শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১১:১৭ পূর্বাহ্ন

হবিগঞ্জ জেলা জুড়ে অবৈধ ইটভাটা নির্মাণের ছড়াছড়ি।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ হবিগঞ্জ জেলা জুড়ে অবৈধ ইটভাটা নির্মাণের ছড়াছড়ি। কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই যত্রযত্র গড়ে তোলা হচ্ছে ইটভাটা। ফসলি জমি, নদীর পাড় ও স্কুল-কলেজের আশপাশে এসব ভাটা গড়ে ওঠায় হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র।

এসব ভাটা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ায় বাড়ছে শ্বাসকষ্টসহ রোগবালাই। এছাড়া ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে ভাটায় নেয়ার ফলে জমি হারাচ্ছে উর্বরতা। ভাটার বিষাক্ত বর্জ্যে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ।দীর্ঘদিন ধরেই জেলা জুড়ে চলছে এসব কার্মকাণ্ড। তবে জেলা প্রশাসন বলছে, অবৈধ ইটভাটা বন্ধে তৎপর সংশ্লিষ্ট বিভাগ। প্রতিনিয়ত চালানো হচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হবিগঞ্জে ১২০টির বেশি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ ভাটারই পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র নেই। আবার কোনো কোনো ভাটার নেই লাইসেন্স। কিছু ভাটার লাইসেন্স থাকলেও তা মেয়াদোত্তীর্ণ। অর্থাৎ, জেলা জুড়ে বৈধ লাইসেন্স, ছাড়পত্র নিয়ে এবং নিয়ম মেনে ইটভাটা চালাচ্ছে গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠান। তাদেরই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে বাকি অবৈধ ভাটা মালিকরা।

জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, বাহুবল, চুনারুঘাট ও নবীগঞ্জ উপজেলায় রয়েছে অর্ধশতাধিক ইটভাটা। এছাড়া জেলার বাকি এলাকায় আছে আরো অর্ধশত। এর মধ্যে নিয়ম বহির্ভূত ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জানা গেছে, সরকারি নীতিমালায় সবগুলো ইটভাটাকে পরিবেশ সম্মত জিগজ্যাগ চুল্লি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অথচ সরকারি নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পরিচালিত হচ্ছে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এসব ইটভাটা। এতে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

এদিকে, অবৈধ ও নিয়ম বহির্ভূত ইটভাটার তালিকা তৈরি করে প্রতিবেদন জমা দিতে হবিগঞ্জ পরিবেশ অধিদফতরকে নির্দেশ দিয়েছে পরিবেশ আদালত। জেলায় কতটি ইটভাটা আছে, সেগুলোর মধ্যে কয়টির অনুমোদন আছে, পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র আছে কিনা, নিয়মনীতি অনুসরণ করছে কি না এবং কয়টি ভাটার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা আছে- তা তদন্ত করে আগামী ২ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

পরিবেশ অধিদফতর হবিগঞ্জের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ইটভাটা সম্পর্কে আমরা আদালত থেকে একটি নির্দেশনা পেয়েছি। এ বিষয়ে কাজ শুরু হয়েছে। যারা অবৈধ ইটভাটা চালাচ্ছে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। সামান্য ত্রুটি পেলেও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নবীগঞ্জ উপজলো সহকারী কমিশনার (ভূমি) উত্তম কুমার দাশ জানান, বুধবারও বেশ কয়েকটি ভাটায় অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। কোনো অনিয়ম হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। প্রতিটি ভাটা পরিদর্শন করে নিয়ম ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.