বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৯:৫৩ অপরাহ্ন

সেহরি ও ইফতারে যা যা খাওয়া উচিত

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান। এ সময় সঠিক খাদ্যাভ্যাস পালন করা অত্যন্ত জরুরি। সারাদিন রোজা পালন শেষে ইফতারে অনেকেই অনেক বেশি খেয়ে ফেলেন। আবার সারাদিন না খেয়ে থাকতে হবে এই কথা চিন্তা করে অনেকেই সেহরিতে জোর করে অনেক বেশি খাবার খান। দুটোর কোনটিই ঠিক নয়।

খাদ্য তালিকায় মুখরোচক ভাজাপোড়া নয় বরং পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে এবং পরিমিত আহার করতে হবে। শরীরের চাহিদার থেকে খাবারের পরিমাণ কম বা বেশি কোনোটিই ভালো নয়।

চলুন জেনে নেই রমজান মাসে ইফতার ও সেহরিতে স্বাস্থ্যকর খাবার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে- রোজার মাসে নিয়মিত জীবনযাপনে আসে পরিবর্তন। ভাজাপোড়া খাওয়া বাড়ে। পাল্টে যায় ঘুমের সময়। এই একমাসে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজন সঠিক পুষ্টি।

তীব্র গরমে সেহরির জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার:

রোজার মাসে সারাদিনের সংযম আর সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত প্রচুর তেলে ভাজা, মসলাদার সুস্বাদু খাবারের সমারোহ। আর মাসটা শেষ হলেই ঈদ। প্রচুর মিষ্টি, সেমাই, পায়েসের ছড়াছড়ি। মন ভরে খাওয়া আর কদিন পরেই ওজন মেশিনের দিকে তাকিয়ে মুষড়ে পড়া।

অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় সারা মাসের সংযমের ফলাফল ওজন বৃদ্ধি। চুল ও ত্বকে বাড়ে মলিনতা আর শরীরজুড়ে নেমে আসে অবসাদ। বেহিসেবি খাওয়া আর অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারাই এর কারণ।

ইফতারে পুষ্টিকর খাবার:

সারাদিনের তৃষ্ণার্ত শরীর পরিতৃপ্ত হয় শরবত পানের মধ্য দিয়ে। তাই এই পানিয় ঘরে বানানো তাজা ফলের হওয়া চাই। এখন যেহেতু মৌসুমি ফলের মাস তাই প্রায় প্রতিদিনই ঘরে তৈরি শরবত খাওয়ার এটাই উপযুক্ত সময়।

আম, কমলা, তরমুজ, বাঙ্গি, পেঁপে, লেবু-যে কোনো একটি ফলের রস দিয়েই শুরু করা যায় ইফতার। তবে শরবতে অতিরিক্ত চিনি ব্যবহার না করে মুখ মিষ্টি করার মতো চিনি ব্যবহারই ভালো।

রোজাতে শরীরে অতিরিক্ত পানির চাহিদা তৈরি হয়। তাই শরবতের পরই শশা, খেজুর এগুলো খাওয়া যেতে পারে। তবে খেজুর দু-তিনটির বেশি খাওয়া ঠিক না। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খেজুরের বরাদ্দ কেবল দুটো।

অঙ্কুর ওঠা কাঁচাছোলা ভিটামিন সি-র খুব ভালো উৎস। প্রতিদিনের ইফতারির মেন্যুতে কাঁচাছোলাটা তাই নিশ্চিত করুন। সারাদিনের অনাহারের পর ভাজাপোড়া, তেল-মসলা শরীরের জন্য একদমই ভালো না। তা খেতে যতই মুখরোচক হোক না কেন।

ইফতারিতে একটু পেঁয়াজু, বেগুনি বা ছোলা না খেলে যদি অসম্পূর্ণ মনে হয়, তবে দই-চিড়া বা ফলাহারের পর সামান্য ভাজাপোড়া চলতে পারে।

সেহরিতে পুষ্টিকর খাবার:

গরমকালে দীর্ঘ সময় রোজা রেখে সুস্থ থাকার জন্য চাই সেহরিতে পুষ্টিকর খাবার। যেহেতু গরমকালে রোজা তাই শরীরের পানির চাহিদার প্রতি বিশেষ মনযোগ দিতে হবে। শরীরের পুষ্টি ও ভিটামিনের চাহিদা পূরণের জন্য খাদ্য তালিকায় সব ধরণের খাদ্য উপাদান যোগ করতে হবে। সেহেরিতে সুষম খাবার।

খাদ্য তালিকায় খাবারের ছয়টি উপাদান- শর্করা, স্নেহ, আমিষ, ভিটামিন, খনিজ ও পানি ইত্যাদি উপাদানগুলো প্রয়োজন মতো রাখতে হবে। যেহেতু সারাদিন কোনো কিছু খাওয়া হয় না তাই সেহেরিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার খেতে হবে।

অনেকে মনে করেন যে, সারাদিন কিছু খাওয়া হবে না তাই সেহেরিতে বেশি করে খেতে হবে। এটা একটা ভুল ধারণা। বরং প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খাওয়া হলে শরীরের জন্য ক্ষতিকর। সেহেরিতে আঁশ বহুল খাবার বা হজম দেরিতে হয় এমন খাবার খাওয়া ভালো। এতে ক্ষুধা দেরিতে লাগে।

শরীর ঠিক রাখতে সেহেরিতে শর্করা জাতীয় খাবার যেমন- ভাত, রুটি ইত্যাদি খেতে পারেন। এর সঙ্গে আমিষ ও স্নেহ পদার্থের চাহিদা মেটানোর জন্য মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ইত্যাদি খাওয়া ভালো।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.