শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:১১ পূর্বাহ্ন

ঘুরে আসুন রেমা কালেঙ্গা

মোঃ আব্দুর রকিব

প্রাকৃতিক সৌর্ন্দযের অন্যতম ও বন্যপ্রাণীদের অভয়ারন্য রেমা-কালেঙ্গা । এটি হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় অবস্থিত। ১হাজার ৭শত ৯৫হেক্টর এলাকা জুড়ে রেমা কালেঙ্গা বিস্তৃত । ১৯৯৬ সালে রেমা কালেঙ্গাকে বন্যপ্রাণীদের অভয়ারণ্য ঘোষনাকরা হয় । এটি বেশ কয়েকটি পাহাড়টিলা নিয়ে  গঠিত। বন বিভাগের কালেঙ্গা রেঞ্জের চারটি বিটের ( কালেঙ্গা, রেমা, ছনবাড়ী আর রশিদপুর) মধ্যে রেমা, কালেঙ্গা আরছনবাড়ী বিস্তীর্ণ জঙ্গল নিয়ে রেমা কালেঙ্গা বন্যপ্রানী অভয়ারণ্য গঠিত। রেমা কালেঙ্গার পাহাড় গুলোর সর্বোচ্চ উচ্চতা সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬৭ মিটার। এটি বাংলাদেশের প্রাকৃতিক বনগুলোর অন্যতম ।

রেমা কালেঙ্গা বন্যপ্রানীদের অভয়ারণ্য বিরল প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রানীতে সমৃদ্ধ । এখানে রয়েছে ৬৩৮ প্রজাতির গাছ, ১৬৭ প্রজাতির পাখী ,৭ প্রজাতির উভচর ,১৮ প্রজাতির সরীসৃপ ,৩৭ প্রজাতির ¯থন্যপায়ী ।পাখীর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হল,টিয়া,পাতি ময়না ,ভীমরাজ,লালমাখাকুচকুচি,সিপাহীবুলবুল,রাজধনেশ, ঈগল, মাছরাঙ্গা, চিল, প্যাচা ,লালবন মোরগ, শকুন, কালোমাথুয়া।

তিন প্রজাতির বানরের মধ্যে রয়েছে ,নিশাচর লজ্জাবতি বানর, লালবানর, উল্টোলে জিবানর ।পাঁ চপ্রজাতির কাঠবিড়ালীর মধ্যে মায়লান বড় কাঠবিড়ালি এক মাত্র এবনেই পাওয়া যায়।আঠারো প্রজাতির সাপের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলোদদুধরাজ,দাঁড়াশ,লাউডগা,শঙ্খচুড়।এছাড়া রেমা কালেঙ্গাকে শকুনের জন্য নিরাপদ এলাকা ঘোষনা করা হয়েছে। রেমা কালেঙ্গাতে অভয়ারণ্যে ঘুরতে ৩০মিনিট, ১ঘন্টা, ৩ঘন্টার ৩টি ট্রেইলরয়েছে। আধাঘন্টা, ১ঘন্টা ও ৩ঘন্টার ট্রেইলেআপনি রেমা কালেঙ্গার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও বন্য প্রানী দেখতে পাবেন।অভয়ারণ্যের ভিতর আছে সুউচ্চ পর্যবেক্ষন টাওয়ার। টাওয়ারে উঠে আপনি বনের সৌন্দর্য, দুর দুরান্তের দৃশ্যা বলী অবলোকন করতে পারবেন। টাওয়ারের পাশেই রয়েছে একটি দৃষ্ঠিনন্দন আঁকাবাঁকা লেক।

বাংলাদেশের আদিবাসীদের জীবনধারা আপনি দেখতে পারবেন এ বনেরভিতর। রেমা কালেঙ্গা বনের ভিতরে রয়েছে ৪টি আদিবাসী সম্প্রদায়ের বসবাস। ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের কয়েকটি পাড়া রয়েছে এ বনের ভিতর।এছাড়া এবনেরয়েছে তেলুগু, উড়ং ও সাঁওতাল আদিবাসীসম্প্রদায়েরবসবাস। রেমা কালেঙ্গা বনের ভিতরে বিজিবি ক্যাম্প ফেলে কিছু দুর সামনে এগুলেইপাওয়াযাবেমহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ নায়ক আব্দুল মান্নান বীরউত্তমের কবর। ৩ নম্বর সেক্টরের এই যোদ্ধা ১৯৭১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর পাক হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখযোদ্ধে এখানেই শহীদ হন। তার কবরের পাশের বিশাল সেগুন গাছের শরীরে এখনো দেখা মেলে পাক হানাদারদের সেদিনের গুলিরচিহ্ন।

রেমা কালেঙ্গাতে আপনি ইচ্ছা করলে রাত্রি যাপন করতে পারেন। সেখানে রয়েছে বন বিভাগের ডাক বাংলো, এছাড়া রয়েছে ৩টি বেসরকারী রিসোর্ট , নিসর্গ তরফহিল ইকোরিসোর্ট, সি এম সিরিসোর্ট, রেমা কালেঙ্গা ইকো কটেজ। রেমা কালেঙ্গা ইকো কটেজ বিডিয়ার ক্যাম্পের পাশে  রয়েছে, সেখানে রয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্তা। এই রির্সোট গুলোতে আপনি রাতে অবস্থান করে ঝিঁঝি পোকার ও পাহাড়ী পশু পাখী লডাক শুনতে পাবেন, আর চাঁদনি রাত হলে বনের মনোরম দৃশ্য অবলো কন করতে পারবেন। এখানে থাকার জন্য ৭০০ থেকে ১২০০ টাকা ভাড়া রয়েছে। ১২০০ টাকায় দুই থেকে তিন জন একত্রে থাকতে পারবে। খাবারের জন্য আপনি কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে আপনার চাহিদা মত খাবার খেতে পারবেন। তবেটাকা গুণতে হবেএকটু বেশি।

মোঃআব্দুররকিব

শায়েস্তাগঞ্জ,

০১৭১২৫৩৯৮৩৩

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.