বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১০ অপরাহ্ন

দেশে নতুন দরিদ্র সোয়া ৩ কোটি ছাড়ালো

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এরপর থেকে এই মহামারি এখনো সংক্রমণ করেই যাচ্ছে। তবে বাংলাদেশ এই মহামারিকে শঙ্কভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু এই মহামারিকালে বহু মানুষ কর্ম হারিয়েছেন, রুটি-রুজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।এর প্রভাবে দেশে নতুন করে ৩ কোটি ২৪ লাখ মানুষ দরিদ্র হয়েছেন। করোনাকালে অভাব-অনটনে পড়ে বহু মানুষ রাজধানীসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহর ছেড়ে গ্রামে চলে গেছেন।

বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) ‘জীবিকা, খাপ খাইয়ে নেওয়া ও উত্তরণে কোভিড-১৯ এর প্রভাব’ শীর্ষক ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) এবং পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) যৌথ জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।

সংস্থা দুটি বলছে, চলতি বছরের মার্চ মাসে নতুন দরিদ্রের সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৪৫ লাখ। গত ৬ মাসে ৭৯ লাখ মানুষ দরিদ্র হয়েছেন। এ বছর এপ্রিল মাস থেকে দেওয়া লকডাউনের পর এই সংখ্যা বেড়েছে।

করোনাকালে মানুষের জীবন ও জীবিকার ওপর প্রভাব নিয়ে চার দফায় জরিপ করে সংস্থাটি দুটি। গত বছরের এপ্রিল মাসে প্রথম দফায় জরিপ করে তারা। পরে ওই বছরের জুন মাসে দ্বিতীয় দফায়, চলতি বছরের জুন মাসে তৃতীয় দফায় এবং সর্বশেষ গত ২১ আগস্ট থেকে ৮ সেপ্টেম্ববর পর্যন্ত জরিপ চালায় তারা। বিআইজিডি-পিপিআরসির এই জরিপে ৪ হাজার ৮৭২টি পরিবার। এর মধ্যে শহরের ৫৪ শতাংশ, গ্রামের ৪৫ শতাংশ এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় এক শতাংশ পরিবার ছিল।

জরিপ প্রতিবেদনে সংস্থা দুটি জানিয়েছে, করোনাকালে দারিদ্র্যের কারণে দেশের ২৮ শতাংশ মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যায়। সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, এদের মধ্যে ১৮ শতাংশ মানুষ শহরে আবার ফিরে এসেছে। অর্থাৎ ১০ শতাংশ মানুষ এখনো শহরে ফিরতে পারেনি।

জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, মানুষের খাদ্যের ক্ষেত্রে ব্যয় করোনাকালে তুলনামূলক কমে গেছে। শহরে দরিদ্র মানুষের মাথাপিছু ব্যয় ছিল ৬৫ টাকা। এখন তা ৫৪ টাকা। গ্রামে ব্যয় ছিল ৬০ টাকা, এখন ৫৩ টাকা। শুধু খাদ্য নয়, বাড়িভাড়া, চিকিৎসার ব্যয় শিক্ষা ও যোগাযোগ খাতে দরিদ্র মানুষের ব্যয়ও বেড়েছে। এ বছরের মার্চ মাসে শহরের বস্তিতে এ ব্যয় ছিল ৯৩৬ টাকা। গ্রামে এ সংক্রান্ত ব্যয় ৬৪৭ টাকা থেকে বেড়ে হয় ৭৭৭ টাকা। বাড়তি এসব ব্যয় মেটাতে শহরের দরিদ্র এবং গ্রামের মানুষদের ধার করতে হয়েছে। গ্রাম ও শহর- দুই জায়গার দরিদ্র মানুষ দোকানিদের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি ধার করেছেন। গ্রামে এই হার ৬২ শতাংশ, শহরে ৬০ শতাংশ। দৈনন্দিন চলার জন্যই সবচেয়ে বেশি ঋণ নেওয়া হয়েছে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর বলেন, সবচেয়ে বেশি বিপর্যয়ে শহুরে মানুষ। দারিদ্র্য বিমোচনের প্রচলিত প্রচেষ্টায় বা সামাজিক সুরক্ষার চলমান ধারায় এ দারিদ্র্য থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে এ নিয়ে নতুন চিন্তা দরকার বলে মনে করেন তিনি

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.