ঢাকা ১০:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo নবীগঞ্জ শহরসহ ৭টি গ্রামের মানুষ জন শুন্য যৌথবাহিনী অভিযান ১৩ জন আটক Logo হবিগঞ্জে চালককে হত্যা করে ইজিবাইক ছিনতাই Logo নবীগঞ্জে ভয়াবহ সংঘর্ষ নিহত ১ আহত কয়েক শতাধিক Logo জুলাই অভ্যুত্থানে নৃশংস হামলার আসামি ও দালাল সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মৌলভীবাজারে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি Logo ৪দিনের উত্তেজনার পর নবীগঞ্জে কয়েক হাজার মানুষের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত কয়েক শতাধিক Logo নবীগঞ্জ দফায় দফায় সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত Logo এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১০ জুলাই Logo হবিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক নেতা সাকিব গ্রেপ্তার Logo শায়েস্তাগঞ্জ থানার সাবেক ওসি কামালের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা: সাংবাদিকসহ ২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ Logo হবিগঞ্জে ছুরিকাঘাতে এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত

হবিগঞ্জের সাবেক এমপি ভাষা সৈনিক চৌধুরী আব্দুল হাই আর নেই

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:-

হবিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি, ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, ২৮ পঞ্চায়েত সভাপতি চৌধুরী আব্দুল হাই (৮৬) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বাংলাদেশ সময় সকাল প্রায় ৯টা ৪০ মিনিটের সময় আমেরিকার নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান।

তার জন্ম হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বড় বহুলা গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৩৯ সালের ২১ মার্চ। বাবা মৃত চৌধুরী আব্দুল গণি ও মা মরহুমা আছিয়া খাতুন চৌধুরী। তিনি হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৫৪ সালে সাধারণ ও অতিরিক্ত গণিতে লেটার মার্কসহ প্রথম বিভাগে মেট্রিক পাস করেন। ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৩ সালে বার কাউন্সিলে ও হবিগঞ্জ অ্যাডভোকেট সমিতিতে এনরোলড হন।

১৯৬৫ সালে তিনি রাজনীতিতে যোগদান করে ভাসানী ন্যাপের হবিগঞ্জ মহকুমার সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি মোজাফ্ফর ন্যাপে যোগদান করে হবিগঞ্জে সভাপতির দায়িত্ব চালিয়ে যান। ১৯৮৬-৮৭ সালে আট দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে হবিগঞ্জ-লাখাই আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৯৬ সালে প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে তিনি অবসর গ্রহণ করে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়, বিভিন্ন অধিকার আদায় আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ এবং হবিগঞ্জবাসীর সুখ-দুঃখের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন। তিনি ভ্রমণ করেছেন ভারত, থাইল্যান্ড, সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমানে রাশিয়া) ও আমেরিকা।

তিনি একজন ত্যাগী ভাষাসংগ্রামী। তার যুগান্তকারী ভূমিকায় ভাষা আন্দোলনে হবিগঞ্জের ছাত্ররা সোচ্চার হয়ে উঠেছিল।

হবিগঞ্জের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ছাত্ররা বাংলা ভাষার স্বীকৃতির দাবিতে শুরু করেন আন্দোলন। এ সময় তিনি ছাত্রদের মধ্যে প্রিয়মুখ হয়ে ওঠেন। সবার সার্বিক সহযোগিতায় হবিগঞ্জের ছাত্র-জনতা মিলে যখন আন্দোলনে ব্যস্ত, ঠিক সে মুহূর্তে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ভাষাসংগ্রামী মো. আবিদ আলী হবিগঞ্জে আসেন এবং চৌধুরী আব্দুল হাইকে সঙ্গে নিয়ে কোর্টস্টেশন রোড এলাকায় প্রথম সভা আহ্বান করেন। একপর্যায়ে ঢাকায় এসে ভাষাসংগ্রামীদের সঙ্গে তিনিও আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

তিনি মুক্তিযুদ্ধেরও সংগঠক। হবিগঞ্জ জেলা বারের সভাপতি ও সেক্রেটারি ছিলেন। তিনি হবিগঞ্জের প্রিয়মুখের একজন। তার মৃত্যুর খবরে দেশ-বিদেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১০:২০:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫
৫২ বার পড়া হয়েছে

হবিগঞ্জের সাবেক এমপি ভাষা সৈনিক চৌধুরী আব্দুল হাই আর নেই

আপডেট সময় ১০:২০:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫

হবিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি, ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, ২৮ পঞ্চায়েত সভাপতি চৌধুরী আব্দুল হাই (৮৬) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বাংলাদেশ সময় সকাল প্রায় ৯টা ৪০ মিনিটের সময় আমেরিকার নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান।

তার জন্ম হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বড় বহুলা গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৩৯ সালের ২১ মার্চ। বাবা মৃত চৌধুরী আব্দুল গণি ও মা মরহুমা আছিয়া খাতুন চৌধুরী। তিনি হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৫৪ সালে সাধারণ ও অতিরিক্ত গণিতে লেটার মার্কসহ প্রথম বিভাগে মেট্রিক পাস করেন। ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৩ সালে বার কাউন্সিলে ও হবিগঞ্জ অ্যাডভোকেট সমিতিতে এনরোলড হন।

১৯৬৫ সালে তিনি রাজনীতিতে যোগদান করে ভাসানী ন্যাপের হবিগঞ্জ মহকুমার সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি মোজাফ্ফর ন্যাপে যোগদান করে হবিগঞ্জে সভাপতির দায়িত্ব চালিয়ে যান। ১৯৮৬-৮৭ সালে আট দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে হবিগঞ্জ-লাখাই আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৯৬ সালে প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে তিনি অবসর গ্রহণ করে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়, বিভিন্ন অধিকার আদায় আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ এবং হবিগঞ্জবাসীর সুখ-দুঃখের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন। তিনি ভ্রমণ করেছেন ভারত, থাইল্যান্ড, সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমানে রাশিয়া) ও আমেরিকা।

তিনি একজন ত্যাগী ভাষাসংগ্রামী। তার যুগান্তকারী ভূমিকায় ভাষা আন্দোলনে হবিগঞ্জের ছাত্ররা সোচ্চার হয়ে উঠেছিল।

হবিগঞ্জের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ছাত্ররা বাংলা ভাষার স্বীকৃতির দাবিতে শুরু করেন আন্দোলন। এ সময় তিনি ছাত্রদের মধ্যে প্রিয়মুখ হয়ে ওঠেন। সবার সার্বিক সহযোগিতায় হবিগঞ্জের ছাত্র-জনতা মিলে যখন আন্দোলনে ব্যস্ত, ঠিক সে মুহূর্তে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ভাষাসংগ্রামী মো. আবিদ আলী হবিগঞ্জে আসেন এবং চৌধুরী আব্দুল হাইকে সঙ্গে নিয়ে কোর্টস্টেশন রোড এলাকায় প্রথম সভা আহ্বান করেন। একপর্যায়ে ঢাকায় এসে ভাষাসংগ্রামীদের সঙ্গে তিনিও আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

তিনি মুক্তিযুদ্ধেরও সংগঠক। হবিগঞ্জ জেলা বারের সভাপতি ও সেক্রেটারি ছিলেন। তিনি হবিগঞ্জের প্রিয়মুখের একজন। তার মৃত্যুর খবরে দেশ-বিদেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।