ঢাকা ১২:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo নবীগঞ্জ শহরসহ ৭টি গ্রামের মানুষ জন শুন্য যৌথবাহিনী অভিযান ১৩ জন আটক Logo হবিগঞ্জে চালককে হত্যা করে ইজিবাইক ছিনতাই Logo নবীগঞ্জে ভয়াবহ সংঘর্ষ নিহত ১ আহত কয়েক শতাধিক Logo জুলাই অভ্যুত্থানে নৃশংস হামলার আসামি ও দালাল সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মৌলভীবাজারে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি Logo ৪দিনের উত্তেজনার পর নবীগঞ্জে কয়েক হাজার মানুষের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত কয়েক শতাধিক Logo নবীগঞ্জ দফায় দফায় সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত Logo এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১০ জুলাই Logo হবিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক নেতা সাকিব গ্রেপ্তার Logo শায়েস্তাগঞ্জ থানার সাবেক ওসি কামালের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা: সাংবাদিকসহ ২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ Logo হবিগঞ্জে ছুরিকাঘাতে এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত

সাতছড়িতে টিকে আছে একটি মাত্র ‘আসামি বানর’

নিজস্ব প্রতিবেদক

হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে কয়েক বছর ধরে ঠিকে আছে একটিমাত্র বিরল প্রজাতির একটি ‘আসামি বানর’। এই প্রজাতিটিকে ভারতের আসামে বেশি দেখা মেলে, তাই এই নামকরণ করা হয়েছে।

সরেজমিনে সাতছড়ি উদ্যানে বানরটিকে নিঃসঙ্গভাবে উদ্যানের স্টুডেন্ট ডরমেটরি ও রেস্টুরেন্টে আশপাশে ঘুরতে দেখা যায়। ব্যতিক্রম প্রজাতির হওয়ায় দেশীয় বানর কিংবা অন্য বানরজাতীয় স্তন্যপায়ী প্রাণীদের সঙ্গে দলবদ্ধ হয়ে তেমন ঘুরতে পারে না। তাই প্রায়ই একে দলছুট থাকতে দেখা যায়। বন্যপ্রাণী সংশ্লিষ্টরা জানান, বানরটির জোড়া মেলানো প্রয়োজন। প্রয়োজনে ভারত তথা বিদেশ থেকে কিছু প্রজাতির এই আসামি বানর এনে এই বনে অবমুক্ত করলে এই বানরটির জন্য প্রজননে সহায়ক হবে।
স্থানীয়রা জানান, প্রায়ই বানরটিকে বিষণ্ন অবস্থায় বসে থাকতে দেখা যায়। অনেকে ছবি তুলে বিরক্ত করে বানরটিকে। আবার কেউ কেউ বানরটি পাচারের আশঙ্কার কথা জানাচ্ছেন।

স্থানীয় বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, আসামি প্রজাতির বানটি নিঃসঙ্গভাবে চলাফেরা করে। সম্ভাবনা রয়েছে এটি দেশি প্রজাতির সঙ্গে প্রজনন করে শংকর জাতের উদ্ভাবন করতে পারে। তবে এটির জোড়া মেলানো প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত, বিরল ও বিপন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণী ‘আসামি বানর’। আসাম বান্দর বা বোঢ়া বানর নামেও পরিচিত। ইংরেজি নাম আসামিজ/আসাম/হিমালয়ান ম্যাকাক। সারকোপিথেসিডি গোত্রের প্রাণীটির বৈজ্ঞানিক নাম ‘Macaca assamensis’। এরা বড় আকারের বানর, তবে অন্যান্য বানর প্রজাতির তুলনায় লেজ বেশ খাটো। নাকের আগা থেকে লেজের গোড়া পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৫১ থেকে ৭৩ সেন্টিমিটার। লেজ ১৫ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার। পুরুষের ওজন ১০ থেকে ১৪ কেজি এবং স্ত্রীর ওজন ১০ থেকে ১২ কেজি। মাথা বড় ও বর্গাকার। মুখমণ্ডল চওড়া ও গাঢ় বাদামি থেকে লালচে। দেহের ওপরের লোমের রং বাদামি-ধূসর, নিচের লোম সাদাটে-ধূসর।

আসামি বানর’ মিশ্র চিরসবুজ পাহাড়ি বনের বাসিন্দা। দিবাচর, বৃক্ষবাসী ও ভূমিচারী প্রাণীগুলো বেশ লাজুক। সচরাচর পুরুষ, স্ত্রী, বাচ্চাসহ ৫ থেকে ১৫টির দলে বাস করে। দলে একাধিক পূর্ণবয়স্ক পুরুষ থাকতে পারে। ফল, পাতা, ফুল, শস্যদানা, কীটপতঙ্গ, ছোট মেরুদণ্ডী প্রাণী ইত্যাদি খায়। গভীর বনের বাসিন্দা হলেও নেপাল ও ভারতে খাবারের জন্য ফসলের খেতে হানা দেওয়ারও তথ্য রয়েছে। নিচু ও মোলায়েম সুরে ‘পিউ-পিউ’ স্বরে ডাকে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৮:৫৫:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
৪৮ বার পড়া হয়েছে

সাতছড়িতে টিকে আছে একটি মাত্র ‘আসামি বানর’

আপডেট সময় ০৮:৫৫:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে কয়েক বছর ধরে ঠিকে আছে একটিমাত্র বিরল প্রজাতির একটি ‘আসামি বানর’। এই প্রজাতিটিকে ভারতের আসামে বেশি দেখা মেলে, তাই এই নামকরণ করা হয়েছে।

সরেজমিনে সাতছড়ি উদ্যানে বানরটিকে নিঃসঙ্গভাবে উদ্যানের স্টুডেন্ট ডরমেটরি ও রেস্টুরেন্টে আশপাশে ঘুরতে দেখা যায়। ব্যতিক্রম প্রজাতির হওয়ায় দেশীয় বানর কিংবা অন্য বানরজাতীয় স্তন্যপায়ী প্রাণীদের সঙ্গে দলবদ্ধ হয়ে তেমন ঘুরতে পারে না। তাই প্রায়ই একে দলছুট থাকতে দেখা যায়। বন্যপ্রাণী সংশ্লিষ্টরা জানান, বানরটির জোড়া মেলানো প্রয়োজন। প্রয়োজনে ভারত তথা বিদেশ থেকে কিছু প্রজাতির এই আসামি বানর এনে এই বনে অবমুক্ত করলে এই বানরটির জন্য প্রজননে সহায়ক হবে।
স্থানীয়রা জানান, প্রায়ই বানরটিকে বিষণ্ন অবস্থায় বসে থাকতে দেখা যায়। অনেকে ছবি তুলে বিরক্ত করে বানরটিকে। আবার কেউ কেউ বানরটি পাচারের আশঙ্কার কথা জানাচ্ছেন।

স্থানীয় বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, আসামি প্রজাতির বানটি নিঃসঙ্গভাবে চলাফেরা করে। সম্ভাবনা রয়েছে এটি দেশি প্রজাতির সঙ্গে প্রজনন করে শংকর জাতের উদ্ভাবন করতে পারে। তবে এটির জোড়া মেলানো প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত, বিরল ও বিপন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণী ‘আসামি বানর’। আসাম বান্দর বা বোঢ়া বানর নামেও পরিচিত। ইংরেজি নাম আসামিজ/আসাম/হিমালয়ান ম্যাকাক। সারকোপিথেসিডি গোত্রের প্রাণীটির বৈজ্ঞানিক নাম ‘Macaca assamensis’। এরা বড় আকারের বানর, তবে অন্যান্য বানর প্রজাতির তুলনায় লেজ বেশ খাটো। নাকের আগা থেকে লেজের গোড়া পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৫১ থেকে ৭৩ সেন্টিমিটার। লেজ ১৫ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার। পুরুষের ওজন ১০ থেকে ১৪ কেজি এবং স্ত্রীর ওজন ১০ থেকে ১২ কেজি। মাথা বড় ও বর্গাকার। মুখমণ্ডল চওড়া ও গাঢ় বাদামি থেকে লালচে। দেহের ওপরের লোমের রং বাদামি-ধূসর, নিচের লোম সাদাটে-ধূসর।

আসামি বানর’ মিশ্র চিরসবুজ পাহাড়ি বনের বাসিন্দা। দিবাচর, বৃক্ষবাসী ও ভূমিচারী প্রাণীগুলো বেশ লাজুক। সচরাচর পুরুষ, স্ত্রী, বাচ্চাসহ ৫ থেকে ১৫টির দলে বাস করে। দলে একাধিক পূর্ণবয়স্ক পুরুষ থাকতে পারে। ফল, পাতা, ফুল, শস্যদানা, কীটপতঙ্গ, ছোট মেরুদণ্ডী প্রাণী ইত্যাদি খায়। গভীর বনের বাসিন্দা হলেও নেপাল ও ভারতে খাবারের জন্য ফসলের খেতে হানা দেওয়ারও তথ্য রয়েছে। নিচু ও মোলায়েম সুরে ‘পিউ-পিউ’ স্বরে ডাকে।