শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৩১ পূর্বাহ্ন

শহরে প্রকাশ্য-দিবালোকে ল্যাব টেকনোশিয়ানকে পিটিয়ে হত্যা সিসিটিভির ফুটেজ ও এক নারীর সন্ধানে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) সাইফুল ইসলাম (২৮) কে প্রকাশ্য-দিবালোকে পিটিয়ে হত্যা করেছে একদল দুর্বৃত্ত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২ টার দিকে শহরের টাউন হল রোডের স্যামসং শো রুম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাইফুল ইসলাম মাধবপুর উপজেলার মনতলা গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে। এদিকে, নির্মম এ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে প্রতিবাদে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের সকল ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করে। এসময় অবিলম্বে প্রকৃত খুনিকে গ্রেফতার করার দাবী জানান তারা। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি দেয়ার হুশিয়ারী
দেয়া হয়।
এছাড়াও এ ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে মাঠে কাজ করছে পুলিশ পিবিআইসহ আইনশৃঙ্খলা বাহীনির একাধিক টিম। সন্ধ্যার পর থেকেই তারা ঘটনাস্থলের আশপাশের ও সদর হাসপাতালের সিসিটিভির ফুটেজসহ নানান তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করতে থাকে। ঘটনার সময় নিহত সাইফুলের সাথে থাকা এক নারীর সন্ধানে মাঠে কাজ করছে পুলিশ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় যখন সাইফুলকে সিলেটে নিয়ে যাওয়া হয় তখও এ্যাম্বুলেন্সে ছিল ওই নারী। সিলেট মেডিকেলে সাইফুলকে মৃত ঘোষণা করার পর পরই কৌশলে সটকে পড়েন তিনি। আর এতে করেই সন্দেহের তীর আরো ঘনিভূত হচ্ছে ওই নারীর দিকে। তবে হাসপাতালের স্টাফসহ কর্মকর্তা কর্মচারীরা মনে করছেন, করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে কয়েকজন যুবকের সঙ্গে দুদিন আগে সাইফুলের বাকবিতÐা ও কথা কাটাকাটি হয়। এ ছাড়া বিদেশ ফেরত এক যুবকের সাথে রক্ত পরীক্ষা নিয়েও তার সাথে আগে পরে দেয়া নিয়ে বাকবিতন্ডা করে একদল যুবক। এনিয়ে হত্যাকান্ডটি ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা তাদের।
জানা যায়, দুপুরে সদর হাসপাতাল থেকে এক নারীকে সাথে নিয়ে রিক্সাযোগে নবীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড যাওয়ার জন্য রওয়ানা হয় সাইফুল। পথিমধ্যে শহরের টাউন হল এলাকা পাড় হয়ে স্যামসাং শো-রুম এলাকায় পৌছলে আগে থেকে উৎপেতে থাকা একদল যুবক তার গতিরোধ করে। এসময় কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই সাইফুলকে রিক্সা থেকে নামিয়ে মাথায় মারাত্মক জখম করে। এসময় স্থানীয়রা এগিয়ে গেলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাৎক্ষণিক উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেটে ওসমানী মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করা হয়। সেখানে নিয়ে যাওয়া পরপরই সাইফুলকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এসময় কৌশলে সটকে পড়েন সাথে থাকা ওই নারী। যদিও সাইফুলের সহকর্মীরা বলছেন, সাইফুলের মা বেচে নেই। তাই সে ওই নারীকে ধর্মের মা ডাকতো।
হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের ল্যাব ইনচার্জ আহমেদ ইমতিয়াজ তুহিন জানান, স¤প্রতি কয়েকজন যুবকের সঙ্গে সাইফুলের কথা কাটাকাটি হয়। হয়তো এর জের ধরেই তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে বের হয়ে আসবে। তিনি বলেন, আমরা দ্রæত অপরাধীদের গ্রেফতার দেখতে চাই।
হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের (আরএমও) মুমিন উদ্দিন জানান, সাইফুল অত্যান্ত ভদ্র একটি ছেলে ছিল। তার সাথে এমন ঘটনায় আমরা মর্মাহত। এ ঘটনায় আমরা তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করেছি। আজ বুধবারও কালো ব্যাজ ধারণসহ কর্মসূচি পালন করা হবে। এছাড়াও আউটডোরে ১ ঘন্টা চিকিৎসা সেবা বন্ধ থাকবে।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার (ওসি) মো. মাসুক আলী বলেন, ঘটনাস্থলের সিসি টিভির ফুটেজে হামলাকারীদের দেখা যাচ্ছে। পুলিশ সিসি টিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। সিসি টিভির ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। সাথে ওই নারীর তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। আশা করি দ্রæত সময়ের মধ্যেই হামলাকারীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.