঁচে থাকা কঠিন হবে।
মিয়াধন মিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া ছাদির মিয়া বলেন, বন্যায় বাড়ির ভিটেমাটি সরে গেছে। মেরামত করতে হলে টাকার প্রয়োজন। কেউ তো টাকা ধারও দেবে না এখন। ঘর মেরামত না করলে থাকবো কীভাবে জানি না।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা সালেহা সুমী বলেন, আশ্রিতদের শুকনো খাবারসহ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করে যাচ্ছি। পুনর্বাসনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সিদ্ধান্ত এলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।