ঢাকা ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে র‌্যাবের অভিযান, ৯ জনকে কারাদন্ড Logo হবিগঞ্জ পৌরসভার কোটি টাকার অব্যবহৃত যানে গজিয়েছে গাছ Logo দুটি স্পেশাল ট্রেন চালুসহ ৯ দফা দাবীতে শায়েস্তাগঞ্জ রেলস্টেশনে মানববন্ধন পালন Logo হবিগঞ্জ থেকে প্রতিদিন মিলবে আরও ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস Logo নবীগঞ্জে পিতার দায়ের কোপে মেয়ে খুন,ঘাতক পিতা আটক। Logo হবিগঞ্জে বাস উল্টে যুবকের মৃত্যু, আহত ৫০ Logo তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে শায়েস্তাগঞ্জে ফুটবল টুর্নামেন্টের সমাপনী অনুষ্ঠিত Logo শায়েস্তাগঞ্জ অলিপুরে ২২০ বস্তা ভারতীয় জিরা জব্দ ॥ চালক ও হেলপার আটক Logo চুনারুঘাটে ৫০ লক্ষ টাকার সিলিকা বালু জব্দ Logo শায়েস্তাগঞ্জ মানব কল্যাণ পরিষদের ৫ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে সভা ও সম্মাননা প্রদান

রাজনগরে নিয়োগে স্বজনপ্রীতি ও দলীয় প্রভাবের অভিযোগ

অলি আহমদ মাহিন, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার সোনাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক পদে আওয়ামীলীগ নেতা ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি’র ভাতিজাকে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে নিয়োগ বঞ্চিত মোহাম্মদ দেলোওয়ার হোসাইন নামে এক প্রার্থী জেলা প্রশাসক সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। একই অভিযোগ করেন পরীক্ষায় অংশ গ্রহণকারী এমরানুল ইসলাম রিপন ও আব্দুল মোতালিব।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, বিগত ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট সোনাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় অফিস সহায়ক পদে মোহাম্মদ দেলোওয়ার হোসাইন প্রথম হন। একই পদে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির তৎকালিন সভাপতি আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল হাকিম রাজ এর ভাতিজা শাহান আহমদ সহ আরও ৩জন অংশ গ্রহণ করেন। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সহ নিয়োগ বোর্ডের সদস্যরা অফিস সহায়ক পদে মোহাম্মদ দেলোওয়ার হোসাইন’কে চুড়ান্ত করার জন্য বলেন। কিন্তু অফিস সহায়ক পদে সভাপতির ভাতিজা’কে নিয়োগ দেয়ার জন্য নিয়োগ বোর্ডের উপর চাপ প্রয়োগ করেন ওই আওয়ামীলীগ নেতা। এনিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এ নিয়োগ চুড়ান্ত করার জন্য পরবর্তীতে জেলা শিক্ষা অফিসার একাধিকবার বললেও উত্তির্ণদের চুড়ান্ত করা হয়নি। নির্ধারিত সময় চলে যাওয়ায় পরবর্তীতে ফের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। দ্বিতীয় বার নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হয় ৩ আগস্ট। তখন সারা দেশে ছাত্র আন্দোলন চললেও তাড়াহুড়া করে পরীক্ষা নেয়া হয়। ওই দিনও মোহাম্মদ দেলোওয়ার হোসাইন ভালোভাবে উত্তর লেখার পরেও নিয়োগ বোর্ড প্রভাবিত হয়ে সভাপতির বাতিজা শাহান আহমদকে চুড়ান্ত করেন।

পরীক্ষায় অংশ গ্রহণকারী এমরানুল কবির রিপন ও আব্দুল মোতালিব বলেন, কয়েকবার আবেদন করে অনেক টাকা খরচ করেছি। পরীক্ষাও ভালো হওয়ার পরেও চাকুরি হয়নি। স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে তৎকালিন সভাপতি আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল হাকিম রাজের ভাতিজা শাহান আহমদকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আমরা এ নিয়োগ বাতিল দাবি করছি।

সাবেক সভাপতি আব্দুল হাকিম রাজ বলেন, প্রথম পরীক্ষার প্রশ্ন জেলা শিক্ষা অফিসার নিজে একা রেডি করে নিয়ে আসায় আমরা এ নিয়োগ বাতিল করেছি। এনিয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে আমার বাকবিতন্ড হয়েছে। কিন্তু পরবর্তী নিয়োগ বোর্ডের আমি সদস্য ছিলাম তবে আমি প্রভাবিত করিনি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ইমাম উদ্দিন বলেন, অভিযোগ আমিও পেয়েছি। বিষয়টা নিয়ে আমরা বসব। পূর্বের নিয়োগ বাতিল হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, জেলা শিক্ষা অফিসার প্রশ্ন তৈরি করে নিয়ে আসার কারণে বাতিল হয়েছে। তখন জেলা শিক্ষা অফিসার ও তৎকালিন সভাপতির মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়।

রাজনগর উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা মো: জুলফিকার আলম বলেন, অভিযোগ এলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, প্রথম নিয়োগ পরীক্ষার সদস্য হিসেবে আমি উপস্থিত ছিলাম। এ পরীক্ষায় উত্তির্ণদের চুড়ান্ত নিয়োগ দেয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটিকে বলে আসি। কিন্তু কমিটি ও প্রধান শিক্ষক এদের নিয়োগ দেননি। পরবর্তী নিয়োগে আমি ছিলাম না। যেহেতু এ নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে তাই আমি চুড়ান্ত অনুমোদন দেব না।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৭:১৪:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
১০৬ বার পড়া হয়েছে

রাজনগরে নিয়োগে স্বজনপ্রীতি ও দলীয় প্রভাবের অভিযোগ

আপডেট সময় ০৭:১৪:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার সোনাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক পদে আওয়ামীলীগ নেতা ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি’র ভাতিজাকে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে নিয়োগ বঞ্চিত মোহাম্মদ দেলোওয়ার হোসাইন নামে এক প্রার্থী জেলা প্রশাসক সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। একই অভিযোগ করেন পরীক্ষায় অংশ গ্রহণকারী এমরানুল ইসলাম রিপন ও আব্দুল মোতালিব।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, বিগত ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট সোনাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় অফিস সহায়ক পদে মোহাম্মদ দেলোওয়ার হোসাইন প্রথম হন। একই পদে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির তৎকালিন সভাপতি আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল হাকিম রাজ এর ভাতিজা শাহান আহমদ সহ আরও ৩জন অংশ গ্রহণ করেন। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সহ নিয়োগ বোর্ডের সদস্যরা অফিস সহায়ক পদে মোহাম্মদ দেলোওয়ার হোসাইন’কে চুড়ান্ত করার জন্য বলেন। কিন্তু অফিস সহায়ক পদে সভাপতির ভাতিজা’কে নিয়োগ দেয়ার জন্য নিয়োগ বোর্ডের উপর চাপ প্রয়োগ করেন ওই আওয়ামীলীগ নেতা। এনিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এ নিয়োগ চুড়ান্ত করার জন্য পরবর্তীতে জেলা শিক্ষা অফিসার একাধিকবার বললেও উত্তির্ণদের চুড়ান্ত করা হয়নি। নির্ধারিত সময় চলে যাওয়ায় পরবর্তীতে ফের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। দ্বিতীয় বার নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হয় ৩ আগস্ট। তখন সারা দেশে ছাত্র আন্দোলন চললেও তাড়াহুড়া করে পরীক্ষা নেয়া হয়। ওই দিনও মোহাম্মদ দেলোওয়ার হোসাইন ভালোভাবে উত্তর লেখার পরেও নিয়োগ বোর্ড প্রভাবিত হয়ে সভাপতির বাতিজা শাহান আহমদকে চুড়ান্ত করেন।

পরীক্ষায় অংশ গ্রহণকারী এমরানুল কবির রিপন ও আব্দুল মোতালিব বলেন, কয়েকবার আবেদন করে অনেক টাকা খরচ করেছি। পরীক্ষাও ভালো হওয়ার পরেও চাকুরি হয়নি। স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে তৎকালিন সভাপতি আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল হাকিম রাজের ভাতিজা শাহান আহমদকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আমরা এ নিয়োগ বাতিল দাবি করছি।

সাবেক সভাপতি আব্দুল হাকিম রাজ বলেন, প্রথম পরীক্ষার প্রশ্ন জেলা শিক্ষা অফিসার নিজে একা রেডি করে নিয়ে আসায় আমরা এ নিয়োগ বাতিল করেছি। এনিয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে আমার বাকবিতন্ড হয়েছে। কিন্তু পরবর্তী নিয়োগ বোর্ডের আমি সদস্য ছিলাম তবে আমি প্রভাবিত করিনি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ইমাম উদ্দিন বলেন, অভিযোগ আমিও পেয়েছি। বিষয়টা নিয়ে আমরা বসব। পূর্বের নিয়োগ বাতিল হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, জেলা শিক্ষা অফিসার প্রশ্ন তৈরি করে নিয়ে আসার কারণে বাতিল হয়েছে। তখন জেলা শিক্ষা অফিসার ও তৎকালিন সভাপতির মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়।

রাজনগর উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা মো: জুলফিকার আলম বলেন, অভিযোগ এলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, প্রথম নিয়োগ পরীক্ষার সদস্য হিসেবে আমি উপস্থিত ছিলাম। এ পরীক্ষায় উত্তির্ণদের চুড়ান্ত নিয়োগ দেয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটিকে বলে আসি। কিন্তু কমিটি ও প্রধান শিক্ষক এদের নিয়োগ দেননি। পরবর্তী নিয়োগে আমি ছিলাম না। যেহেতু এ নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে তাই আমি চুড়ান্ত অনুমোদন দেব না।