ঢাকা ১১:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২৫, ২০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo শায়েস্তাগঞ্জে ছাত্রদলের বর্ণাঢ্য র‌্যালী অনুষ্ঠিত Logo ভারতে বাংলাদেশীদের অনুপ্রবেশে সাহায্য করছে বিএসএফ: মমতা Logo শুধু ব্যক্তি নয়, জনস্বার্থে ব্যবসা করা উচিত: প্রধান উপদেষ্টা Logo অবশেষে কাজী নজরুলকে জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি Logo গণঅভ্যুত্থানে আহতদের শাহবাগে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন Logo ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সব ধ্বংস করে দিয়েছে-আহমেদ আলী মুকিব Logo যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ইউকে’র যাত্রা শুরু Logo নবীগঞ্জে জাতীয় সমাজসেবা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা র‍্যালী অনুষ্ঠিত Logo মানুষমাত্রই উদ্যোক্তা, তারা শ্রমিক না: প্রধান উপদেষ্টা Logo নিহত-আহতদের সহযোগিতা পেতে চিকিৎসকদের সত্যায়িত কপি লাগবে: সারজিস

আজ মহাসপ্তমী- ঘরে ঘরে জ্বলে উঠুক আনন্দের দীপশিখা

এডভোকেট র্নিমল ভট্টাচার্য্য রিংকু

বছর ঘুরে আবার এল পুজো। সনাতন ধর্মাবলম্বী বাঙ্গালীর প্রাণের উৎসব দূর্গাপুজো।

আজ মহাসপ্তমী বিহিত পূজা। বাঙালীর ঘরে ঘরে আজ মা এসেছেন। তাই সমস্ত অন্ধকার কেটে গিয়ে চারিদিকের সবকিছু ঝলমল করে উঠেছে। আমাদের প্রার্থনা, উৎসবের সেই রঙিন আলো ছড়িয়ে পড়ুক প্রতিটি মানুষের প্রাণে।

দৈনন্দিন জীবনের গ্লানি, ক্লান্তি, অশান্তি ভুলে গিয়ে মানুষ এই উৎসবের স্রোতে গা ভাসিয়ে দিতে দিন গুনে। মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে আমরা বলতে চাই, মাগো আমাদের সুখ দাও, শান্তি দাও। তুমি তো মঙ্গলময়ী, জগৎজননী। মাগো তুমি এই সমাজে প্রতিটি মানুষকে বিশেষ করে মেয়েদের শক্তি জুগিয়ে তাদের জাগ্রত করো নবমহিমায়, নবশক্তিতে।

তাছাড়া সাধারণ মানুষও তো কত নিপীড়ন মুখ বুজে সহ্য করছে। অত্যাচারিতদের নেই লোকবল, অর্থবল কিংবা রাজনৈতিক বল। তাই তাদের মুখ লুকিয়ে থাকতে হচ্ছে। পাশাপাশি অত্যাচারীরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের বাধা দেওয়ার যেন কেউ নেই।

মানুষ কিন্তু এর বিনাশ চায়। মানুষ চায় শান্তি, স্বস্থি। তাদের প্রার্থনা, পুজোয় যে আলোর ঝরনাধারা দেখা যায়, তা যেন বছরভর থাকে। প্রতিটি মানুষ হোক আলোর উৎস। কেটে যাক তার মনের অন্ধকার।

শ্রী শ্রী চন্ডী থেকেই আমরা জানতে পারছি, দেবী দূর্গা অসুরকে বধ করার সময় ক্রোধান্বিত হয়ে বলেছিলেন, “ইথং যদা যদা বাধা দানবোত্থা ভবিষ্যতি/তদা তদাবতীর্য্যাহং করিষ্যাম্যরি-সংয়ম্”। অর্থাৎ যখনই দানবের অত্যাচারে এই পৃথিবী নিপীড়িত হবে, তখনই আমি আবির্ভূত হয়ে সেই দানবকে সংহার করব। অর্থাৎ সেই অসুর দমনের তত্ত্বের আড়ালে লুকিয়ে থাকে এক চরম সত্য। দূর্গা অসুরকে তার অস্ত্রে বিদ্ধ করেছেন।

তাঁকে পদতলে পিষ্ট করেছেন। দেবীর পদস্পর্শে অসুরের মধ্যে উদয় হয়েছে চৈতন্যের। জেগেছে তার শুভবুদ্ধি। কিন্তু আমাদের সমাজে যেসব অসুর নিত্যদিন মানবতাকে তরিত করছে, তাকে পদদলিত করছে, তাদের শুভবুুদ্ধি কবে জাগ্রত হবে। নিত্য শুভ এবং অশুভের লড়াই চলছে আমাদের মনের ভিতর এবং সমাজে।

আমাদের প্রার্থনা, এই অসুরদের বিনাশ হোক। সমাজে তাদের উৎপীড়ন যতদিন না বন্ধ হবে ততদিন এই সমাজের অন্ধকার দূর হবে না। মানুষের মধ্যে চৈতন্য জাগ্রত না হলে শুভবোধ জাগবে না। মানুষই পারে নিজেকে আদ্যন্ত বদলে ফেলে মহামানব হয়ে উঠতে। তাইতো স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন, জীবন থেকে শিবে, নর থেকে নারায়ণে উত্তরণ।

আজ এই মহাসপ্তমীর সকালে সকল মানুষের মধ্যে দেবীর আশীর্বাদ সঞ্চায়িত হোক। ঘরে ঘরে জ্বলে উঠুক আনন্দের দীপশিখা। এই প্রার্থনা জানাই মায়ের কাছে। পুজোর দিনগুলি যেন ভালো কাটে। দিন আনা, দিন খাওয়া মানুষের সংখ্যা তো নেহাত কম নয়, তাদের মুখে হাসি ফুটুক।

আইন শৃংখলা পরিস্থিতি যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে। প্রত্যেকে তাদের ভূমিকা সুসংহতভাবে পালন করে সনাতন ধর্মীয় বাঙালির এই সেরা উৎসবকে আন্দমুখর করে তুলুক। লেখক- আইনজীবি ও সাংবাদিক।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১১:১৬:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪
২৪ বার পড়া হয়েছে

আজ মহাসপ্তমী- ঘরে ঘরে জ্বলে উঠুক আনন্দের দীপশিখা

আপডেট সময় ১১:১৬:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪

বছর ঘুরে আবার এল পুজো। সনাতন ধর্মাবলম্বী বাঙ্গালীর প্রাণের উৎসব দূর্গাপুজো।

আজ মহাসপ্তমী বিহিত পূজা। বাঙালীর ঘরে ঘরে আজ মা এসেছেন। তাই সমস্ত অন্ধকার কেটে গিয়ে চারিদিকের সবকিছু ঝলমল করে উঠেছে। আমাদের প্রার্থনা, উৎসবের সেই রঙিন আলো ছড়িয়ে পড়ুক প্রতিটি মানুষের প্রাণে।

দৈনন্দিন জীবনের গ্লানি, ক্লান্তি, অশান্তি ভুলে গিয়ে মানুষ এই উৎসবের স্রোতে গা ভাসিয়ে দিতে দিন গুনে। মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে আমরা বলতে চাই, মাগো আমাদের সুখ দাও, শান্তি দাও। তুমি তো মঙ্গলময়ী, জগৎজননী। মাগো তুমি এই সমাজে প্রতিটি মানুষকে বিশেষ করে মেয়েদের শক্তি জুগিয়ে তাদের জাগ্রত করো নবমহিমায়, নবশক্তিতে।

তাছাড়া সাধারণ মানুষও তো কত নিপীড়ন মুখ বুজে সহ্য করছে। অত্যাচারিতদের নেই লোকবল, অর্থবল কিংবা রাজনৈতিক বল। তাই তাদের মুখ লুকিয়ে থাকতে হচ্ছে। পাশাপাশি অত্যাচারীরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের বাধা দেওয়ার যেন কেউ নেই।

মানুষ কিন্তু এর বিনাশ চায়। মানুষ চায় শান্তি, স্বস্থি। তাদের প্রার্থনা, পুজোয় যে আলোর ঝরনাধারা দেখা যায়, তা যেন বছরভর থাকে। প্রতিটি মানুষ হোক আলোর উৎস। কেটে যাক তার মনের অন্ধকার।

শ্রী শ্রী চন্ডী থেকেই আমরা জানতে পারছি, দেবী দূর্গা অসুরকে বধ করার সময় ক্রোধান্বিত হয়ে বলেছিলেন, “ইথং যদা যদা বাধা দানবোত্থা ভবিষ্যতি/তদা তদাবতীর্য্যাহং করিষ্যাম্যরি-সংয়ম্”। অর্থাৎ যখনই দানবের অত্যাচারে এই পৃথিবী নিপীড়িত হবে, তখনই আমি আবির্ভূত হয়ে সেই দানবকে সংহার করব। অর্থাৎ সেই অসুর দমনের তত্ত্বের আড়ালে লুকিয়ে থাকে এক চরম সত্য। দূর্গা অসুরকে তার অস্ত্রে বিদ্ধ করেছেন।

তাঁকে পদতলে পিষ্ট করেছেন। দেবীর পদস্পর্শে অসুরের মধ্যে উদয় হয়েছে চৈতন্যের। জেগেছে তার শুভবুদ্ধি। কিন্তু আমাদের সমাজে যেসব অসুর নিত্যদিন মানবতাকে তরিত করছে, তাকে পদদলিত করছে, তাদের শুভবুুদ্ধি কবে জাগ্রত হবে। নিত্য শুভ এবং অশুভের লড়াই চলছে আমাদের মনের ভিতর এবং সমাজে।

আমাদের প্রার্থনা, এই অসুরদের বিনাশ হোক। সমাজে তাদের উৎপীড়ন যতদিন না বন্ধ হবে ততদিন এই সমাজের অন্ধকার দূর হবে না। মানুষের মধ্যে চৈতন্য জাগ্রত না হলে শুভবোধ জাগবে না। মানুষই পারে নিজেকে আদ্যন্ত বদলে ফেলে মহামানব হয়ে উঠতে। তাইতো স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন, জীবন থেকে শিবে, নর থেকে নারায়ণে উত্তরণ।

আজ এই মহাসপ্তমীর সকালে সকল মানুষের মধ্যে দেবীর আশীর্বাদ সঞ্চায়িত হোক। ঘরে ঘরে জ্বলে উঠুক আনন্দের দীপশিখা। এই প্রার্থনা জানাই মায়ের কাছে। পুজোর দিনগুলি যেন ভালো কাটে। দিন আনা, দিন খাওয়া মানুষের সংখ্যা তো নেহাত কম নয়, তাদের মুখে হাসি ফুটুক।

আইন শৃংখলা পরিস্থিতি যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে। প্রত্যেকে তাদের ভূমিকা সুসংহতভাবে পালন করে সনাতন ধর্মীয় বাঙালির এই সেরা উৎসবকে আন্দমুখর করে তুলুক। লেখক- আইনজীবি ও সাংবাদিক।