সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩, ০২:৫২ পূর্বাহ্ন

লাখাইয়ে কৃষিতে নারী, মজুরীতে বৈষম্য

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ লাখাইয়ে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও কৃষিকার্যাদিতে অবদান রেখে চলেছেন সমানতালে। নারীদের কেউবা নিজেদের গৃহস্থালি কাজে পুরুষকে সহযোগিতার করে যাচ্ছেন এবং বাড়ির আঙ্গিনায় ফলদ, বনজ গাছপালা লাগানো সহ শাকসবজি চাষবাস করে সংসারে স্বচ্ছতা আনায়নে নিয়োজিত। আবার কেউবা অন্যের জমিতে শ্রম বিক্রি করে জীবনযুদ্ধে ব্যাপৃত। লাখাইয়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী শ্রমিকের কাজ করে থাকেন। দরিদ্র পরিবারের অনেক নারী কৃষি কাজে তাদের শ্রমের বিনিময়ে তাদের সংসার চালাচ্ছেন। দরিদ্র ও অতিদরিদ্র নারীরা দলবেঁধে কৃষি জমিতে কাজ করতে দেখা যায়। নারী শ্রমিকরা জমিতে ধান রোপণ, আগাছা পরিষ্কার, বীজতলা থেকে চারা উত্তোলনের মতো কাজ করে থাকে। আবার কেউবা মাটি কাটার মতো পরিশ্রমের কাজও করছে। নারীরা পুরুষের মতো শ্রমিকের কাজ করলেও তারা পুরুষের চেয়ে মজুরী পান কম। তারা তাদের ন্যায্য মজুরি প্রাপ্তি থেকে হন বঞ্চিত।

খোঁজ নিয়ে জানা যায় উপজেলার গোপালপুর, আগাপুর, মাহমুদপুর, মোড়াকরি সহ বিভিন্ন গ্রামের নারী শ্রমিকেরা সারা বছরই কোনো না কোন কৃষিকার্যাদিতে সম্পৃক্ত। নারী শ্রমিকেরা পুরুষ শ্রমিকের তুলনায় কোন কোন কাজে অধিকতর দক্ষতাসম্পন্ন হলেও সেই অনুসারে তারা মূল্যায়িত হননা।

কৃষক কুদ্দুছ মিয়া জানান, ‘আমি বুল্লা হাওরে গত বছর বোরো ধান চাষের সময় নারী শ্রমিক নিয়োগ করি। তারা জমি রোপনে বেশ দক্ষ এবং কাজেও কোন অলসতা নেই। মজুরী কিছুটা কম।’

কৃষক ফরিদ মিয়া জানান, ‘আমি প্রতি বছর আমার জমিতে আগাছা সাফ করতে নারী শ্রমিক নিয়ে আসি। বর্তমান লাখাইয়ে রোপা আমন ধান লাগানো পুরোদমে চলছে।’

বৃহস্পতিবার বিভিন্ন মাঠ সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, নারী ও পুরুষ শ্রমিক একত্রিত হয়ে জমিতে ধান রোপণ করছেন। আবার কোথাও শুধু নারীরা দলবেঁধে জমিতে ধান রোপণ করছে। সরেজমিন উপজেলার কাসিমমপুর, বামৈ ও সিংহগ্রাম মাঠে পরিদর্শনকালে এ দৃশ্য দেখা যায়।

কাসিমপুর মাঠে নারী শ্রমিক সরস্বতী(৩৫), বিশখা(৪৫) ও ফালানি(৫০) এর সাথে আলাপকালে জানান, ‘আমরা ৬ জন নারী মিলে দলবদ্ধ হয়ে চুক্তিতে জমিতে ধান রোপণ করছি। প্রতি বিঘা জমিতে ১ হাজার টাকা। সারাদিনে ২ থেকে তিন বিঘা জমি রোপণ করতে পারি। আর এতে আমাদের ৪০০-৫০০ টাকা করে রোজগার হয়। এভাবে ভাল আয় করতে পারছি তবে আমরা যখন দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করি তখন আমাদের মজুরি ৫০-১০০ টাকা কম দিয়ে থাকেন। আমরা নিরুপায় হয়ে মেনে নিতে বাধ্য হই। ধান রোপণ ছাড়া আরকি কাজ করেন জানতে চাইলে অনুরোপা নামে একজন জানান, মাটিকাটা সহ যখন যে কাজ পাই তাই করে থাকি। আমাদের চুক্তিতে কাজ করলে আয় বেশী হয়।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.
Developed by DesigUs