শুক্রবার, ০৯ Jun ২০২৩, ০৭:২৭ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ গ্রামবাংলার চিরায়ত ঐতিহ্য পলো দিয়ে মাছ ধরা। শুষ্ক মৌসুমে পানি কমে যাওয়ায় এ সময়টাতে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলের কম পানিতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। তখন কম পানিতে পলো দিয়ে মাছ শিকার করেন সৌখিন শিকারি ও কৃষকরা।
দিনক্ষণ ঠিক করে গ্রামবাসী মিলে একইসঙ্গে পলো দিয়ে মাছ ধরা উৎসবে রূপ নিতো। সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে এসব উৎসব। তবে সিলেটের বেশ কয়েকটি বিলে পলো বাওয়া উৎসব হয় প্রতিবছর। এরমধ্যে অন্যতম হলো সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার বাড়ারডুয়ার বিলে পলো বাওয়া উৎসব। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও পালিত হলো ঐতিহ্যবাহী ‘পলো বাওয়া উৎসব’।
শনিবার সকালে উপজেলার হরিপুর-বালিপাড়া গ্রামের শত শত মানুষ অংশ নেয় পলো বাওয়া উৎসবে। সকালেই দূর-দূরান্ত থেকে কয়েকশ’ মানুষ জড়ো হন বিলের ধারে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে শৌখিন মাছ শিকারিদের সঙ্গে উৎসুক দর্শকদের ভিড়। একপর্যায়ে অনেকটা উৎসব উদযাপনের মতো পলো দিয়ে মাছ ধরতে বিলে নামেন শিকারিরা।সরেজমিনে দেখা গেছে, পলোসহ মাছ শিকারের নানা সরঞ্জাম নিয়ে বিলে নামেন শিকারিরা। এ সময় পলোতে আটকা পড়ে দেশীয় প্রজাতির শোল, বোয়াল, রুই, কাতলাসহ বড় বড় মাছ। উৎসবে অংশ নেয়া শিকারিরা মাছ ধরতে পেরে যেন আনন্দে আত্মহারা। কেউ কেউ আবার মাছ না পেয়ে ফেরেন খালি হাতে। তবে এ বছর বড় মাছের সংখ্যা কম দেখা গেছে।হরিপুর গ্রামের আনা মিয়া নামের এক প্রবীণ বলেন, প্রতি বছর এ বিলে মাছ ধরতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আসেন। আবার কেউ আসেন মাছ ধরার উৎসব উপভোগ করতে। এ উৎসব আমাদের পূর্ব পুরুষের ঐতিহ্য। আমরা এটি ধরে রেখেছি। এই বছর আমি শারীরিক কারণে অংশ নিতে না পারলেও ছেলে এবং নাতিসহ সবার সঙ্গে বিলের ধারে এসে আনন্দ উপভোগ করছি।
হরিপুর গ্রামের বুলবুল জানান, দিন দিন হারিয়ে যাওয়া বাঙালির ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে প্রতি বছর এই উৎসব পালন করে এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করে আসছেন। নদীমাতৃক প্রতিটি এলাকাতেই যেন ঐতিহ্যবাহী পলো বাওয়া উৎসবের আয়োজন করা হয়।নিজস্ব প্রতিবেদকঃ