বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১৭ পূর্বাহ্ন

খবরের শিরোনাম:
রাজনগর সরকারি কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষ ভাঙচুর শায়েস্তাগঞ্জ ইন্টারনেট ব্যবসা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক ভিডিওকলে মাধবপুরের রেহানাকে বাঁচানোর আকুতি, ‘আমি আর সহ্য করতে পারতেছি না’ মৌলভীবাজারে চা-শ্রমিকের ছেলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার নবীগঞ্জ উপজেলা হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির মাসিক সভায় এমপি কেয়া চৌধুরী আড়াই কোটি টাকার সার-বীজ বিনামূল্যে বিতরণ সার চাওয়ায় কৃষকদের হত্যা করে বিএনপি -এমপি আবু জাহির উপজেলা নির্বাচনে নবীগঞ্জে ১৯ প্রার্থীর মনোনয়ন জমা নিয়মিত খেলাধূলা আয়োজনে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে-এমপি আবু জাহির দেশে হিটস্ট্রোকে আরও ৩ জনের মৃত্যু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ব্যাটারি কমপ্লেক্স উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

বড়শিতেই চলে তিন বোনের পেট

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ   রহিমা, ফাতেমা ও জরিনা। তারা তিন বোন। সবার বয়সই এখন ৫০-৬০ কোটায়। কিশোরী থাকতেই বিয়ে হয় তাদের। কিন্তু ভাগ্য বদলায়নি। স্বামীদের অভাবের সংসার হওয়ায় ধরতে হয় হাল। পেটের দায়ে খালে-বিলে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করছেন। ৩০ বছর ধরে এভাবেই চলছে তিন বোনের জীবন। বড়শিতে মাছ উঠলে পেটে জোটে ভাত। তবু বড়শিতে নির্ভর করেই চলছে তাদের সংসার।

তিন বোনের বাড়ি বরগুনার তালতলী উপজেলার নিউপাড়া এলাকায়। নদী কিংবা খালে নৌকায় বসে বড়শির ছিপ ফেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে মাছ ধরেন রাহিমা, ফাতেমা ও জরিনা। শিকার করা সেসব মাছ বাজারে বিক্রি করেই চলে তাদের অভাবের সংসার। তবে নদ-নদীতে দিন দিন মাছ কমে যাওয়ায় এখন কোনোমতে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তাদের। তবে আজ পর্যন্ত কোনো ধরনের সরকারি সহযোগিতা পাননি তারা। এমনটিই জানিয়েছেন এ তিন বোন।

নিউপাড়া এলাকার গিয়ে দেখা গেছে, প্রচণ্ড রোদে স্লুইসগেট সংলগ্ন নদীতে সারিবদ্ধ নৌকায় বসে বড়শির ছিপ ফেলে মাছ পাওয়ার আশায় বসে আছেন তিন বোন। কারো বড়শিতে চিংড়ি, পুঁটি, টেংরা, বোয়াল আবার কারো বড়শিতে ধরা পড়ে কোড়াল, রুই, পাঙাশসহ নানা প্রজাতির মাছ। এসব মাছ বাজারে নিয়ে ২৫০-৫০০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হয়। এভাবেই প্রতিদিন একেকজন ৩০০-৪০০ টাকা রোজগার করেন। আবার কোনো কোনো দিন তাদের খালি হাতেও ফিরতে হয়।

তিন বোন জানান, স্লুইসগেট সংলগ্ন নদীতে মাছ থাকলে তাদের সংসারের সব সদস্যর পেটে ভাত জোটে। কোনোদিন মাছ না থাকলে পেটে ভাতও জোটে না। তবু সংসার চালাতে ৩০ বছর পর্যন্ত বাবার বড়শির ছিপ ধরে আছেন তারা।

বড়ে বোন রাহিমার সঙ্গে একই এলাকায় বাদশা হাওলাদারের বিয়ে হয়। বিয়ের পরেই সংসারের হাল ধরেন রাহিমা। বিয়ের ১০ বছর পর স্বামী অসুস্থ হয়ে কর্মহীন পড়েন। তখন রাহিমা ওই নদীতে বড়শির ছিপ ফেলে মাছ ধরে পাঁচজনের সংসার চালানোর দায়িত্ব নেন। একই এলাকার সুলতান হাওলাদারের সঙ্গে বিয়ে হয় ফাতেমার। তার স্বামীও হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে বড় বোন রাহিমার পেশাকেই বেছে নেন। এরপর ছোট বোন জরিনার বিয়ে হয় প্রতিবেশী খালেক মোল্লার সঙ্গে। তিনি সুস্থ থাকলেও সংসারের অভাব-অনটনে মানুষের বাড়িতে কাজ করেন। কিন্তু যা আয় রোজগার করেন তা দিয়ে তাদের সংসার চলে না। তাই জরিনাও বড় দুই বোনের পেশাকে বেছে নেন।

তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাওসার হোসেন মুঠোফোনে বলেন, আমি খোঁজখবর নিয়ে ও বিষয়টি জেনে ওই তিন বোনকে সরকারিভাবে সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা করবো।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.