ঢাকা ০১:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিএনপিতে সর্বোচ্চ সতর্কতা

শায়েস্তাগঞ্জের বাণী ডেস্ক ,

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ডাকাতি, লুটতরাজ, দখলবাজি, চাঁদাবাজির একাধিক ঘটনায় এরই মধ্যে অতিষ্ঠ দেশবাসী। রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সময়ের সুবিধাভোগীরা এখন বিএনপির ‘নেতাকর্মী’ সেজে এই ধরনের ঘটনায় ঘটাচ্ছে এমন তথ্য পাচ্ছে দলটি। সঙ্গত কারণে সুবিধাবাদীদের জন্য দলের বদনাম কোনো অবস্থাতেই বরদাশত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে চলমান অস্থির পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে দায়িত্বশীল নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

গত সোমবার শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এর পরপরই দেশের বিভিন্ন স্থানের দৃশ্যপট পরিবর্তন হতে থাকে। বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা বিজয় উৎসব নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করতে থাকে। এমনি সময় সুবিধাভোগী একটি শ্রেণি শুরু করে বিভিন্ন স্থানে দখল, অগ্নিসংযোগ, চাঁদাবাজি ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা।

এসব ঘটনায় বিএনপির নেতাদের নাম ব্যবহার করে অনেক দুষ্কৃতকারী। এজন্য বিএনপির হাইকমান্ড জনগণের জানমাল রক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য দলের নেতাকর্মীদের বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া সিদ্ধান্ত নেয়।
বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান, দলের নেতাদের কাছে সারাদেশ থেকে নানা অপ্রতিকর তথ্য আসছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের নাম ভাঙ্গিয়ে বিগত কয়েক দিনের বিভিন্ন গোষ্ঠী ও দুষ্কৃতকারীরা দেশের জেলা উপজেলায় নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে চুরি, ডাকাতি, খুন রাহাজানি করছে।

সারাদেশের ঘরবাড়ি দখলের পাশাপাশি মিডিয়া হাউসগুলোতেও হামলা ঘটনা ঘটাচ্ছে। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, বিএনপি নেতাকর্মীরা পালা করে জনগণের জানমাল রক্ষার জন্য বিভিন্ন এলাকায় পাহারা দিচ্ছে। গত বুধবার রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কতিপয় দুষ্কৃতকারীরা বিশৃঙ্খলা ও ভয়-ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা ঘটায়। খবর পেয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব নেতাকর্মীদের নিয়ে পুরো এলাকায় মহড়া দেয়। পাশাপাশি আক্রান্ত সব প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কর্মকর্তা কর্মচারীদের খোঁজখবর নেন। একইসঙ্গে কোনো ধরনের সমস্যা হলে বিএনপি নেতাদের জানাতে স্থানীয় নেতাদের মোবাইল নম্বর দিয়ে যান।

এ বিষয়ে সাইফুল আলম নিরব যায়যায়দিনকে জানান, স্বৈরশাসকের পতনের পরে পুলিশ না থাকায় কতিপয় দুষ্কৃতকারীরা এর সুযোগ নিচ্ছে। তবে বিএনপি নেতাকর্মী প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করছে। প্রতিটি এলাকায় মাইকিং করে কোনো অসুবিধা হলে বিএনপি নেতাকর্মীদের জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। যে জানাচ্ছে তাৎক্ষণিক দলের নেতাকর্মীরা ছুটে যাচ্ছে। কেউ আক্রমণ করতে আসলে তাদেরকে প্রতিহত ও সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

শুধু সাধারণ মানুষের জন্যই নয় আওয়ামী লীগ নেতাদের জানমাল রক্ষায়ও ছুটে যাচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
আওয়ামী লীগের পতনের পর পরই কৃষক লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আব্দুস সালাম বাবুর রাজধানীর ৮১৭ নম্বর দনিয়ার ৫ তলা বাড়িটি দখলে নেয় তার ভাইস্তা কামাল হোসেন। নিজেকে সে বিএনপি নেতা হিসেবে দাবি করে এই বাড়ি থেকে দলিলসহ মূল্যবান বেশ কছিু জিনিস লুট করে। বিষয়টি জানতে পেরে এই বাড়িটি দখলমুক্ত করে মালিককে ফিরিয়ে দেওয়া তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেন ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন।

যোগাযোগ করা হলে রবিন জানান, ‘বর্তমান অস্থির অবস্থায় দলের হাইকমান্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী শান্তি বজায় রাখতে ঢাকার প্রতিটি জনগণের খোঁজ-খবর রাখার চেষ্টা করছেন তারা। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রতিহিংসা পরায়ন না হয়ে সবাইকে ক্ষমার কথা বলেছেন। এজন্য আমরা সবার জানমাল রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছি। যেখানেই অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাচ্ছি সঙ্গে সঙ্গে নিজে গিয়ে বা নেতাকর্মী পাঠিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। এলাকায় মাইকিং করে জানানো হচ্ছে, কোনো অভিযোগ থাকলে মাইকে ঘোষণা করা মোবাইল নাম্বারে যেন জানানো হয়। যেই অভিযোগ জানাচ্ছে তাৎক্ষণিক সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।’

এদিকে বুধবার রাজধানীর পল্টন এলাকায় ‘রাঁধুনী রেস্টুরেন্ট’ মালিকের কাছে চাঁদা দাবি করার ঘটনা জানার পরপরই সেখানে ছুটে যান যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম নয়নসহ অনেকে। পরে সেখানে দু’জনকে আটক করে শাস্তি দেওয়া হয়। এ রকম শুধু রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মী পরিচয়ে ‘নব্য’ দখলদারের উদয় ঘটেছে বলে বিএনপির নেতারা জানান। জানা গেছে, প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছে। সন্ত্রাসী, নৈরাজ্যকারী ও চাঁদাবাজদের ধরতে গত বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে প্রতিটি ওয়ার্ডে মাইকিং শুরু করেছে। দলের নেতাকর্মীকেও সর্বোচ্চ সতর্ক করা হয়েছে। যদি কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের হুঁশিয়ারি রয়েছে।

জানা গেছে, ঢাকা সিটি করপোরেশনের বিএনপি সমর্থিত যত কাউন্সিলর ছিলেন এবং দলের সমর্থনে যারা প্রার্থী হয়েছিলেন তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন গত সিটি করপোরসনের নির্বাচনে ঢাকা উত্তরের বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। বৈঠকে শহরে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিএনপি নেতাকর্মীদের পালা করে পাহারা দেওয়াসহ নানা বিষয়ে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেন তিনি।

বিএনপি সূত্রমতে, অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে এবার বিএনপি বেশ সতর্ক। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে এরই মধ্যে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিএনপির ওয়ার্ড থেকে জাতীয় পর্যায় এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ওয়ার্ড থেকে কেন্দ্রীয় কমিটি পর্যন্ত কোনো স্তরেরই কমিটিতে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী বা অরাজনৈতিক ব্যক্তিকে যোগদান করানো যাবে না বলে এরইমধ্যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করে সেনাবাহিনীর কাছে তুলে দিন : রিজভী

শনিবার বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করে সেনাবাহিনীর কাছে তুলে দিন। অনেক দুষ্কৃতকারী বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে পাড়া-মহল্লায় বাসা-বাড়ি কলকারখানা ভাঙচুর করছে নানা ধরনের অপতৎপরতা চালাচ্ছে। গণতন্ত্রের এই অর্জনকে বিনষ্ট করার জন্য নানা তৎপরতা চালাচ্ছে। বিভিন্ন মসজিদ মন্দিরে হামলা চালানোর চেষ্টা করছে। এই অপতৎপরতাকারীদের চিহ্নিত করে সেনাবাহিনীর কাছে তুলে দিতে হবে।

এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডক্টর আসাদুজ্জামান রিপন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি রফিকুল আলম মজনু, উত্তরের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১১:১৭:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ অগাস্ট ২০২৪
৩২ বার পড়া হয়েছে

বিএনপিতে সর্বোচ্চ সতর্কতা

আপডেট সময় ১১:১৭:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ অগাস্ট ২০২৪

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ডাকাতি, লুটতরাজ, দখলবাজি, চাঁদাবাজির একাধিক ঘটনায় এরই মধ্যে অতিষ্ঠ দেশবাসী। রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সময়ের সুবিধাভোগীরা এখন বিএনপির ‘নেতাকর্মী’ সেজে এই ধরনের ঘটনায় ঘটাচ্ছে এমন তথ্য পাচ্ছে দলটি। সঙ্গত কারণে সুবিধাবাদীদের জন্য দলের বদনাম কোনো অবস্থাতেই বরদাশত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে চলমান অস্থির পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে দায়িত্বশীল নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

গত সোমবার শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এর পরপরই দেশের বিভিন্ন স্থানের দৃশ্যপট পরিবর্তন হতে থাকে। বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা বিজয় উৎসব নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করতে থাকে। এমনি সময় সুবিধাভোগী একটি শ্রেণি শুরু করে বিভিন্ন স্থানে দখল, অগ্নিসংযোগ, চাঁদাবাজি ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা।

এসব ঘটনায় বিএনপির নেতাদের নাম ব্যবহার করে অনেক দুষ্কৃতকারী। এজন্য বিএনপির হাইকমান্ড জনগণের জানমাল রক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য দলের নেতাকর্মীদের বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া সিদ্ধান্ত নেয়।
বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান, দলের নেতাদের কাছে সারাদেশ থেকে নানা অপ্রতিকর তথ্য আসছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের নাম ভাঙ্গিয়ে বিগত কয়েক দিনের বিভিন্ন গোষ্ঠী ও দুষ্কৃতকারীরা দেশের জেলা উপজেলায় নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে চুরি, ডাকাতি, খুন রাহাজানি করছে।

সারাদেশের ঘরবাড়ি দখলের পাশাপাশি মিডিয়া হাউসগুলোতেও হামলা ঘটনা ঘটাচ্ছে। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, বিএনপি নেতাকর্মীরা পালা করে জনগণের জানমাল রক্ষার জন্য বিভিন্ন এলাকায় পাহারা দিচ্ছে। গত বুধবার রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কতিপয় দুষ্কৃতকারীরা বিশৃঙ্খলা ও ভয়-ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা ঘটায়। খবর পেয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব নেতাকর্মীদের নিয়ে পুরো এলাকায় মহড়া দেয়। পাশাপাশি আক্রান্ত সব প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কর্মকর্তা কর্মচারীদের খোঁজখবর নেন। একইসঙ্গে কোনো ধরনের সমস্যা হলে বিএনপি নেতাদের জানাতে স্থানীয় নেতাদের মোবাইল নম্বর দিয়ে যান।

এ বিষয়ে সাইফুল আলম নিরব যায়যায়দিনকে জানান, স্বৈরশাসকের পতনের পরে পুলিশ না থাকায় কতিপয় দুষ্কৃতকারীরা এর সুযোগ নিচ্ছে। তবে বিএনপি নেতাকর্মী প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করছে। প্রতিটি এলাকায় মাইকিং করে কোনো অসুবিধা হলে বিএনপি নেতাকর্মীদের জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। যে জানাচ্ছে তাৎক্ষণিক দলের নেতাকর্মীরা ছুটে যাচ্ছে। কেউ আক্রমণ করতে আসলে তাদেরকে প্রতিহত ও সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

শুধু সাধারণ মানুষের জন্যই নয় আওয়ামী লীগ নেতাদের জানমাল রক্ষায়ও ছুটে যাচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
আওয়ামী লীগের পতনের পর পরই কৃষক লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আব্দুস সালাম বাবুর রাজধানীর ৮১৭ নম্বর দনিয়ার ৫ তলা বাড়িটি দখলে নেয় তার ভাইস্তা কামাল হোসেন। নিজেকে সে বিএনপি নেতা হিসেবে দাবি করে এই বাড়ি থেকে দলিলসহ মূল্যবান বেশ কছিু জিনিস লুট করে। বিষয়টি জানতে পেরে এই বাড়িটি দখলমুক্ত করে মালিককে ফিরিয়ে দেওয়া তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেন ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন।

যোগাযোগ করা হলে রবিন জানান, ‘বর্তমান অস্থির অবস্থায় দলের হাইকমান্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী শান্তি বজায় রাখতে ঢাকার প্রতিটি জনগণের খোঁজ-খবর রাখার চেষ্টা করছেন তারা। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রতিহিংসা পরায়ন না হয়ে সবাইকে ক্ষমার কথা বলেছেন। এজন্য আমরা সবার জানমাল রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছি। যেখানেই অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাচ্ছি সঙ্গে সঙ্গে নিজে গিয়ে বা নেতাকর্মী পাঠিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। এলাকায় মাইকিং করে জানানো হচ্ছে, কোনো অভিযোগ থাকলে মাইকে ঘোষণা করা মোবাইল নাম্বারে যেন জানানো হয়। যেই অভিযোগ জানাচ্ছে তাৎক্ষণিক সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।’

এদিকে বুধবার রাজধানীর পল্টন এলাকায় ‘রাঁধুনী রেস্টুরেন্ট’ মালিকের কাছে চাঁদা দাবি করার ঘটনা জানার পরপরই সেখানে ছুটে যান যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম নয়নসহ অনেকে। পরে সেখানে দু’জনকে আটক করে শাস্তি দেওয়া হয়। এ রকম শুধু রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মী পরিচয়ে ‘নব্য’ দখলদারের উদয় ঘটেছে বলে বিএনপির নেতারা জানান। জানা গেছে, প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছে। সন্ত্রাসী, নৈরাজ্যকারী ও চাঁদাবাজদের ধরতে গত বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে প্রতিটি ওয়ার্ডে মাইকিং শুরু করেছে। দলের নেতাকর্মীকেও সর্বোচ্চ সতর্ক করা হয়েছে। যদি কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের হুঁশিয়ারি রয়েছে।

জানা গেছে, ঢাকা সিটি করপোরেশনের বিএনপি সমর্থিত যত কাউন্সিলর ছিলেন এবং দলের সমর্থনে যারা প্রার্থী হয়েছিলেন তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন গত সিটি করপোরসনের নির্বাচনে ঢাকা উত্তরের বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। বৈঠকে শহরে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিএনপি নেতাকর্মীদের পালা করে পাহারা দেওয়াসহ নানা বিষয়ে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেন তিনি।

বিএনপি সূত্রমতে, অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে এবার বিএনপি বেশ সতর্ক। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে এরই মধ্যে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিএনপির ওয়ার্ড থেকে জাতীয় পর্যায় এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ওয়ার্ড থেকে কেন্দ্রীয় কমিটি পর্যন্ত কোনো স্তরেরই কমিটিতে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী বা অরাজনৈতিক ব্যক্তিকে যোগদান করানো যাবে না বলে এরইমধ্যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করে সেনাবাহিনীর কাছে তুলে দিন : রিজভী

শনিবার বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করে সেনাবাহিনীর কাছে তুলে দিন। অনেক দুষ্কৃতকারী বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে পাড়া-মহল্লায় বাসা-বাড়ি কলকারখানা ভাঙচুর করছে নানা ধরনের অপতৎপরতা চালাচ্ছে। গণতন্ত্রের এই অর্জনকে বিনষ্ট করার জন্য নানা তৎপরতা চালাচ্ছে। বিভিন্ন মসজিদ মন্দিরে হামলা চালানোর চেষ্টা করছে। এই অপতৎপরতাকারীদের চিহ্নিত করে সেনাবাহিনীর কাছে তুলে দিতে হবে।

এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডক্টর আসাদুজ্জামান রিপন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি রফিকুল আলম মজনু, উত্তরের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।