ঢাকা ১০:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খালেদা জিয়ার জীবন হুমকির মুখে : মির্জা ফখরুল

শায়েস্তাগঞ্জে বাণী প্রতিবেদক

সোমবার ভোরে হঠাৎ করে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জীবন হুমকির মুখে বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (৮ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেখে আসার পর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ কথা জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, ভোরের দিকে হঠাৎ করে উনি (খালেদা জিয়া) অসুস্থ হয়ে পড়েন। উনার অনেক অসুখ আছে যা আমরা বার বার জাতির কাছে তুলে ধরেছি। কিন্তু সরকার কোনো কেয়ার করেনি। উনার জীবন হুমকির মুখে। এটা এরা (সরকার) ইনটেনশনালি করছে বলে আমরা মনে করি।

তিনি বলেন, এখন এটা জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে যে, দেশনেত্রীকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। উনার প্রতি চরম অন্যায় করা হচ্ছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এভাবে আটকে রেখে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। আজকে (সোমবার ভোর) তিনি হাসপাতালে এসেছেন।

হঠাৎ হঠাৎ করে আসতে হচ্ছে। কয়েকদিন আগেও তাকে হাসপাতালে আসতে হয়েছে। অত্যন্ত জটিল অসুখগুলো ক্রমাগত তাকে আক্রমণ করেছে। সেক্ষেত্রে আমরা বার বার বলেছি যে, তার চিকিৎসাটা দরকার বিদেশে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি চিকিৎসা কেন্দ্রে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, তারা (সরকার) প্রতিহিংসার কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিচ্ছে না।

এর আগে সোমবার ভোরে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে বিএনপি চেয়ারপারসনকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি মেডিকেল বোর্ডের নিবিড় তত্ত্বাবধায়নে কেবিনে চিকিৎসাধীন আছেন।

তার আগে ২২ জুন গভীর রাতে গুলশানের বাসায় ‘হঠাৎ অসুস্থ’ হয়ে পড়লে অ্যাম্বুলেন্সে করে খালেদা জিয়াকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি করা হয়। পরদিনই তার হৃদপিণ্ডে সফলভাবে পেসমেকার বসানো হয়। পরে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে গত ২ জুলাই এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

গত বছরের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন লিভার বিশেষজ্ঞ এনে তার লিভারে অস্ত্রোপচার করা হয়। অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাকে চিকিৎসা দিচ্ছেন বলে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান।

এদিন দুপুর ১২টায় মির্জা ফখরুল এভারকেয়ার হাসপাতালে যান এবং চিকিৎসকদের কাছে বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসার বিষয়ে অবহিত হন। মির্জা ফখরুল জানান, ম্যাডামকে চব্বিশ ঘণ্টা মনিটর করছেন চিকিৎসকরা।

খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির আন্দোলন চলবে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বেগম জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। ভবিষ্যতে আরো আন্দোলন হবে। আমরা চেষ্টা করবো এই আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়ার। কিন্তু তারা (সরকার) এতটা অমানবিক যে, তারা বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বিষয়টাকে গুরুত্ব দিতে চায় না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাস করি। কখনোই আমরা অগণতান্ত্রিক পথে কোনো কিছু করতে চাই না। কিন্তু সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে যে, এটাতে সাড়া দিয়ে তার মুক্তির ব্যবস্থা করা, এটা জরুরি প্রয়োজন।

৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৫:৩৫:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪
৩৬ বার পড়া হয়েছে

খালেদা জিয়ার জীবন হুমকির মুখে : মির্জা ফখরুল

আপডেট সময় ০৫:৩৫:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪

সোমবার ভোরে হঠাৎ করে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জীবন হুমকির মুখে বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (৮ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেখে আসার পর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ কথা জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, ভোরের দিকে হঠাৎ করে উনি (খালেদা জিয়া) অসুস্থ হয়ে পড়েন। উনার অনেক অসুখ আছে যা আমরা বার বার জাতির কাছে তুলে ধরেছি। কিন্তু সরকার কোনো কেয়ার করেনি। উনার জীবন হুমকির মুখে। এটা এরা (সরকার) ইনটেনশনালি করছে বলে আমরা মনে করি।

তিনি বলেন, এখন এটা জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে যে, দেশনেত্রীকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। উনার প্রতি চরম অন্যায় করা হচ্ছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এভাবে আটকে রেখে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। আজকে (সোমবার ভোর) তিনি হাসপাতালে এসেছেন।

হঠাৎ হঠাৎ করে আসতে হচ্ছে। কয়েকদিন আগেও তাকে হাসপাতালে আসতে হয়েছে। অত্যন্ত জটিল অসুখগুলো ক্রমাগত তাকে আক্রমণ করেছে। সেক্ষেত্রে আমরা বার বার বলেছি যে, তার চিকিৎসাটা দরকার বিদেশে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি চিকিৎসা কেন্দ্রে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, তারা (সরকার) প্রতিহিংসার কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিচ্ছে না।

এর আগে সোমবার ভোরে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে বিএনপি চেয়ারপারসনকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি মেডিকেল বোর্ডের নিবিড় তত্ত্বাবধায়নে কেবিনে চিকিৎসাধীন আছেন।

তার আগে ২২ জুন গভীর রাতে গুলশানের বাসায় ‘হঠাৎ অসুস্থ’ হয়ে পড়লে অ্যাম্বুলেন্সে করে খালেদা জিয়াকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি করা হয়। পরদিনই তার হৃদপিণ্ডে সফলভাবে পেসমেকার বসানো হয়। পরে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে গত ২ জুলাই এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

গত বছরের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন লিভার বিশেষজ্ঞ এনে তার লিভারে অস্ত্রোপচার করা হয়। অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাকে চিকিৎসা দিচ্ছেন বলে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান।

এদিন দুপুর ১২টায় মির্জা ফখরুল এভারকেয়ার হাসপাতালে যান এবং চিকিৎসকদের কাছে বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসার বিষয়ে অবহিত হন। মির্জা ফখরুল জানান, ম্যাডামকে চব্বিশ ঘণ্টা মনিটর করছেন চিকিৎসকরা।

খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির আন্দোলন চলবে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বেগম জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। ভবিষ্যতে আরো আন্দোলন হবে। আমরা চেষ্টা করবো এই আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়ার। কিন্তু তারা (সরকার) এতটা অমানবিক যে, তারা বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বিষয়টাকে গুরুত্ব দিতে চায় না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাস করি। কখনোই আমরা অগণতান্ত্রিক পথে কোনো কিছু করতে চাই না। কিন্তু সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে যে, এটাতে সাড়া দিয়ে তার মুক্তির ব্যবস্থা করা, এটা জরুরি প্রয়োজন।

৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।