রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:৩৭ অপরাহ্ন
স্পোর্টস ডেস্ক: চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বুধবার রাতে ‘এইচ’ গ্রুপের ম্যাচে ৩-১ গোলে জিতেছে পিএসজি। গোল পেয়েছেন পিএসজির তিন তারকা মেসি, এমবাপ্পে ও নেইমার। রেকর্ড গড়ার রাতে গোল করার পাশাপাশি গোলও করিয়েছেন লিওনেল মেসি। ম্যাকাবি হাইফার হয়ে একমাত্র গোল করেন তিয়ারন চেরি।
ইসরায়েলি ক্লাব ম্যাকাবি হাইফা ঘরের মাঠে প্রথমে এগিয়ে গেলেও জিততে পারেনি। প্রথমার্ধেই লিওনেল মেসির রেকর্ড গড়া গোলে সমতায় ফেরে পিএসজি। বিরতির পর কিলিয়ান এমবাপ্পে ও নেইমারের গোলে ইসরাইল থেকে ৩-১ গোলের জয় নিয়ে ফিরেছে ক্রিস্তোফ গালতিয়েরের দল।
প্রথমার্ধে পিএসজির চেয়ে ভালো খেলেছে স্বাগতিকরা। যার ফলে ম্যাচের ২৪তম মিনিটে প্রথম লিড পায় ম্যাকাবি হাইফা। ডান প্রান্ত থেকে হাইফার উইঙ্গার ডোলেভ হাজিজিয়ার দুর্দান্ত ক্রসে তিয়ারন চেরি ভলিতে পিএসজির জালে বল জড়ান। তাকিয়ে তাকিয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না পিএসজি গোলরক্ষক দোন্নারুম্মার। তবে গোলটির উৎস ছিল মাঝ মাঠে পিএসজির ইতালিয়ান মিডফিল্ডার মার্কো ভেরোত্তির বল হারানো।
এগিয়ে যাওয়া গোলে স্বাগতিক সমর্থকদের উল্লাসের গর্জন সুদূর প্যারিস থেকে শোনা গেলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। স্লোগান, সমর্থনে ম্যাচের প্রায় পুরো সময় গ্যালারি মাতিয়েছেন হাইফার দর্শক। আর গোলটাও তাদের অপেক্ষা ঘুচিয়েছে। চ্যাম্পিয়নস লিগে ২০০২ সালের পর এটা ম্যাকাবি হাইফার প্রথম গোল। উল্লাস লাগাম ছাড়ানোই স্বাভাবিক।
আবার পিনপতন নীরবতাও নেমেছে হাইফা এগিয়ে যাওয়ার ১৩ মিনিট পর যখন মেসি গোল করে পিএসজিকে সমতায় ফেরান। ম্যাচের ৩৭তম মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে রক্ষণ-চেরা দৌড়ে হাইফার বক্সে ঢুকে পড়েন এমবাপ্পে। তার ক্রস হাইফার এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে সুবিধাজনক জায়গায় বল পেয়ে যান মেসি। এমন জায়গা থেকে বল জালে জড়াতে একটুও ভুল করেননি মেসি।
আর এই গোলের মাধ্যমে অনেক রেকর্ড গড়েছেন রেকর্ড সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী এই আর্জেন্টাইন তারকা। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে টপকে চ্যাম্পিয়নস লিগে সর্বোচ্চ ৩৯টি ভিন্ন ভিন্ন দলের বিপক্ষে গোলের রেকর্ড এখন মেসির। রোনালদোর গোল ৩৮টি দলের বিপক্ষে। পাশাপাশি আরো একটি রেকর্ড গড়েছেন তিনি। চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে টানা ১৮ মৌসুমে গোল পেলেন পিএসজি তারকা।
এই গোলেই দলীয় একটি রেকর্ডও স্পর্শ করেছে পিএসজি। রিয়াল মাদ্রিদের পর প্রথম দল হিসেবে ইউরোপ সেরার মঞ্চে গ্রুপ পর্বে টানা ৪০ ম্যাচে অন্তত একটি করে গোল করেছে ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা।
১-১ সমতায় বিরতিতে যায় দু’দল। তবে প্রথমার্ধে হাইফা ফরোয়ার্ড ফ্রাৎজ পিয়েরতের গোলটি অফসাইডের কারণে বাতিল না হলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যেতে হতো পিএসজিকে।
তবে বিরতির পর চিত্রটা পাল্টে যায়। গা ঝাড়া দিয়ে ওঠে পিএসজি। ৬৯তম এমবাপ্পের গোলটি পিএসজির ধারাবাহিক আক্রমণের ফসল। মেসির রক্ষণ চেরা থ্রুতে চিরাচরিত কোনাকুনি শটে হাইফার জালে বল জড়ান ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে। এবং ম্যাচে প্রথমবারের মতো এগিয়ে যায় পিএসজি।
নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার ২ মিনিট আগে সফরকারীদের ৩-১ গোলে এগিয়ে নেন নেইমার। মাঝ মাঠ থেকে মার্কো ভেরাত্তির বাতাসে ভাসানো পাস দারুন ফিনিশিংয়ে হাইফার জালে পাঠান ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড নেইমার।
চ্যাম্পিয়নস লিগে এই প্রথম একই ম্যাচে মেসি, নেইমার ও এমবাপ্পে তিনজনেই গোল পেলেন। আর মেসির রেকর্ডের রাতে পিএসজিও ৩-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। এই জয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রতিপক্ষের মাঠে টানা পাঁচ ম্যাচে জয়শূন্য থাকার পর জয়ের দেখা পেল পিএসজি।
২ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘এইচ’ গ্রুপের শীর্ষে পিএসজি। এই গ্রুপের অন্য ম্যাচে জুভেন্টাসের মাঠে জুভেন্টাসকে ২-১ গোলে হারিয়েছে বেনফিকা। পিএসজির সমান ম্যাচে সমান পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে পর্তুগালের ক্লাবটি। ২ ম্যাচে কোনো পয়েন্ট না পাওয়া জুভেন্টাস তিনে ও হাইফা চারে।