শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৩৮ অপরাহ্ন

খবরের শিরোনাম:
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য কেন শোনানো হয়নি তার জন্য তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন এমপি চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার আহবান তরুণদের প্রতি-এমপি আবু জাহির দুর্নীতিমুক্ত জেলা পরিষদ গঠনের ঘোষণা দিলেন আলেয়া আক্তার ওয়ারিশান ও এসএ খতিয়ান জ্বালিয়াতি বিরুদ্ধে চার্জশীট প্রদান করল পিবিআই দুর্ঘটনা কবলিত পিকআপ উদ্ধারের সময় বাস চাপায় নিহত ২ হবিগঞ্জে সড়কের পাশ থেকে তরুণীর মরদেহ উদ্ধার ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রভাব মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপার ঘটনায় নবদম্পতিসহ একই পরিবারের ৬ জন নিহত বানিয়াচংয়ে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত নবীগঞ্জে প্রথমবারের মতো লটারির মাধ্যমে কৃষকের তালিকা করা হলো

চোখের জলে সহপাঠীকে শেষ বিদায়

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাকচাপায় নিহত শিক্ষার্থী মাহমুদ হাবিব ওরফে হিমেলকে ক্যাম্পাস থেকে বিদায় দিয়েছেন তাঁর সহপাঠী, বন্ধু, শিক্ষক ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা।

আজ বুধবার বেলা পৌনে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে তাঁর জানাজা হয়। এরপর বেলা ১১টার দিকে তাঁর মরদেহ নিয়ে নাটোরের উদ্দেশে রওনা হন মা ও মামা। সঙ্গে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, ছাত্র উপদেষ্টাসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ৮টি বাসে করে শিক্ষার্থীরা।

সকাল সাড়ে নয়টার দিকে মাহমুদের মরদেহ প্রথমে চারুকলা অনুষদে আনা হয়। সেখানে কিছুক্ষণ রাখার পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার মুক্তমঞ্চে নেওয়া হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সহপাঠীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোট, রক্তদাতাদের সংগঠন ‘বাঁধন’, রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ড্রামা অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সংগঠন তাঁর মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। এ সময় পাঁচ শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ট্রাকচাপায় শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাবি প্রশাসন। বুধবার হিমেলের জানাজার আগে উপাচার্য তার বক্তব্যে এ কথা জানান। তবে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবির মধ্যে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে একমত হতে পারেনি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীরা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া ও অধ্যাপক মো. সুলতান উল-ইসলাম ও নিহত হিমেলের মামা মো. মুন্না।

হিমেলের মামা মো. মুন্না বলেন, আমার বোন আগে স্বামী হারা ছিল। এখন পুত্রহারাও হলো। আমি চাই না বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে আর কোনো মায়ের কোল খালি হোক। শিক্ষার্থীদের যে দাবি প্রশাসন মেনে নিয়েছে তা যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করে।

উপচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, বাবার কাঁধে সন্তানের লাশ যে কত ভারী তা আমি বুঝি। আজ আমার লাশ হিমেলের কাঁধে থাকার কথা ছিল। সব সময় হিমেলের পরিবারের পাশে থাকব। ইতোমধ্যে হিমেলের মায়ের অ্যাকাউন্টে পাঁচ লাখ টাকা হস্তান্তর করা হয়েছে। ধাপে ধাপে আরও সহযোগিতা করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

এদিকে হিমেলের পরিবারকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ কোটি টাকা ক্ষতি পূরণ দেওয়ার পাশাপাশি মৃত্যুর ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বিচার দাবি করেছেন সহপাঠীরা। তবে উপাচার্য তার ক্ষমতাবলে এককালীন ৫ লাখ টাকা ও পরিবারকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতার কথা বললেও শিক্ষার্থীরা তাতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা কোনো ধরনের আশ্বাসে ভরসা করতে পারছেন না। গ্রামের বাড়িতে হিমেলে দাফন শেষে বিকেলে ক্যাম্পাসে উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে তাদের।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে ট্রাকচাপায় শিক্ষার্থী হিমেলের মৃত্যুতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ ও ৬টি ট্রাকে আগুন দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

উপাচার্য জানান, শিক্ষর্থীদের সব দাবি মেনে নেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে নির্মাণ সামগ্রী আনা নেয়ার জন্য আলাদা রাস্তা ব্যবহার করা হবে। যা শুধু রাত ১২টার পর থেকে খোলা থাকবে।

এছাড়া ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. লিয়াকত আলীকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন উপাচার্য।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.