বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫১ অপরাহ্ন

চুনারুঘাটে খোয়াই নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চুনারুঘাটে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গত ১ বছরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ২৫ মামলা দায়ের করেছে প্রশাসন। যেখানে অর্থদন্ড প্রাপ্ত ব্যক্তি ২৫ জন এবং কারাদন্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি ১৩ জন। অর্থদন্ড দেয়া মামলাগুলো থেকে জরিমানা আদায় হয়েছে ১০ লাখ ৬০ হাজার টাকা। গত এক বছরে চার তৃতীয়াংশ সময় ছিল করোনা আতঙ্ক। এর মাঝেও মাটি ও বালুখেকোরা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খোয়াই নদী ক্ষত-বিক্ষত করে দুইপাড়ের বাঁধ সংলংগ্ন এলাকায় প্রভাবশালী মহল প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুম এলে বালুর নাম করে মাটি পাচার করে আসছিল। কিন্তু থেমে ছিলেন না উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিদ্ধার্থ ভৌমিক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিল্টন চন্দ্র পাল। জনকল্যাণে রাত দিন মাঠে থেকেছেন তারা। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানের পাশাপাশি করোনা আক্রান্তদের খোঁজখবর নেওয়া, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ, মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিতকরণ-সহ বহুবিধ জনকল্যাণমূলক কর্মকান্ডে নিজেদেরকে নিয়োজিত রেখেছেন তারা। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে গত ২০২০ সালের ১ জানুয়ারী হতে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ২৫ মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরকে বিভিন্ন ধারায় জরিমানা করে মামলা দেয়া হয়। যতগুলো ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে তার মধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিদ্ধার্থ ভৌমিক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৬টি মামলায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড ও ৬ আসামীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করেন এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিল্টন চন্দ্র পাল ৭ লাখ ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও ৭ জনকে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের চলমান অভিযানে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিল্টন চন্দ্র পাল বাগবাড়ি এলাকার নদী তীরবর্তী স্থান হতে অনুমতিবিহীন ভাবে মাটি কর্তন করায় খালেক মিয়া (২৩) নামের এক ব্যক্তিকে মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড আরোপ করেন। খালেক ওই এলাকার আব্দুর রহমানের পুত্র। এ তথ্য নিশ্চিত করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মিল্টন চন্দ্র পাল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, খোয়াই নদীর প্রতিরক্ষা বাধের বিভিন্ন স্থান বর্ষা মৌসুমে ভেঙ্গেঁ যেতে পারে। এতে কয়েকটি ইউনিয়নের হাজার হাজার একর ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। সরেজমিন দেখা গেছে রাত দিন অবিরাম ট্রাক্টর লাইন ধরে নদীর বাধ কেটে রাস্তা করে প্রতিরক্ষা বাধের ভেতর থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। কোথাও ডোবা কোথাও গভীর পুকুর ও কোথাও খাল খনন করা হয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়েছে নদী যেন তার গতিপথ হারিয়ে ফেলেছে। ভারত থেকে প্রবাহিত খোয়াই নদী চুনারুঘাট হয়ে হবিগঞ্জের কালনী নদীর মোহনায় নিমজ্জিত হয়েছে। যখন বর্ষায় ভারত থেকে আসা পানি খোয়াই নদীর গর্ভে পড়ে প্রতিরক্ষা বাধ ভাঙ্গনে হুমকি হয়ে দাড়ায় প্রতিরক্ষা বাধের দুর্বল স্থানগুলো। পাথর সিমেন্ট দিয়ে তৈরী ব্লক ও বালি বোঝাই ব্যাগ ফেলে রক্ষা করা হয়। অথচ শুষ্ক মৌসুমে নদীর প্রতিরক্ষা বাধ কেটে মাটি নেয়ার উৎসব শুরু হয়। এ বিষয়ে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, অবৈধভাবে যারা বালু ও মাটি উত্তোল করছে তাদের তথ্য সংগ্রহ করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এ চক্রে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না এবং প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.