শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩, ০৬:৪৯ পূর্বাহ্ন

শায়েস্তাগঞ্জে ট্রেনের আসনবিহীন টিকেট বিক্রি বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ হবিগঞ্জের জেলা ৮টি উপজেলারবাসী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিরাপদে আসা যাওয়ার সবচেয়ে ভাল মাধ্যম একমাত্র রেলস্টেশন শায়েস্তাগঞ্জ। শায়েস্তাগঞ্জে ৬টি আন্তঃনগর ট্রেন আসা যাওয়া করে। তন্মধ্যে এ স্টেশনের জন্য প্রতিদিন প্রায় ৩০০টি সিটিং টিকেট বরাদ্দ রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকাগামী পারাবতে ৩০টি, কালনী ৪৮টি, জয়ন্তিকা ৬৫টি, উপবন ৫১টি, চট্টগ্রামমুখী উদয়নে ৪০টি ও পাহাড়িকার জন্য ৪৬টি টিকেট।

সারাদেশে করোনার ভয়াবহ সংক্রমণের কারণে দীর্ঘদিন ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। পরে দফায় দফায় নানা নির্দেশনায় ট্রেন চালু করা হয়। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে আসনবিহীন টিকেট করোনার সময়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। এই নির্দেশনা এখনো চলমান রয়েছে। যদিও টিকেটের চেয়ে বেশ কয়েকগুণ যাত্রী আসনছাড়াই আসা যাওয়া করে থাকেন।

জানা যায়, ঢাকাগামী কালনী ট্রেনে ২০-৩০টি, পারাবতে ৫০টি, জয়ন্তিকায় ৫০টি, উপবনে ৫-৭ টি স্ট্যান্ডিং টিকেট বিক্রি করা হত। সবগুলোর ভাড়া ছিল ২১৫ টাকা। চট্টগ্রামগামী পাহাড়িকাতে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ টি ও উদয়নে ১৫০-২০০ টি আসনবিহীন টিকেট বিক্রি করা হত যেগুলোর ভাড়া ছিল ২৭০ টাকা।

শায়েস্তাগঞ্জ রেলস্টেশনের একটি বিশেষ সূত্রে জানা যায়, করোনায় দীর্ঘদিন ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় চলতি বছরে এমনিতেই টিকেট বিক্রি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় চার ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে। গত বছরেও টিকেট বিক্রি ছিল বেশ কম, চলতি বছর গত বছরের তুলনায় বিক্রি আরো কমে আসতে পারে।

এদিকে, আসনবিহীন টিকেট বন্ধ করে দিলেও যাত্রীরা ঠিকই বিভিন্ন কায়দায় দাঁড়িয়ে আসা-যাওয়া করছেন। কখনো টিটির সাথে ভাড়ার চুক্তি করে বা কখনো এটেনডেন্টের সাথে যোগসাজশ করে যাত্রীরা ট্রেনে যাতায়াত করছেন। এভাবে আসনবিহীন টিকেট বন্ধ থাকলেও প্রতিটি ট্রেনে কয়েকগুণ বেশি যাত্রী ঠিকই দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন। এতে করে, প্রতিদিন সরকার হাজার হাজার টাকা ট্যাক্স হারাচ্ছে। আর অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছে কিছু কতিপয় অসাধু লোক।

সরেজমিনে গিয়ে কথা বলে জানা যায়, শায়েস্তাগঞ্জ রেলস্টেশনে প্রতিদিন প্রায় অর্ধলক্ষাধিক টাকার ও বেশি টিকেট বিক্রি হয়ে থাকে। সেখানে যদি আসনবিহীন টিকেট বিক্রি করা হত তাহলে লক্ষাধিক টাকার চেয়েও বেশি টিকেট বিক্রি করা হত। আসনবিহীন টিকেট বিক্রি বন্ধ থাকার ফলে মোটা অংকের টিকিট বিক্রি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কর্তৃপক্ষ আর রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন রেল কর্মকর্তা জানান, শায়েস্তাগঞ্জে প্রতিদিন একেবারে কম হলেও অন্তত ৪০০টি আসনবিহীন টিকেট বিক্রি করা হত। এতে প্রতিদিন বিক্রি হত প্রায় এক লাখ টাকার টিকেট। তাহলে মাসে ৩০ লাখ টাকার টিকেট বিক্রি হত। এই বিক্রিতেই প্রতি মাসে সরকার প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকার ভ্যাট ও ট্যাক্স পেত। আসনবিহীন টিকেট বিক্রি বন্ধ থাকায় এভাবেই সরকার মোটা অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে।

এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ রেলস্টেশন মাস্টার গৌর প্রসাদ দাস পলাশ জানান, করোনার কারণে স্ট্যান্ডিং টিকেট বিক্রি বন্ধ রয়েছে। সেটা কবে চালু হবে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন।

তিনি আরো জানান, প্রতিদিন অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে আসা যাওয়া করে থাকেন। এছাড়া শায়েস্তাগঞ্জ স্টেশনে টিকেট কালেক্টর (টিসি) পদও খালি রয়েছে। ফলে মানুষজন সহজেই স্টেশন ত্যাগ করতে পারেন।

 

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.
Developed by DesigUs