বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ১১:৪০ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ॥ বেদখল হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে দীর্ঘদিনের অবহেলিত চন্দ্রনাথ পুকুরের জায়গা উদ্ধার করেছে হবিগঞ্জ পৌরসভা। সম্প্রতি হবিগঞ্জ পৌরসভার মাসিক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই পুকুরের জমি উদ্ধার করার উদ্যোগ নেয়া হয়।
মাস্টার কোয়ার্টার এলাকায় হবিগঞ্জ পৌরসভার নিজস্ব ৬৫ শতক ভ‚মিতে অবস্থিত চন্দ্রনাথ পুকুর
পৌরসভার উদাসীনতার কারণে এই পুকুরে দীর্ঘদিন ধরে একটি মহল মাটি ভরাট করে নিজেদের দখলে নিয়ে যাচ্ছে। পুকুরের পূর্বপাড়ে রয়েছে দোকানপাট। এই দোকানগুলোও পুকুরের জমিতে অবস্থিত। বস্তুতঃ পুকুরের বিভিন্ন পাড়ে মাটিফেলে যে যার মতো করে মাটি ভরাট করে পুকুরের আকৃতিকে সংকুচিত করে ফেলেছেন। দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত এই পুকুরের প্রতি উদাসীনতা দেখানোর ফলে পুকুরের জমি প্রায় বেদখল হওয়ার পথে ছিল। এমতাবস্থায়, পৌর মেয়র আতাউর রহমান সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পৌর পরিষদের মাসিক সভায় এই পুকুরের জমি উদ্ধারের সিদ্ধান্ত হয়। সাথে সাথে পৌরসভার উন্নয়নের স্বার্থে ও আয়বৃদ্ধির জন্য উক্ত স্থানে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণেরও সিদ্ধান্ত হয়। সভায় বক্তারা বলেন এই বহুতল ভবন নির্মাণে পৌরসভা যেমন অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে ঠিক তেমনি হবিগঞ্জ শহরের ব্যবসা-বাণিজ্যেও উন্নয়ন সাধিত হবে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পৌরসভা ওই পুকুরের জমি উদ্ধার ও মাটি ভরাটের কাজ শুরু করে।
এ ব্যাপারে ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহ্ সালাউদ্দিন আহাম্মদ টিটু বলেন, ‘চন্দ্রনাথ পুকুরের জমি হবিগঞ্জ পৌরসভার একটি মূল্যবান সম্পদ। প্রায় ৫০ কোটি টাকা মূল্যের ওই জমি দীর্ঘদিন যাবত অযতœ ও অবহেলার কারণে বেদখল হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছিল। তাছাড়া প্রধান সড়ক প্রশস্ত হওয়ার কারণে পুকুরের পূর্বপাড়ের ব্যবসায়ীরা পিছনের দিকে মাটি ফেলে পুকুরকে সংকুচিত করে ফেলেছেন। ফলে পূর্বের মতো এই পুকুর আর ইজারা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ কারনে পৌরসভা রাজস্ব আয় হতে বঞ্চিত হচ্ছে। পৌর মেয়র আতাউর রহমান সেলিমের নেতৃত্বে পৌর পরিষদ পুকুরের এই জমিকে কাজে লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘একটি মহল এই উন্নয়ন কাজকে বাঁধাগ্রস্থ করতে নানা অজুহাতে এই কাজের বিরোধীতা করছে। তারা পৌর পরিষদকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে।’ কাউন্সিলর বলেন, ‘চন্দ্রনাথ পুকুরের জমিতে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সেটি পৌরসভা তথা পৌরবাসীর উন্নয়নে নেয়া হয়েছে। সে কারনেই এই জমিতে উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করতেকোন অপরাজনীতি পৌরবাসী মেনে নেবে না।’
এ ব্যাপারে, পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ মোঃ জাহির উদ্দিন বলেন, ‘পৌরসভা তার নিজস্ব আয়ে পরিচালিত হয়। নিজস্ব আয় হতে পৌরসভাকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতাদিও পরিশোধ করতে হয়। আবার উন্নয়ন কাজও পরিচালনা করতে হয়। তাই পৌরসভার আয় বৃদ্ধির জন্য বহুতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মানের মতো প্রকল্প গ্রহন করা জরুরী।’
হবিগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ গৌতম কুমার রায় বলেন, ‘চন্দ্রনাথ পুকুরের জমি পৌরসভার জন্য আশির্বাদ হতে পারে, যদি এটিকে বাণিজ্যিক ভবনের মতো একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যায়। সবদিক বিবেচনা করেই আমরা এটি উন্নয়নের পক্ষেসিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি চন্দ্রনাথ পুকুরে পৌরসভার মাটি ভরাটের কাজ নিয়ে একটি মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় উন্নয়ন কাজের নেতিবাচক প্রভাব তুলে ধরে এর কাজ বন্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে।