বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০২ অপরাহ্ন

লঞ্চে আগুন: একদিন পর তাবাসসুমকে পাওয়া গেলো কফিনে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের হাফেজ তুহিন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঢাকা থেকে ফিরছিলেন গ্রামে। পুরো লঞ্চ যখন আগুনে ছেয়ে যায়, তখন প্রাণ বাঁচাতে আড়াই বছরের শিশু সন্তান তাবাসসুমকে নিয়ে স্ত্রীর হাত ধরে ঝাঁপ দেন নদীতে।

কিন্তু তীরের লাগাম পেয়ে হুশ ফিরতেই দেখেন শিশু তাবাসসুম আর কোলে নেই। কখন মেয়ে হাত ফসকে সুগন্ধার পানিতে ভেসে নিরুদ্দেশ হয়েছে টের পাননি বাবা তুহিন।

তুহিন বলেন, ‘আগুন থিইক্যা বাঁচতে মাইয়া কোলে লইয়া পানতে (পানিতে) লাফ দিছিলাম। পাড়ে উইঠা দেহি মোর গেদু কোলে নাই। হারা দিন বিছরাইছি কোনো হানে পাই নাই। মোরে এট্টু ওর লাশটা অইলেও আইন্না দ্যান।’

তবাসসুমকে গতকাল শুক্রবার থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত কোথাও খুঁজে পাননি স্বজনরা। পরে তাঁরা খোঁজ নেন বরগুনা সদর হাসপাতাল মর্গে। সেখানে জানতে পারেন শনাক্ত না হওয়া মরদেহগুলোর বরগুনার সার্কিট হাউজ মাঠে জানাজা হয়েছে। দাফনের জন্য নেওয়া হয়েছে পোটকাখালীতে। পরে পোটকাখালীতে গিয়ে স্বজনরা কফিন থেকে শনাক্ত করে তাবাসসুমের মরদেহ। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁরা।

মরদেহ শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানার পর তাবাসসুমের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন এবং দাফনের জন্য ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, শিশু তাবাসসুমের মরদেহ শনাক্ত করতে পেরেছে পরিবার। তাই সরকারিভাবে দাফন না করে তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। একইসঙ্গে পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

উল্লেখ‌্য, ২৩ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে বরগুনার উদ্দেশে যাওয়া এমডি অভিযান-১০ নামের লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকে। নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। পুড়ে যাওয়া লঞ্চটিতে কতজন যাত্রী ছিলো তার সঠিক তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জানিয়েছে, লঞ্চটিতে প্রায় ৪০০ যাত্রী ছিলো। তবে লঞ্চ থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের অনেকে বলছেন, নৌযানটিতে যাত্রী ছিলো ৭০০ থেকে এক হাজার জন।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.