শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৯ পূর্বাহ্ন

খবরের শিরোনাম:
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য কেন শোনানো হয়নি তার জন্য তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন এমপি চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার আহবান তরুণদের প্রতি-এমপি আবু জাহির দুর্নীতিমুক্ত জেলা পরিষদ গঠনের ঘোষণা দিলেন আলেয়া আক্তার ওয়ারিশান ও এসএ খতিয়ান জ্বালিয়াতি বিরুদ্ধে চার্জশীট প্রদান করল পিবিআই দুর্ঘটনা কবলিত পিকআপ উদ্ধারের সময় বাস চাপায় নিহত ২ হবিগঞ্জে সড়কের পাশ থেকে তরুণীর মরদেহ উদ্ধার ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রভাব মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপার ঘটনায় নবদম্পতিসহ একই পরিবারের ৬ জন নিহত বানিয়াচংয়ে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত নবীগঞ্জে প্রথমবারের মতো লটারির মাধ্যমে কৃষকের তালিকা করা হলো

নবীগঞ্জে কুল বড়ই চাষে কপাল খুলেছে কৃষকদের

সাগর আহমেদ নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ আবহাওয়া অনুকূল থাকায় নবীগঞ্জে এবার কুলের বাম্পার ফলন হয়েছে। সেই সাথে ভালো দাম পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন চাষীরা। কুল চাষে এবার কপাল খুলেছে কৃষকদের। কুল বড়ই সাধারণত উঁচু এবং উষ্ণতম অঞ্চলে ফলন ভালো হয়। যদিও উপজেলায় আগে আপেল কুল ও বাউ কুলের চাষ হলেও এখন নতুন জাত কাশ্মীরি আপেল কুলের চাষ বেড়েছে। প্রচলিত আপেল কুল ও বাউ কুলের চেয়ে আকারে বেশ বড় এই কাশ্মীরি আপেল কুল। নতুন এ জাতের কুল চাষ করে সফল হয়েছেন অনেকেই। সেজন্য আপেল কুল বা বাউকুলের পরিবর্তে উপজেলায় বাড়ছে কাশ্মিরী কুল ও বল সুন্দরী কুলের চাষ। কাশ্মিরী বা বল সুন্দরী কুল আকারে বড়, অধিক মিষ্টি, রসালো, পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং ফলনও হয় বেশ ভালো। তাই কৃষকরা এই কুল বড়ই উৎপাদনের দিকে ঝুঁকছেন বেশি।
উপজেলার দিঘলবাক ইউনিয়নের কুল চাষি নজরুল ইসলাম বলেন, পেয়ারা চাষে একবারই ভালো ফলন হয় না কিন্তু কাশ্মিরী কুল চাষে কয়েকবার ফলন পাওয়া যায়। সহজেই পরিচর্যা করা যায়। উৎপাদন খরচও কম আবার তেমন পোকার উপদ্রব নেই। ফলনও বেশি, খেতেও সুস্বাদু।কুল চাষী মুজিবুর রহমানের কুল বাগানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নতুন জাতের এই কুলের গাছে থোকায় থোকায় কাশ্মীরি আপেল কুলে বাগান ভরে গেছে। ফলের ভারে গাছগুলি মাটিতে নুইয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে বাগানে কুল তোলা ও বাজারজাতকরণে ব্যাস্ত সময় পার করছেন তিনি।
আরেক কুল চাষী নুরউদ্দিন মিয়া বলেন, চার বন্ধু মিলে ৭ বিঘা জমিতে কুলের চাষ করেছি। থোকায় থোকায় বল সুন্দরী কাশ্মীরি আপেল কুল ধরেছে। প্রতি গাছে প্রায় ১০ থেকে ১৫ কেজি করে কুল বড়ই পাওয়া যাবে। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ৬-৭ লাখ টাকা। তবে বর্তমান বাজার দর হিসাবে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে কুল বিক্রি হচ্ছে। এতে প্রায় ৯-১০ লাখ টাকার কুল বিক্রি করা সম্ভব। অল্প খরচে অধিক লাভজনক হওয়াই কুল চাষে ঝুঁকেছেন তরুণ উদ্যোক্তারা।
তেমনি এক কৃষি উদ্যোক্তারা নুরুল আমিন বলেন, আমার একটি কামার রয়েছে যেখানে বিভিন্ন প্রজাতির হাঁস, মুরুগি, গরু, ছাগল, কয়েক রকমের পাখি রয়েছে, আমার পাশের গ্রামে মুজিবুর রহমান চাচার এই কুল বাগান এসে আমার মনে হলো আমি যে গুলো করতেছি তার পাশাপাশি যদি এই কুল চাষ করতে পারি তা হলো তো আরো বেশি লাভবান হওয়া যাবে। যেহেতু কুল চাষে সল্প খরচে অধিক মুনাফা পাওয়া যান। ইনশাআল্লাহ আমিও কুল চাষ শুরু করব, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী।
নবীগঞ্জে এবার উপজেলার দিঘলবাক ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি স্থানে কুল বড়ই বাগান গড়ে উঠেছে। সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন পাইকারি আড়তগুলোতে পৌঁছে যাচ্ছে নবীগঞ্জের সুস্বাদু এই কুল বড়ই। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা পাইকারি দরে কিনে ট্রাকে বোঝাই করে নিয়ে যান এই কুল। নবীগঞ্জের এই কুল প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪-৫ লাখ টাকার কেনাবেচা হয়। নবীগঞ্জ কৃষি সম্পসারণ অধিদফতর কর্মকর্তা মাকসুদুল আলমের তথ্য মতে, উঁচু এবং উষ্ণতম অঞ্চল গুলোতে কুল চাষ ভালো হয়। সে দিক থেকে নবীগঞ্জে ভালো কুল চাষ হয়ে থাকে। গত বছরের তুলনায় এবার কুলের ভালো ফলন হয়েছে। তাছাড়া খরচ কম হওয়ায় অন্যান্য বাগানের তুলনায় কুল বাগানের সংখ্যাও বাড়ছে। ভালো মানের কুল উৎপাদনে চাষিদের প্রশিক্ষণ এবং সঠিক পরামর্শ দেয়া হয়েছে। যার কারণে কুল চাষে আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বেশ কয়েক জাতের আপেল ও বল সুন্দরী কুলের বাম্পার ফলন হয়েছে। চলতি বছর বেড়েছে কুল আবাদের পরিমাণও।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.