বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:০৪ অপরাহ্ন

খবরের শিরোনাম:
হবিগঞ্জে সড়কের পাশ থেকে তরুণীর মরদেহ উদ্ধার ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রভাব মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপার ঘটনায় নবদম্পতিসহ একই পরিবারের ৬ জন নিহত বানিয়াচংয়ে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত নবীগঞ্জে প্রথমবারের মতো লটারির মাধ্যমে কৃষকের তালিকা করা হলো স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও হয়নি ব্রিজ, ভোগান্তিতে ১০ গ্রামের মানুষ নবীগঞ্জে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত মাধবপুরে গরু চুরির মামলায় বিএনপি নেতা কারাগারে হবিগঞ্জে অভিযান চালিয়ে তক্ষক উদ্ধার দেশে ফিরলেন এমপি আবু জাহির ও হবিগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলেয়া আক্তার

ফরিদপুর মহাসড়কের পাশেই নজরকাড়া সূর্যমুখী ফুলের হলুদ আঙ্গিনা

ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুর শহরের খুব নিকটেই ডোমরাকান্দি গ্রাম। পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশেই নজরকাড়া সূর্যমুখী ফুলের হলুদ আঙ্গিনা। সবুজ পাতা আর হলুদ রঙের ফুল। এই সূর্যমুখীর ক্ষেত দেখে পাশ দিয়ে ছুটে চলা যে কেউ আন্দোলিত হবেন এটাই স্বাভাবিক। শীতের কুয়াশা ভেদ করে সূর্য উঁকি দিতেই আড়মোড়া ভেঙে এই সূর্যমুখী ফুলের জেগে উঠা। আর সেই হলুদ ফুলেল হাসিতে নিজেদের বৈকালীন সময় কাটাতে প্রকৃতি প্রেমীদের এখানে ছুটে আসা।

সূর্যের দিকেই হাজারো ফুলের মুখিয়ে থাকার এমন নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে নিজেকে ক্যামেরা বন্দী করার লোভ সামলানো দায়। ফরিদপুরের সদর উপজেলার গঙ্গাবর্দী এলাকায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) খামারে কয়েক বছরের মতো এবারও চাষ করা হয়েছে সূর্যমুখীর।

ভোর হলেই সোনা রোদে চোখ মেলে ঝলমলে সূর্যমুখী ফুল। দিগন্ত বিস্তৃৃত ক্ষেতে সূর্যমুখীর চাষ। নীল আকাশের সঙ্গে হলুদ ফুলগুলোর মায়াবি রূপ যে কারো মনকে নাড়া দিতে বাধ্য। বাগানে প্রতিদিন বসে প্রজাপতি আর মৌমাছির মেলা। নয়ন জুড়ানো এ দৃশ্য মোহিত করছে প্রকৃতি প্রেমী মানুষদের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরিদপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সূর্যমুখী ফুল চাষ। স্বল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এর চাষ। এ খামারের বিশাল এলাকাজুড়ে রোপণ করা হয়েছে কয়েক হাজার সূর্যমুখী ফুলের বীজ। বর্তমানে বীজ থেকে প্রতিটি গাছে ফুল ফুটেছে। যা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে প্রকৃতিপ্রেমীরা ছুটে আসছেন এখানে। দুপুরের পর থেকেই সূর্যমুখী বাগানে নানা বয়সি মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয়। সূর্যমুখী ফুলের এ বাগানটি এখন সৌন্দর্যপ্রেমীদের কাছে দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ফরিদপুর অফিস সুত্রে জানা গেছে, বিগত কয়েক বছর আগে তারা পরীক্ষামূলকভাবে সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদ শুরু করে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) তত্ত্বাবধায়নে ফরিদপুরের এই সূর্যমুখী বাগান করা হয়। শুধু বীজ সংগ্রহের জন্যই প্রায় একযুগ ধরে এখানে চাষ হচ্ছে সূর্যমুখীর। ফরিদপুরের বিএডিসির এ বাগানে প্রায় ৪ একর জমিতে এবার সূর্যমুখী ফুলের আবাদ করা হয়েছে। যা থেকে ৪৫ থেকে ৫০ মণের মতো বীজ উৎপন্নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সুর্যমুখীর বীজ বিএডিসির মাধ্যমে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। সূর্যমুখী ফুলের এ বাগানে সকাল থেকেই দেখা যায় মানুষের আনাগোনা। প্রতিদিনই এই হলুদ হাতছানিতে শামিল হয় শত শত তরুণ-তরুণী।

ফরিদপুর শহরের বাসিন্দা কামরুজ্জামান হীরা পরিবার পরিজন নিয়ে বাগান দেখতে এসেছেন। তিনি বলেন, সূর্যমুখী ফুলের বাগান ঘুরে দেখলাম। পরিবারের সাথে ছবি তুললাম। বেশ ভালো লাগলো। এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য অবলোকনে শুধু প্রকৃতিপ্রেমীই নয় বরং যে কারো হৃদয় কাড়বে। তবে সূর্যমুখী ফুল চাষের লক্ষ্য নিছক বিনোদন নয়। মূলত ভোজ্যতেল উৎপাদনের মাধ্যমে খাদ্য চাহিদা মেটাতে এ ফুলের চাষ করা হয়।

মধুখালী থেকে আগত স্বপ্না আমিন বলেন, পরিবারের সাথে ঘুরতে এসেছি। স্মৃতি হিসেবে ছবি তুলে রাখলাম। খুব ভালো সময় কাটলো। বাগানে প্রবেশ করলেই মনে হবে, হলুদের আভায় চারিদিকেই যেন ছড়িয়ে আছে অপার মুগ্ধতা। সবুজ মাঠ আর হলুদের ফুলের ওপর মৌমাছি আর পাখির আনাগোনা চোখে পড়ার মতো।

শহরের আরেক বাসিন্দা মোহাম্মদ দাউদ আকন্দ বলেন, প্রতিদিন বিকালে শহরসহ আশেপাশের এলাকা থেকে সৌন্দর্য্য পিয়াসুরা দল বেঁধে আসছেন এই সূর্যমুখী ফুলের বাগান দেখতে। পরিবার নিয়ে ঘুড়তে এসেছি। বেশ ভালো লাগলো। অপূর্ব এক অনুভূতি। যা সরাসরি স্বচক্ষে না দেখলে বোঝা যাবেনা।

সালথার কৃষক কালাম শেখ বলেন, বাগান দেখতে এসেছি। আগামীতে আমি কয়েক একর জমিতে এই সূর্যমুখীর চাষ করবো। অল্প সময়ে ভালো ফলন ও ভালো লাভ হয় বলে জানতে পেরেছি।

এ বিষয়ে ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জিয়াউল হক বলেন, সূর্যমুখী ফুলের চাষ নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে বীজ বপনের মাধ্যমে শুরু করা হয়। বীজ বপনের পর থেকে ১০০ দিনের মধ্যে এ ফসল তোলা যায়। এতে তুলনামূলক খরচও কম। সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার ও দুইবার সেচ দিতে হয়। এ আবাদে একর প্রতি জমিতে ৪৫ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। আর ভালো ফলন হলে প্রতি একর জমিতে উৎপাদিত বীজ থেকে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব। সূর্যমুখী ফুলের গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।

ট্যাগ :

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.