ঢাকা ১০:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo শহীদ নূর হোসেন দিবস আজ Logo হবিগঞ্জ-১: রেজা কিবরিয়ার যোগদানে বিএনপিতে এখন ত্রিমুখী লড়াই Logo হবিগঞ্জের নতুন ডিসি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন Logo ড. ফরিদুর রহমান বদলি, নতুন ডিসি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন Logo মসজিদে নামাজরত অবস্থায় ছুরিকাঘাত করে খুন : অভিযুক্ত আটক Logo ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত: শায়েস্তাগঞ্জে তরুণী গ্রেপ্তার Logo ৭ই নভেম্বর ও একজন দেশ প্রেমিক জিয়াউর রহমান Logo হবিগঞ্জ-১ আসনে মনোনয়ন নিয়ে তোড়জোর, বিএনপিতে যোগ দিলেন ড. রেজা কিবরিয়া, বদলে যাচ্ছে সমীকরণ! Logo হবিগঞ্জে ৮টির মধ্যে ৪ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ, বেড়েছে লোডশেডিং Logo হবিগঞ্জে চুনারুঘাট শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেপ্তার

আজমিরীগঞ্জ দুই শিশুর লাশ নদীতে ফেলে দেওয়ায় পঞ্চায়েতের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

কনৌজ কান্তি ব্যানার্জী, আজমিরীগঞ্জ, হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ শেষকৃত্যের জন্য একটু মাটি জুটলো না, পানিতে ডুবে মারা যাওয়া দুই শিশুর জন্য। গ্রাম্য মাতব্বরদের বাধায় শ্মশ্মানে সমাধি দিতে না পেরে বস্তায় ভরে কালনী নদীতে ফেলে দিতে হলো। এর প্রতিবাদে আজমিরীগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদ শনিবার (৬ জুলাই) আজমিরীগঞ্জ রাধা গোবিন্দের জিউ-র আখড়ার সামনে জীবন কুমার চন্দের সভাপতিত্বে এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত সভা পরিচালনা করেন আজমিরীগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব কুমার দেব। উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন, আজমিরীগঞ্জ ব্রাহ্মণ সংসদের সাধারণ সম্পাদক মাধব চক্রবর্তী,বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মৃণাল কান্তি গোপ, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বাবলু রায়, রাধা গোবিন্দ জিউ-র আখড়ার সাধারণ সম্পাদক চানু লাল কর্মকার,যুবনেতা রনি মোদক,এছাড়াও আরো অনেকে।

প্রত্যেক বক্তারা বলেন হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ পাহাড় পুর গ্রামে দুই শিশু প্রলয় দাস,ও সূর্য দাসের লাশ নদীতে ফেলে দেওয়ায় পঞ্চায়েতদের গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানায়। আজমিরীগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জীবন চন্দ বলেন,আজমিরীগঞ্জে ঘটে যাওয়া ঘটনা যা লজ্জ্বাজনক,ও নিন্দনীয়।

মাতব্বরদের এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই, । এই বিষয়ে, ৭জন পঞ্চায়েত সহ ১২ জনের বিরুদ্ধে গতকাল মামলা করেছেন নিহত শিশু প্রলয় দাসের পিতা গোবিন্দ দাস। আমাদের দাবি গ্রাম্য মাতব্বরদের কে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনাসহ দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানাই।

গত শনিবার (২৯ শে জুন) হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বদলপুর ইউনিয়নের পাহাড়পুর। ফুটবল খেলা শেষে পুকুরে গোসল করতে নেমে মারা যায় ওই গ্রামের দুই শিশু প্রলয় দাস (৭) ও সুর্য দাস (৬)। সনাতন ধর্মের রীতি অনুযায়ী মরাদেহ দাহ করা হয়। তবে দাহ না করে সমাধি দেওয়ার রীতি রয়েছে। রবিবার (৩০ জুন) দুপুরে শিশু প্রলয় দাসের মরদেহ শ্মশ্মানে সমাধি দেয় তার পরিবার।

বিষয়টি গ্রামের মাতব্বররা জানার পর শিশুটির বাবা গোবিন্দ দাসকে ডেকে এনে শ্মশ্মানে মরদেহ না রাখার নির্দেশ দেয়। একইসঙ্গে সমাধি দেওয়া মরদেহ তুলে পানিতে ফেলে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। সন্তানের মরদেহ শ্মশ্মানে রাখতে বাবার শত অনুরোধ আর পায়ে ধরে কান্নাও মন গলাতে পারেনি মাতব্বরদের। এক পর্যায়ে মাতব্বরদের চাপের মুখে সন্তানের মরদেহ সমাধি থেকে তুলতে বাধ্য হন হতভাগা বাবা।

পরে বস্তাবন্দি করে ফেলে দেওয়া হয় কালনী নদীতে। প্রলয়ের এমন পরিণতি দেখে অপর শিশু সূর্য দাসের পরিবারও তার মরদেহ বস্তাবন্দি করে নদীতে ফেলে দেয়।শিশু প্রলয় দাসের বাবা গোবিন্দ দাস বলেন, ‘বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে আমি আমার ছেলেকে পাহাড়পুর মহাশশ্মানের দেয়াল সংলগ্ন মাটিতে সমাধি দেই।

কিন্তু গ্রাম পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক দিপেশ দাস ও কোষাধ্যক্ষ অসিত সরকারসহ পঞ্চায়েতের লোকেরা আমাকে ডেকে লাশ তুলে নদীতে ভাসিয়ে দিতে বলেন৷ আমি লাশ না তোলার জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষসহ উপস্থিত সবার হাতে পায়ে ধরে কান্নাকাটি করলেও তারা আমার কথা শুনেননি।

অবশেষে পঞ্চায়েত কমিটির চাপে বাধ্য হয়ে সন্ধ্যায় আমি ছেলের লাশ তুলে বস্তাবন্দী করে লাশ কালীন নদীতে ফেলে দেই। এ বিষয়টি সচেতন মহলের মাঝে মিশ্রপ্রতিক্রয়া ও ক্ষোভ প্রকাশ করে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৫:৩৭:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ জুলাই ২০২৪
১৭৪ বার পড়া হয়েছে

আজমিরীগঞ্জ দুই শিশুর লাশ নদীতে ফেলে দেওয়ায় পঞ্চায়েতের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

আপডেট সময় ০৫:৩৭:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ জুলাই ২০২৪

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ শেষকৃত্যের জন্য একটু মাটি জুটলো না, পানিতে ডুবে মারা যাওয়া দুই শিশুর জন্য। গ্রাম্য মাতব্বরদের বাধায় শ্মশ্মানে সমাধি দিতে না পেরে বস্তায় ভরে কালনী নদীতে ফেলে দিতে হলো। এর প্রতিবাদে আজমিরীগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদ শনিবার (৬ জুলাই) আজমিরীগঞ্জ রাধা গোবিন্দের জিউ-র আখড়ার সামনে জীবন কুমার চন্দের সভাপতিত্বে এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত সভা পরিচালনা করেন আজমিরীগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব কুমার দেব। উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন, আজমিরীগঞ্জ ব্রাহ্মণ সংসদের সাধারণ সম্পাদক মাধব চক্রবর্তী,বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মৃণাল কান্তি গোপ, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বাবলু রায়, রাধা গোবিন্দ জিউ-র আখড়ার সাধারণ সম্পাদক চানু লাল কর্মকার,যুবনেতা রনি মোদক,এছাড়াও আরো অনেকে।

প্রত্যেক বক্তারা বলেন হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ পাহাড় পুর গ্রামে দুই শিশু প্রলয় দাস,ও সূর্য দাসের লাশ নদীতে ফেলে দেওয়ায় পঞ্চায়েতদের গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানায়। আজমিরীগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জীবন চন্দ বলেন,আজমিরীগঞ্জে ঘটে যাওয়া ঘটনা যা লজ্জ্বাজনক,ও নিন্দনীয়।

মাতব্বরদের এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই, । এই বিষয়ে, ৭জন পঞ্চায়েত সহ ১২ জনের বিরুদ্ধে গতকাল মামলা করেছেন নিহত শিশু প্রলয় দাসের পিতা গোবিন্দ দাস। আমাদের দাবি গ্রাম্য মাতব্বরদের কে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনাসহ দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানাই।

গত শনিবার (২৯ শে জুন) হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বদলপুর ইউনিয়নের পাহাড়পুর। ফুটবল খেলা শেষে পুকুরে গোসল করতে নেমে মারা যায় ওই গ্রামের দুই শিশু প্রলয় দাস (৭) ও সুর্য দাস (৬)। সনাতন ধর্মের রীতি অনুযায়ী মরাদেহ দাহ করা হয়। তবে দাহ না করে সমাধি দেওয়ার রীতি রয়েছে। রবিবার (৩০ জুন) দুপুরে শিশু প্রলয় দাসের মরদেহ শ্মশ্মানে সমাধি দেয় তার পরিবার।

বিষয়টি গ্রামের মাতব্বররা জানার পর শিশুটির বাবা গোবিন্দ দাসকে ডেকে এনে শ্মশ্মানে মরদেহ না রাখার নির্দেশ দেয়। একইসঙ্গে সমাধি দেওয়া মরদেহ তুলে পানিতে ফেলে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। সন্তানের মরদেহ শ্মশ্মানে রাখতে বাবার শত অনুরোধ আর পায়ে ধরে কান্নাও মন গলাতে পারেনি মাতব্বরদের। এক পর্যায়ে মাতব্বরদের চাপের মুখে সন্তানের মরদেহ সমাধি থেকে তুলতে বাধ্য হন হতভাগা বাবা।

পরে বস্তাবন্দি করে ফেলে দেওয়া হয় কালনী নদীতে। প্রলয়ের এমন পরিণতি দেখে অপর শিশু সূর্য দাসের পরিবারও তার মরদেহ বস্তাবন্দি করে নদীতে ফেলে দেয়।শিশু প্রলয় দাসের বাবা গোবিন্দ দাস বলেন, ‘বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে আমি আমার ছেলেকে পাহাড়পুর মহাশশ্মানের দেয়াল সংলগ্ন মাটিতে সমাধি দেই।

কিন্তু গ্রাম পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক দিপেশ দাস ও কোষাধ্যক্ষ অসিত সরকারসহ পঞ্চায়েতের লোকেরা আমাকে ডেকে লাশ তুলে নদীতে ভাসিয়ে দিতে বলেন৷ আমি লাশ না তোলার জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষসহ উপস্থিত সবার হাতে পায়ে ধরে কান্নাকাটি করলেও তারা আমার কথা শুনেননি।

অবশেষে পঞ্চায়েত কমিটির চাপে বাধ্য হয়ে সন্ধ্যায় আমি ছেলের লাশ তুলে বস্তাবন্দী করে লাশ কালীন নদীতে ফেলে দেই। এ বিষয়টি সচেতন মহলের মাঝে মিশ্রপ্রতিক্রয়া ও ক্ষোভ প্রকাশ করে।