শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৭ পূর্বাহ্ন

খবরের শিরোনাম:
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য কেন শোনানো হয়নি তার জন্য তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন এমপি চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার আহবান তরুণদের প্রতি-এমপি আবু জাহির দুর্নীতিমুক্ত জেলা পরিষদ গঠনের ঘোষণা দিলেন আলেয়া আক্তার ওয়ারিশান ও এসএ খতিয়ান জ্বালিয়াতি বিরুদ্ধে চার্জশীট প্রদান করল পিবিআই দুর্ঘটনা কবলিত পিকআপ উদ্ধারের সময় বাস চাপায় নিহত ২ হবিগঞ্জে সড়কের পাশ থেকে তরুণীর মরদেহ উদ্ধার ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রভাব মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপার ঘটনায় নবদম্পতিসহ একই পরিবারের ৬ জন নিহত বানিয়াচংয়ে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত নবীগঞ্জে প্রথমবারের মতো লটারির মাধ্যমে কৃষকের তালিকা করা হলো

আনন্দ-উচ্ছাসে খেলার মাঠ মাতালেন কলম সৈনিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সাংবাদিকরা প্রতিদিন কলমের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। খেলার মাঠেও মাঝে মাঝে তাদের উপস্থিতি থাকে। সেটি হল বিভিন্ন খেলায় খেলোয়ারদের দক্ষতা আর সাফল্যের কথা তুলে ধরা। কিন্তু খেলার মাঠে গিয়ে নিজেরাই হাতে ব্যাট আর পায়ে বল নিয়ে দৌড়ানো দৃশ্যটি পরিচিত নয় কারো কাছে। তবে রবিবার সারাদিন জালাল স্টেডিয়ামে এই ব্যাতিক্রম দৃশ্যটিই ফুটে উঠেছিল আপন মহিমায় ভাস্মর হয়ে। শুধু তাই নয় মাঠ মাতিয়েছেন সাংবাদিকদের স্ত্রী ও সন্তানরাও।
শুধু ব্যাট আর বলের লড়াই নয়, ছিল নানান রকমের খেলা। আর এবার নতুন সংযোজন ছিল কণ্ঠের প্রতিযোগিতা। সঙ্গীত আর কবিতা আবৃত্তির ছন্দে সবাইকে বিমোহিত করে পুরস্কার ছিনিয়ে নেয়ার প্রতিযোগিতাটিও ছিল তীব্র প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ।
হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের উদ্যোগে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতি প্রতিযোগিতার আউটডোর ইভেন্টের দৃশ্য ছিল এটি।
তীব্র শীত আর কুয়াশার চাদরে ঢাকা সকাল। রোদ্রের উপস্থিতি যখন অনিশ্চিত তখন ঘড়ির কাটায় সাড়ে ৯টা বাজতেই জালাল স্টেডিয়ামে হাজির প্রেসক্লাব সদস্য ফয়সল চৌধুরী। মাঠে এসেই সে ফেইসবুক গ্রæপে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে সবাইকে আমন্ত্রণ জানায়। এর আগেই মাঠে মাইক লাগানো আর প্রস্তুতির কাজ শুরু করে প্রেসক্লাবের অফিসিয়াল নিশিকান্ত দাশ। ক্লাবের ক্রীড়া সম্পাদক আয়োজন এবং সদস্যদের আপ্যায়নের জন্য হাট বাজার করতে গিয়ে ব্যস্থতার শেষ নেই। সময়ের মাঝেই উপস্থিত ক্লাবের দুই বায়োজ্যেষ্ট সদস্য ফজলুর রহমান ও মোহাম্মদ নাহিজ। ক্লাব প্রেসিডেন্ট রাসেল চৌধুরী প্রথমে মাঠে না গেলেও পরবর্তী সময়ে ধারাভাষ্যসহ খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করেন। সেক্রেটারী রাশেদ আহমেদ খান গভীর রাতে ঢাকা থেকে ফেরায় কিছুটা বিলম্ভে মাঠে আগমন। শোকের মাঝেও পাবেল খান উপস্থিত হয়ে নিজের মনকে কিছুটা হলেও ভাল করার উপলক্ষ পেয়েছিলেন ওই দিন।
তারুণ্যে ভরপুর সদস্যরা ১১টার মাঝেই উপস্থিত হন মাঠে। এর আগেই ফুটবল ও ক্রিকেটের জন্য দুই সেট জার্সি নিয়ে হাজির হন বিপ্লবী ট্রেডার্স’র স্বত্বাধিকারী মিঠু রায় ও আয়েশা ফেব্রিক্স’র স্বত্বাধিকারী মোশাহিদ আলম। খেলা পরিচালনাকারী এনাম আহমেদ, রিপন মিয়া ও আল আমিন এস উভয় দলকে তাগিদ দেন খেলোয়াড় তালিকা প্রদান করার জন্য। লটারীর মাধ্যমে দুটি দলকে বিভক্ত করা হয়। লাল দলের দলের পক্ষে শাহ ফখরুজ্জামান যান টস করতে। সবুজ দলের পক্ষে টস করতে আসেন মোহাম্মদ নাহিজ। শাহ ফখরুজ্জামান টসে জয়লাভ করে সিদ্ধান্ত নেই ব্যাটিংয়ের। নির্ধারিত ১২ ওভারে লাল দল সংগ্রহ করে ১০৮ রান। নুরুল হক কবিরের অপরাজিত অর্ধশত ও নুর উদ্দিনের চমৎকার ব্যাটিংয়ে বিশাল সংগ্রহ করার পর প্রতিপক্ষ সবুজ দল নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে শত রানের কৌটা অতিক্রম করতে পারেনি।


ক্রিকেট শেষে লাল ও সবুজ দলের মাঝে শুরু হয় ফুটবল। মাত্রই বিশ্বকাপ শেষ হওয়ায় আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিল নাম নিয়ে শুরু হয় কথার লড়াই। মাইকের ধারাভাষ্যে প্রদীপ দাস সাগরের একচ্ছত্র আধিপত্য ভেঙ্গে দেন রাসেল চৌধুরী। ক্রিকেটে হারলেও ফুটবলে ২-০ গোলে জয়লাভ করে বাজিমাত করে সবুজ দল। দুই ঘন্টার তীব্র লড়াইয়ের পর সবাই যখন ক্লান্ত তখন ক্রীড়া সম্পাদক জাকারিয়া চৌধুরী নিয়ে আসেন বিরিয়ানী। সবাই তৃপ্তি সহকারে খেয়ে উদ্যাম ফিরে পান। এরই মাঝে মাঠে উপস্থিত হন ক্লাব সদস্যদের স্ত্রী ও সন্তানরা। পড়ন্ত বিকেলে শুরু হয় ক্লাব সদস্য, সদস্যদের স্ত্রী ও সন্তানদের বিভিন্ন ইভেন্ট। তীব্র প্রতিদ্বন্ধিতার মাঝে শেষ হয় একের পর এক ইভেন্ট। ক্লাবের সিনিয়র সদস্যদের দৌড়া প্রতিযোগিতায় সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকনের ভুপাতিত হওয়ার দৃশ্যটি ছিল উপভোগ্য। তবে সৌভাগ্য তার কোন ক্ষতি হয়নি।
মাঠে লড়াইয়ের তীব্রতা শেষ হওয়ার পূর্বেই সুরবিতান থেকে চলে আসে হারমোনিয়াম এবং তবলা। সঙ্গীতের বিচারক হিসাবে উপস্থিত হন সুরবিতানের সাধারন সম্পাদক আবুল ফজল, আবু মোতালেব লেবু ও সিদ্ধার্থ বিশ্বাস। কবিতা আবৃত্তির বিচারক হিসাবে উপস্থিত হন নাহিদা খান সুর্মি। ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গীত প্রতিযোগিতা ছিল অনেক মান সম্মত। কবিতা আবৃত্তিতেও ছিল ভাল প্রচেষ্টা। ক্লাব সদস্যদের সঙ্গীত ও কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্ধিতা কম থাকলেও অংশগ্রহণকারীদের স্বতস্পর্ততায় আনন্দ উপভোগ করেন সবাই।
মাঠের লড়াইয়ের পাশাপাশি মাইকে কথার লড়াই। ফেইসবুকে ছবি আর সেল্পির ছড়াছড়ি। শিশু থেকে শুরু করে সিনিয়রদের উপস্থিতি। সত্যিই অন্যরকম একটি দিন ছিল কলম সৈনিকদের। বিজয়ী হওয়ার ছেয়েও অংশগ্রহণই বড় কথা। এই চেতনার উপস্থিতিও ছিল এই আয়োজনে।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.