শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩৬ অপরাহ্ন

খবরের শিরোনাম:
শায়েস্তাগঞ্জে ৩০তম বঙ্গবন্ধু কবিতা উৎসব অনুষ্ঠিত জিকে গউছের ৫৭তম জন্মদিন আজ -বর্ণাঢ্য ও সংগ্রামী জীবনের অধিকারী দেশকে সবদিক থেকেই সমৃদ্ধ করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার-এমপি আবু জাহির মৌলভীবাজারে অভিযান চালিয়ে ১৩ জুয়ারি আটক সারাদেশে ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য কেন শোনানো হয়নি তার জন্য তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন এমপি চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার আহবান তরুণদের প্রতি-এমপি আবু জাহির দুর্নীতিমুক্ত জেলা পরিষদ গঠনের ঘোষণা দিলেন আলেয়া আক্তার ওয়ারিশান ও এসএ খতিয়ান জ্বালিয়াতি বিরুদ্ধে চার্জশীট প্রদান করল পিবিআই দুর্ঘটনা কবলিত পিকআপ উদ্ধারের সময় বাস চাপায় নিহত ২

হবিগঞ্জের বিভিন্ন হাওরাঞ্চলে প্রাকৃতিক মাছ বিলুপ্তির পথে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মাছে-ভাতে বাঙালি’। মাছ বাঙ্গালীর ঐতিহ্য। এক সময় হাওরাঞ্চল ছিল মাছের ভান্ডার। কিন্তু কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে হাওরাঞ্চলের সুস্বাদু বিভিন্ন জাতের ছোট-বড় মাছ। এখন বাজারে গিয়ে ক্রেতা সাধারণ মাছ ব্যবসায়ীকে প্রশ্ন করেন হাওরের না-কি চাষের। পুুটি, পাবদা, বোয়াল, চিতল থেকে শুরু করে এমন কোন মাছ নেই যা ফিসারীতে চাষ করা হয় না। এর প্রায় সবই হাইব্রিড জাতীয়। প্রাকৃতিক মাছগুলো আল্লাহর দান। বৃষ্টি আসলেই ডিম পাড়ে। কিন্তু কেন হারিয়ে যাচ্ছে প্রাকৃতিক সম্পদ হাওরাঞ্চেলের মাছ। এ প্রশ্ন সর্বত্র। এর জন্য দায়ী কে ? উত্তর খোজে পাওয়া মুশকিল। বলাও মুশকিল। নদী হারিয়ে ফেলেছে নাব্যতা, হাওরের জলাশয়গুলো ভরাট হয়ে গেছে।একজন মৎস্য কর্মকর্তার সাথে কথা বলে প্রাকৃতিক মাছ হারিয়ে যাওয়ার বেশ কিছু কারণ উঠে আসে। এর মধ্যে রয়েছে ১) জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছ খাওয়ার লোক বেড়েছে, ধরার লোক বেড়েছে, বেচার লোক বেড়েছে। ২) কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরা। ৩) সেলো মেশিন দিয়ে সেচে খাল-ডোবা-নালা শুকিয়ে ফেলায় পরের বছর মাছ এসে ডিম পাড়ার সুযোগ পায়না। ৪) কলকারখানার বর্জ পরিশোধন না করে বিষাক্ত বর্জ নদী-খালে ছেড়ে দেয়ায় পানি বিষাক্ত হয়ে পড়ে। ফলে ওই নদীতে আর মাছ বিচরণ করার সুযোগ থাকে না। ৫) জমিতে অতিরিক্ত কীটনশক প্রয়োগের ফলে প্রাকৃতিক মাছ বিনাশ হচ্ছে। ৬) মাছের ধর্ম হচ্ছে ভাটি এলাকায় অবস্থান করা আর উজানে এসে ডিম পারা। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হওয়ায় মাছের স্বাভাবিক চলাচল বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। ধরা পড়ছে। ৭) মাছের কোন অভয়ারণ্য নেই। জলমহাল ইজারা দেয়া হচ্ছে প্রতি ৩ বছর পর পর ২৫% ইজারামূল্য বৃদ্ধ করা হয়। ফলে ইজারাদার বছর বছর জলমহালের পানি শুকিয়ে বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে কাঁদা মাটির নীচে লুকিয়ে থাকা মাছগুলোও তুলে নিয়ে আসে। নদীগুলোও সেচে মাছ সমুলে তুলে আনা হয়। ৮) ডিম ওয়ালা মাছ অবাধে নিধন এবং ৯) জলবায়ূর ইতিবাচক পরিবর্তনের কারণে বর্ষাকালেও পানি কম থাকে। ফলে মাছ কোথাও নিরাপদে বিচরণ করতে পারে না।
আগে বর্তমান সময়ের মতো নদ-নদী, খাল ও জলাশয়গুলো হারিয়ে যায়নি। আধুনিককালের মতো শিল্প-কারখানা না থাকায় নদীদূষণ জাতীয় কোনো সমস্যা ছিল না। সব ধরনের জলাধার ছিল মাছের বংশ বিস্তারের জন্য খুবই উপযোগী। জলমহাল থেকে মৎস্য আহরণকে কেউ খুব একটা বাধাগ্রস্থ করতে পারেনি। তাই অতি সহজেই মৎস্য আহরণ করা যেত।
পূর্বে নির্বিচারে মৎস্য আহরণ থেকে বিরত থাকার জন্য বিচিত্র ধরনের জাল ও চাঁইয়ের ব্যবহার করত। একেক ধরনের জাল ছিল একেক ধরনের মাছ ধরার উপযোগী। এর ফলে নির্দিষ্ট মৌসুমে নির্দিষ্ট ধরনের জাল ব্যবহার করে নির্দিষ্ট ধরনের মাছই ধরা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে কারেন্ট জাল ব্যবহার করে একই জালে পোনাসহ সব ধরনের মাছ ধরা হচ্ছে।
ইউসুফ নামে একজন মাছ ব্যাসায়ীর সাথে কথা বলে জানা যায়, বাজারে অধিকাংশ মাছ বিক্রি হচ্ছে চাষের। দামের দিক দিয়ে দেশী মাছের মূল্য অনেক বেশী। দেশী এবং চাষের মাছের মধ্যে স্বাদের দিক দিয়েও অনেক পার্থক্য রয়েছে।
উল্লেখিত বিষয়গুলো সহ আনুষাঙ্গিক কারণগুলো চিহ্নিত করে প্রশাসনিক ভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন মলে মনে করেন বিজ্ঞ মহল।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.