শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০১:৫৬ অপরাহ্ন

চাঁদপুর বৃষ্টিতে আলু জমির ব্যাপক ক্ষতি

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ  অসময়ের টানা বৃষ্টিতে অধিকাংশ ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে আলু চাষিদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। আলু অতি লাভজনক হওয়ার কারণে এবছর অনেকেই আলু চাষের দিকে ঝুঁকেছে। কিন্তু গত তিন দিনের অনাবৃষ্টিতে আলুর ফসলি মাঠে পানি জমে গেছে। ফলে যেসব জমিতে পানি জমেছে ঐ সব জমির আলু হবে না। আলুর উৎপাদন কিছুটা হলেও দ্রুত পচন ধরবে বলে মনে করছেন চাষিরা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ উপজেলার কৃষকরা মাত্র চাষ শুরু করেছিলেন। তবে এই সময় ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের ফলে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়ে হঠাৎ টানা বৃষ্টিতে মতলব দক্ষিণে আলু চাষে ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকেরা।জানা যায়, দেশের অন্যতম আলু উৎপাদনকারী অঞ্চল চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর ও দক্ষিণ, হাজীগঞ্জ, কচুয়া এবং চাঁদপুর সদরের বিস্তীর্ণ জমিতে আলুর চাষ হয়ে থাকে। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদে নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ার কারণে জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা। সবেমাত্র আলুবীজ রোপণ করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের ফলে নিম্নচাপের টানা বৃষ্টিতে আলুবীজ বৃষ্টির পানিতে ডুবে এখন পচনের মুখে। এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা।

নওগাঁও গ্রামের কৃষক জহির শেখ জানান, আমি সবেমাত্র এক একর জমিতে আলুবীজ রোপণ করেছি। আরো পাঁচ একর জমিতে আলুবীজ রোপন করব। এর মাঝেই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে নিম্নচাপে সৃষ্টি হয়ে স জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। আলুবীজ বৃষ্টির পানিতে ডুবে এখন পচনের মুখে। আলুর বীজ পচে নষ্ট হয়ে গেলে চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হবে আমাকে।কৃষক রমিজ মিয়া জানান, সকল কৃষক জমিতে সার এবং কীটনাশক দিয়ে আলুবীজ রোপণের জন্য প্রস্তুত করে রাখে, বৃষ্টির কারণে প্রস্তুতকৃত জমি নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতির মুখে পড়ে সকল কৃষক।

আজাদ রহমান জানান, ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। মাঠ ফসলি জমি এখন পানির নিচে রয়েছে। এর মধ্যে যেসব ফসল এখনই ঘরে তোলার সময় হয়েছে সেইসব ফলও ক্ষতির মধ্যে পড়েছে। ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে কৃষকদেরকে।

সার ও বীজের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে লাভের পরিমাণ আগের মতো নেই। তারপরও কৃষি বিভাগ কিছু অনুদান দিয়ে সার ও বিজ দিয়ে এ বছর সহযোগীতা করেছে। এতে কৃষকদের উপকার হয়েছে। কিন্তু যে আশা নিয়ে বীজ বপণ করেছে তা যেন জলেই ভেগে যাচ্ছে। অসময়ের এই বৃষ্টিতে শীতকালীন সব ধরনের সবজিরই ক্ষতি হবে বলে মনে করছেন কৃষকরা।

চাঁদপুর সদর উপজেলার হানারচর ইউপির মোক্তার হোসেন বলেন, এই বছর অনেক আশা নিয়া আলু ক্ষেত করলাম। কিন্তু বৃষ্টির কারণে আলু একদম শেষ। এই ক্ষতি কেমনে পুষিয়ে উঠবো তা ভাবতে পারছি না।

অনাবৃষ্টির কারণে শুধু আলু নয়, শীতকালীন সব ধরনের শাকসবজিরই ক্ষতি হবে। এতে এ মওসুমে সব ধরনের শাক সবজির দাম আকাশচুম্বি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন অনাকাঙ্খিত ক্ষতি পুষিয়ে উঠার জন্য চাঁদপুরের কৃষি বিভাগকে এগিয়ে আসার জন্য আহবান জানিয়েছেন কৃষকরা।

চাঁদপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার এর অফিসার ইনচার্জ শাহ মুহাম্মদ শােয়েব জানায়, আজকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ৩৩ ঘন্টার মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৭৬ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে। আগামি ৭২ ঘণ্টায় আবহাওয়া ক্রমান্বয়ে উন্নতি হতে পারে।

চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. জালাল উদ্দিন জানান, আমরা কৃষকদের সরকারিভাবে সার ও বীজ প্রদান করেছি। তবে অসময়ের বৃষ্টি ফসলের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.