ঢাকা ০২:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শহীদ জিয়া এ দেশের গণতান্ত্রিক চেতনা বোধ জাগিয়ে তোলা মানুষের নিবেদিত প্রাণ

মঈনুল হাসান রতন

আজ ৩০ মে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া রহমানের ৪৪ তম শাহাদাত বার্ষিকী।
৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকীতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বাংলাদেশের মানুষ। এই নামটি জড়িয়ে আছে এদেশের ইতিহাসের সঙ্গে।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সম্পর্কে লিখতে গিয়ে আমার একটা কথা মনে আসছে শহীদ জিয়া যে সব গুণের অধিকারী ছিলেন সেই গুণগুলোর জন্য আজ এ দেশের মানুষের কাছে তিনি বেঁচে আছেন এবং বেছে থাকবেন সারা জীবন।

সেই গুণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল তাহার সততা ও দেশ প্রেম। বাংলাদেশের বহু দলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ঘোষক, সাবেক প্রেসিডেন্ট, জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশ মানুষের অতিপ্রিয় নাম জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ শে জানুয়ারি বগুড়া জেলার বাগবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শহীদ জিয়াউর রহমানের পিতা মাতা ছোট বেলা থেকেই আদর করে তাকে কমল নামে ডাকতেন। তাই তার ডাক নাম ছিল কোমল।

তার পিতা ছিলেন মনসুর রহমান মাতা জাহানারা খাতুন। জিয়াউর রহমান ছিলেন তার পিতা মাতার পাঁচ সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয়। তার পাঁচ ভাইদের মধ্যে তিনি ছিলেন ব্যতিক্রম। শহীদ জিয়াউর রহমান ছোট বেলা থেকেই ছিলেন সাদামাটা লোভহীন ব্যক্তিসত্তা। শহীদ জিয়া সবসময় মনে করতেন মানুষের কল্যাণ করাই তার জীবনের মূল লক্ষ্য। তার জীবনের মূল সুর ছিল মানবতার সেবা ও দারিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নতি সাধন। সততায় তিনি ছিলেন উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতন। জিয়াউর রহমানের শিক্ষা জীবন শুরু হয়েছিল কলকাতা থেকে। তিনি প্রথমে কলকাতা শিশু শিক্ষা বিদ্যাপীঠ নামে একটি স্কুলে ভর্তি হন। ছোট বেলা থেকেই জিয়াউর রহমান খুব মেধাবী ছিলেন। ১৯৪২ সালে তখন দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ চলছিল। সমস্ত ভারতবর্ষে তখন যুদ্ধের ঢেউ লাগে।

তখন শহরের মানুষ দিশেহারা হয়ে গ্রামের দিকে ছুটে যায়। শহীদ জিয়ার পিতা তার গ্রামের বাড়ি বাগবাড়িতে চলে আসেন। ওই সময় শহীদ জিয়াকে বাগবাড়ি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে ভর্তি করে দেওয়া হয়। ওই স্কুলে শহীদ জিয়া দুই বছর লেখাপড়া করেন। তার পর শহীদ জিয়া তার বাবার সাথে আবার কলকাতা চলে আসেন। তাকে সেখানকার খ্রিস্টান মিশনারী দ্বারা পরিচালিত হেয়ার স্কুলে ভর্তি করানো হয়।

তারপর ১৯৪৭ সালে দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান সৃষ্টি হলে তার বাবা মনসুর রহমান করাচীতে চলে যায়। ১৯৪৮ সালে ১ জুলাই একাডেমী স্কুলে ফোর্থ দি ষ্টান ক্লাসে ভর্তি হয়। জিয়াউর রহমান ১৯৫২ সালে করাচী একাডেমী স্কুল থেকে কৃতিত্বের সাথে মেট্রিক পাশ করেন। শহীদ জিয়াউর রহমানের ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করা। কিন্তু কলেজে ভর্তি হওয়ার পর তার মনে পরিবর্তন আসে। জিয়াউর রহমান ভাবলেন ডাক্তার না হয়েও দেশ ও জাতীর সেবা করতে পারে একজন সৈনিক।

কারণ সৈনিকের হাতে শুধু মানুষ নয় দেশ রক্ষার মহান দায়িত্বও ন্যস্ত থাকে। তাই জিয়াউর রহমান ১৯৫৩ সালে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯৫৫ সালে জিয়াউর রহমান পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। জিয়াউর রহমান এর মধ্যে পূর্ব পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে সাফল্যের সাথে দয়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় তিনি ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট কমান্ডার ছিলেন। একজন বীর সৈনিক হিসাবে তার জীবনের সূত্রপাত ঘটলেও তিনি এদেশের রাজনীতিতে এক অপার বিস্ময় এবং রাষ্ট্র পরিচালনার কিংবদন্তি সফল রাষ্ট্র নায়ক।

সে কারণে অস্ত্র হাতে নিয়ে ছিলেন জাতীয় মুক্তি প্রত্যয়ে তার দৃঢ় ঘোষণার মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের এ দেশের আপামর জনতা ঝাপিয়ে পরে মাতৃভূমি রক্ষায় স্বশস্ত্র। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়। স্বাধীন সার্বভৌমত্ব বাংলাদেশ। সামরিক জীবনে জিয়া রহমান ছিলেন সাহসী ও সফল বীর সৈনিক। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সততা ও দেশ প্রেমকে আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। শহীদ জিয়া আজ কেবল একটি ব্যক্তির নাম নয়। তিনি আজ একটি বিশ্বাস, একটি অনুভূতি, একটি চেতনা। শহীদ জিয়া বাংলাদেশের সৃষ্টির অস্তিত্বের সঙ্গে আজ তা অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত। বাংলাদেশের ইতিহাসের পাতায় এক বীর সৈনিক।

শহীদ উন্নয়নের দ্বারা যখন অব্যহতি ছিল তখনই ষড়যস্ত্রকারীরা নির্মমভাবে রাতের অন্ধকারে এই মহান রাষ্ট্র নায়কের জীবন কেড়ে নিল। শহীদ হলেন বিরোধী উন্নয়ন বিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে।

তিনি আজ আমদের মধ্যে নেই। আছে তার মহান কৃতি আদর্শ ও উন্নয়নের দিক নির্দেশনা।

একজন লেখক হিসেবে নয়, এদেশের ১৮ কোটি মানুষের অংশ হিসেবে শহীদ জিয়া বাঙালী জাতীয় মহান রাষ্ট্র নায়ক হিসেবে বেঁচে থাবেন।

শহীদ জিয়া এ দেশের গণতান্ত্রিক চেতনা বোধ জাগিয়ে তোলা মানুষের নিবেদিত প্রাণ।

লেখক ও সাংবাদিক
মঈনুল হাসান রতন
হবিগঞ্জ

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০১:০১:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫
৪৩ বার পড়া হয়েছে

শহীদ জিয়া এ দেশের গণতান্ত্রিক চেতনা বোধ জাগিয়ে তোলা মানুষের নিবেদিত প্রাণ

আপডেট সময় ০১:০১:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫

আজ ৩০ মে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া রহমানের ৪৪ তম শাহাদাত বার্ষিকী।
৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকীতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বাংলাদেশের মানুষ। এই নামটি জড়িয়ে আছে এদেশের ইতিহাসের সঙ্গে।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সম্পর্কে লিখতে গিয়ে আমার একটা কথা মনে আসছে শহীদ জিয়া যে সব গুণের অধিকারী ছিলেন সেই গুণগুলোর জন্য আজ এ দেশের মানুষের কাছে তিনি বেঁচে আছেন এবং বেছে থাকবেন সারা জীবন।

সেই গুণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল তাহার সততা ও দেশ প্রেম। বাংলাদেশের বহু দলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ঘোষক, সাবেক প্রেসিডেন্ট, জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশ মানুষের অতিপ্রিয় নাম জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ শে জানুয়ারি বগুড়া জেলার বাগবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শহীদ জিয়াউর রহমানের পিতা মাতা ছোট বেলা থেকেই আদর করে তাকে কমল নামে ডাকতেন। তাই তার ডাক নাম ছিল কোমল।

তার পিতা ছিলেন মনসুর রহমান মাতা জাহানারা খাতুন। জিয়াউর রহমান ছিলেন তার পিতা মাতার পাঁচ সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয়। তার পাঁচ ভাইদের মধ্যে তিনি ছিলেন ব্যতিক্রম। শহীদ জিয়াউর রহমান ছোট বেলা থেকেই ছিলেন সাদামাটা লোভহীন ব্যক্তিসত্তা। শহীদ জিয়া সবসময় মনে করতেন মানুষের কল্যাণ করাই তার জীবনের মূল লক্ষ্য। তার জীবনের মূল সুর ছিল মানবতার সেবা ও দারিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নতি সাধন। সততায় তিনি ছিলেন উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতন। জিয়াউর রহমানের শিক্ষা জীবন শুরু হয়েছিল কলকাতা থেকে। তিনি প্রথমে কলকাতা শিশু শিক্ষা বিদ্যাপীঠ নামে একটি স্কুলে ভর্তি হন। ছোট বেলা থেকেই জিয়াউর রহমান খুব মেধাবী ছিলেন। ১৯৪২ সালে তখন দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ চলছিল। সমস্ত ভারতবর্ষে তখন যুদ্ধের ঢেউ লাগে।

তখন শহরের মানুষ দিশেহারা হয়ে গ্রামের দিকে ছুটে যায়। শহীদ জিয়ার পিতা তার গ্রামের বাড়ি বাগবাড়িতে চলে আসেন। ওই সময় শহীদ জিয়াকে বাগবাড়ি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে ভর্তি করে দেওয়া হয়। ওই স্কুলে শহীদ জিয়া দুই বছর লেখাপড়া করেন। তার পর শহীদ জিয়া তার বাবার সাথে আবার কলকাতা চলে আসেন। তাকে সেখানকার খ্রিস্টান মিশনারী দ্বারা পরিচালিত হেয়ার স্কুলে ভর্তি করানো হয়।

তারপর ১৯৪৭ সালে দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান সৃষ্টি হলে তার বাবা মনসুর রহমান করাচীতে চলে যায়। ১৯৪৮ সালে ১ জুলাই একাডেমী স্কুলে ফোর্থ দি ষ্টান ক্লাসে ভর্তি হয়। জিয়াউর রহমান ১৯৫২ সালে করাচী একাডেমী স্কুল থেকে কৃতিত্বের সাথে মেট্রিক পাশ করেন। শহীদ জিয়াউর রহমানের ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করা। কিন্তু কলেজে ভর্তি হওয়ার পর তার মনে পরিবর্তন আসে। জিয়াউর রহমান ভাবলেন ডাক্তার না হয়েও দেশ ও জাতীর সেবা করতে পারে একজন সৈনিক।

কারণ সৈনিকের হাতে শুধু মানুষ নয় দেশ রক্ষার মহান দায়িত্বও ন্যস্ত থাকে। তাই জিয়াউর রহমান ১৯৫৩ সালে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯৫৫ সালে জিয়াউর রহমান পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। জিয়াউর রহমান এর মধ্যে পূর্ব পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে সাফল্যের সাথে দয়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় তিনি ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট কমান্ডার ছিলেন। একজন বীর সৈনিক হিসাবে তার জীবনের সূত্রপাত ঘটলেও তিনি এদেশের রাজনীতিতে এক অপার বিস্ময় এবং রাষ্ট্র পরিচালনার কিংবদন্তি সফল রাষ্ট্র নায়ক।

সে কারণে অস্ত্র হাতে নিয়ে ছিলেন জাতীয় মুক্তি প্রত্যয়ে তার দৃঢ় ঘোষণার মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের এ দেশের আপামর জনতা ঝাপিয়ে পরে মাতৃভূমি রক্ষায় স্বশস্ত্র। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়। স্বাধীন সার্বভৌমত্ব বাংলাদেশ। সামরিক জীবনে জিয়া রহমান ছিলেন সাহসী ও সফল বীর সৈনিক। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সততা ও দেশ প্রেমকে আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। শহীদ জিয়া আজ কেবল একটি ব্যক্তির নাম নয়। তিনি আজ একটি বিশ্বাস, একটি অনুভূতি, একটি চেতনা। শহীদ জিয়া বাংলাদেশের সৃষ্টির অস্তিত্বের সঙ্গে আজ তা অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত। বাংলাদেশের ইতিহাসের পাতায় এক বীর সৈনিক।

শহীদ উন্নয়নের দ্বারা যখন অব্যহতি ছিল তখনই ষড়যস্ত্রকারীরা নির্মমভাবে রাতের অন্ধকারে এই মহান রাষ্ট্র নায়কের জীবন কেড়ে নিল। শহীদ হলেন বিরোধী উন্নয়ন বিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে।

তিনি আজ আমদের মধ্যে নেই। আছে তার মহান কৃতি আদর্শ ও উন্নয়নের দিক নির্দেশনা।

একজন লেখক হিসেবে নয়, এদেশের ১৮ কোটি মানুষের অংশ হিসেবে শহীদ জিয়া বাঙালী জাতীয় মহান রাষ্ট্র নায়ক হিসেবে বেঁচে থাবেন।

শহীদ জিয়া এ দেশের গণতান্ত্রিক চেতনা বোধ জাগিয়ে তোলা মানুষের নিবেদিত প্রাণ।

লেখক ও সাংবাদিক
মঈনুল হাসান রতন
হবিগঞ্জ