শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৩১ পূর্বাহ্ন

খবরের শিরোনাম:
মৌলভীবাজারে অভিযান চালিয়ে ১৩ জুয়ারি আটক সারাদেশে ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য কেন শোনানো হয়নি তার জন্য তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন এমপি চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার আহবান তরুণদের প্রতি-এমপি আবু জাহির দুর্নীতিমুক্ত জেলা পরিষদ গঠনের ঘোষণা দিলেন আলেয়া আক্তার ওয়ারিশান ও এসএ খতিয়ান জ্বালিয়াতি বিরুদ্ধে চার্জশীট প্রদান করল পিবিআই দুর্ঘটনা কবলিত পিকআপ উদ্ধারের সময় বাস চাপায় নিহত ২ হবিগঞ্জে সড়কের পাশ থেকে তরুণীর মরদেহ উদ্ধার ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রভাব মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপার ঘটনায় নবদম্পতিসহ একই পরিবারের ৬ জন নিহত

নবীগঞ্জের বিজনা নদীতে পলো বাওয়া উৎসব, মানুষের ঢল

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥পলো বাওয়া উৎসব শত বছরের পুরনো ঐতিহ্য। আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাওয়া গ্রামবাংলার পুরো সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে নবীগঞ্জ উপজেলার বিজনা নদীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে পলো বাওয়া উৎসব। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে চলে প্রস্তুতি। উৎসবে যোগ দিতে দূর দুরান্ত থেকে আসেন শিকারীরা।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের বিজনা নদীতে একসঙ্গে পলো নিয়ে নদীর পানিতে ঝাঁপ দিয়ে পলো বাওয়া উৎসব করেন মাছশিকারীরা।
জানা যায়- প্রাচীনকাল থেকে পৌষ-মাঘ মাসে বিল বা উন্মুক্ত হাওরে দল বেঁধে মাছ শিকার করা হতো। যাকে বলা হয় পলো বাইছ বা পলো উৎসব। জলাশয় শুকিয়ে যাওয়ায় এবং কালের পরিক্রমায় এখন সেই পলো উৎসব হারিয়ে গেছে। গ্রাম বাংলা প্রাচীন সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে মঙ্গলবার হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের বনগাঁও, লামরোহ, গজনাইপুর, কান্দিগাঁও, রুদ্রগ্রাম নিয়ে গঠিত পাঁচ মৌজার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় পলো বাওয়া উৎসব। এতে গজনাইপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন-গ্রাম, আউশকান্দি ইউনিয়নের আউশকান্দি গ্রামসহ পাশ্ববর্তী বাহুবল, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুর ও কাগাবালা এলাকা থেকে আগত নানা বয়সের কয়েক শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় তাদের হৈ-হুল্লোড়ে অন্যরকম আমেজ সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ দুই ঘণ্টা মাছ ধরা শেষে একে একে উঠে আসেন তারা। সবার হাতে ছিল নানা ধরনের দেশীয় মাছ। কারো হাতে ছিল বড় বোয়াল, কারো হাতে ছিল কাতলা, শোল, গজার কিংবা রুই মাছ। আর জাল দিয়ে ছোটরা শিকার করেন টেংরা-পুঁটিসহ ছোট মাছ।
বাহুবল উপজেলা থেকে আসা আকবর মিয়া বলেন- ছোটবেলায় দেখতাম অনেক বড় করে এই পলো উৎসব অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু এখন আর আগের মতো হয় না, আর মাছও পাওয়া যায় না। তবুও পলো উৎসবের কথা শুনে এতেদূর থেকে এসেছি মাছও পেয়েছি।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কাগাবালা গ্রামের মিজান মিয়া বলেন- পলো উৎসবে মাছ ধরাটা মুখ্য নয়। হাজার হাজার মানুষের সাথে মাছ ধরা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পেরে খুব ভালো লাগছে।
বনগাঁও গ্রামে সৈয়দ মিছবা উজ্জামান বলেন, আমাদের পাঁচ মৌজার পক্ষ থেকে পলো বাইছ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে, অনেক ভালো লাগছে, এই উৎসবে শত-শত মানুষ বিভিন্নস্থান থেকে অংশ নিয়েছেন। আশা করছি প্রতিবছর এমন পলো বাওয়া উৎসব আয়োজন করা হবে।
দিনারপুর কলেজের প্রভাষক মোশারফ আলী বলেন- একটা সময় শুষ্ক মৌসুমে হাওর ও বিলের পানি শুকিয়ে আসতো। গ্রামের মানুষ তখন দল বেঁধে পলো ও ঠেলা জাল দিয়ে মাছ ধরার উৎসবে মেতে ওঠেন। গ্রাম-বাংলার প্রাচীন এই সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে পলো বাওয়া উৎসবের এমন আয়োজন সত্যি প্রশংসনীয়।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.