ডেস্ক রিপোর্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫২তম জন্মদিন আজ বুধবার।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের এইদিনে অবরুদ্ধ ঢাকায় তাঁর জন্ম। স্বাধীনতা যুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের পর তাঁর নাম ‘জয়’ রাখেন নানা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জয় পরমাণু বিজ্ঞানী প্রয়াত ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া ও শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার সময় বাবা-মায়ের সঙ্গে জার্মানি ছিলেন জয়। পরে লন্ডন হয়ে মায়ের সঙ্গে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ভারতে চলে যান তিনি। ফলে তাঁর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ভারতে। সেখানে একটি কলেজে লেখাপড়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট আর্লিংটন থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক এবং পরে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। বর্তমানে স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় বাস করছেন তিনি।
‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর রূপকার সজীব ওয়াজেদ জয়কে ২০১৪ সালের ১৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। জয় ২০০২ সালের ২৬ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ক্রিস্টিন ওভারমায়ারকে বিয়ে করেন। তাঁদের একটি কন্যাসন্তান আছে। তাঁর নাম সোফিয়া ওয়াজেদ।
২০১০ সালে সক্রিয় রাজনীতিতে আসেন জয়। ওই বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিতৃভূমি রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদ দেয়া হয় তাকে। যার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে আসেন তিনি।
২০০৭ সালে জয় ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম কর্তৃক গ্লোবাল লিডার অফ দ্য ওয়ার্ল্ড হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০০৮ ও ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে মায়ের নির্বাচনী এলকার পাশাপাশি সারাদেশে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়ে সাড়া ফেলে দেন তরুণ এই রাজনীতিবিদ।
জয় ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার বিষয়টি নিয়ে আসেন। পর্দার অন্তরালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে থেকে গোটা দেশে তথ্য-প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটান এই তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। বর্তমানে দলীয় ঘরানা ছাড়াও তথ্য-প্রযুক্তি, রাজনীতি, সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষাবিষয়ক বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে দেশে তথ্য-প্রযুক্তির বিকাশ, তরুণ উদ্যোক্তা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছেন জয়।
সজীব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশের রাজনীতি ও সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পাতায় নিয়মিত মতামত ব্যক্ত করে থাকেন। দেশের আইসিটি খাত-সংশ্লিষ্টদের মতে, শিক্ষাগত যোগ্যতা আর পেশাগত কাজের অভিজ্ঞতা- এই দুয়ের মিশেলেই দেশের আইসিটি খাতের এমন ত্বরিত উন্নতিতে সফল নেতৃত্ব দিতে পেরেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়।
বলা হয়ে য়াকে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালে বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় জাতির পিতার দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠান। মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানোর উদ্যোগে শুরু থেকেই এর নেপথ্যে কাজ করেন জয়।
তবে জীবন আড়ম্ভরপূর্ণ ও কর্মমুখর হলেও জয় বরাবরই জন্মদিন পালন করেন অনেকটা নীরবে, আড়ম্বরহীনভাবে। দেশে থাকলে দিনটি কাটান মায়ের সান্নিধ্যে। আর যুক্তরাষ্ট্রে থাকলে পান মায়ের শুভেচ্ছাসিক্ত ফোন। বরাবরের মতো এবারও তার জন্মদিন উপলক্ষে কোনো আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি নেই।
তবে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ঘরোয়া পরিবেশে জয়ের জন্মদিনের কেক কাটা হবে বলে জানা গেছে। এ অনুষ্ঠানে মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে জয়ও উপস্থিত থাকবেন।
জয়ের জন্মদিন উপলক্ষে যুবলীগ আজ বিকেল ৪টায় ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে বৃক্ষরোপণ এবং বাদ আছর ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের নিচতলায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে। পরে গরিব-দুস্থদের মাঝ খাবার বিতরণ করা হবে।
খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আজ দুপুরে সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা ও তার সু-স্বাস্থ্য কামনায় দোয়ার আয়োজন করেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। এছাড়াও জয়ের জন্মদিনে দেশব্যাপী মসজিদে মসজিদে দোয়া এবং মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ অন্যান্য উপাসনালয়ে প্রার্থনার অনুষ্ঠিত হবে।