ঢাকা ১২:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo নিখোঁজের ৫ দিন পর উদ্ধার অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর লাশ, স্বামী গ্রেপ্তার Logo চুনারুঘাটে জমি বিরোধে কৃষক খুন Logo হবিগঞ্জে নিজ ঘর থেকে গৃহবধূর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার Logo বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, আজকের তারুণ্যের প্রতি আমাদের অনেক প্রত্যাশা। এই জাতি অর্ধশতাব্দি ধরে পিছিয়ে আছে সঠিক ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে। অনেক অনেক নেতা আমরা পেয়েছি। অনেক বড় পরিচয় আমরা তাদের দিয়েছি। অনেক সম্মোধন আমরা করেছি। তারা কর্যত দায়িত্ব পেয়েই প্রমাণ করেছেন যে তারা এটার জন্য সঠিক ছিলেন না। যেমন শেখ মুজিবুর রহমানকে বলা হতো গণতন্ত্রের জন্য তিনি লড়াই করেছেন কিন্তু দায়িত্ব পেয়ে তিনি সবচেয়ে বড় স্বৈরাচার হয়েছেন। ঠিক তেমনি হাসিনাও। বাবা আর মেয়ে মিলে যৌথ চ্যাম্পিয়ান। এই ধরণের মানসিকতার দল একটি জাতি ও মানবতার জন্য ধ্বংস আর ধ্বংস। আমরা এধরণের ফ্যাসিবাদ থেকে স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত একটি বাংলাদেশ দেখতে চাই। যে বাংলাদেশের জন্য আবু সাঈদ, মুগ্ধ আর ওয়াসিমরা রক্তি দিয়েছেন। সেই বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব নতুন প্রজন্মকে নিতে হবে। নিজেদেরকে গড়তে হবে বাংলাদেশ গড়ার জন্যও প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ তোমাকে আল্লাহ একটি মেধার সম্পদ দিয়েছেন। সেই সম্পদ, দেশ জাতি ও উম্মাহর জন্য কাজে লাগাতে হবে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে শিল্পকলা একাডেমীর অডিটোরিয়ামে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা নিজেকে জানার চেষ্টা করো। নিজের লক্ষ্য ও গোল ঠিক করো। আল্লাহর কাছে দোয়া করো, যেন তিনি সঠিক ও যথার্থ লক্ষ্য ঠিক করার তাওফিক দান করেন। আগামীর বাংলাদেশ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আবু সাঈদ, মুগ্ধ আর ওয়াসিমের বাংলাদেশ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। এই সমাজেই এই মানুষ তৈরী হয়েছেন যারা- সমাজের পরিবর্তনের জন্য অবলিলায় নিজেদের রক্ত দিয়েছেন। মেহরীনের মতো শিক্ষকরা এখনো আছেন। যারা শুধু শিক্ষক নন, মায়ের মতো নিজের জীবনে বিপন্ন করে অন্তত বিশটি শিশুকে বাঁচিয়েছেন। কতো মহান আর মহৎ হৃদয়ের মানুষ। এই দেশে যেন আর হাসিনারা তৈরী না হয়। এই দেশে আর যাতে ফ্যাসিবাদ তৈরী না হয়। আর যেন স্বৈরশাসন তৈরী না হয়। হাসিনাও তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তেন। দিনের বেলায় তাহাজ্জুদগুজারি এরকম নেতা নেত্রীর হাত থেকে যেন আল্লাহ বাংলাদেশকে রক্ষা করেন। শুধূ নামাজ দিয়ে ভাল ও খারাপ মানুষ চিনতে পারবেন না। আমার চরিত্র, লেনদেনসহ সামগ্রীক জীবন দিয়েই বুঝতে হবে। ইসলামী ছাত্রশিবিরের শহর সভাপতি তারেক আজিজের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী কাজী দাইয়ান আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও শাবিপ্রবির সভাপতি তারেক মনোয়ার, জেলা জামায়াতের আমীর ইঞ্জিনিয়ার এম শাহেদ আলী, ইউনিভার্সেল কলেজের প্রভাষক রেজাউল ইসলাম, বিশিষ্ট সমাজসেবক ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি এম. ফরিদ উদ্দিন, সাবেক জেলা সভাপতি এডভোকেট কামরুল ইসলাম, জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা, অভিভাবকরা। সংগীত পরিবেশনা করে মৌলভীবাজার সাংস্কৃতিক সংসদ-মৌসাস ও জলপ্রপাত সাংস্কৃতিক সংসদ। জেলা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় চার শত জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। Logo নবীগঞ্জে “জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ পাঠ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo হবিগঞ্জ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ পুলিশ সুপার Logo বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে- নাহিদ ইসলাম Logo হবিগঞ্জে অর্ধশতাধিক দোকানপাট উচ্ছেদ Logo শায়েস্তাগঞ্জে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু Logo চুনারুঘাটে ঢলে ভেসে গেছে ব্রিজ, দুর্ভোগে মানুষ

হবিগঞ্জে হাওরে ধানকাটা শ্রমিকের তীব্র সংকট

নিজস্ব প্রতিবেদক

হবিগঞ্জের হাওরে ধানকাটা শ্রমিকের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। যে কারণে পাকা ধান এখন কাটতে পারছেন না অনেক কৃষক। এমতাবস্থায় অতিবৃষ্টি ও শিলা বৃষ্টির আশঙ্কায় দিন কাটছে হাওর পারের কৃষকদের। কৃষকরা জানান- এবার চৈত্র মাসে হাওরে বৃষ্টি হয়নি। যে কারণে বৈশাখ মাসে অতিবৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আগে রোপনকৃত পাকা ধান কাটতে তোরজোর চালাচ্ছেন তারা। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে তা ব্যহত হচ্ছে। ফলে সময় মতো কৃষকের স্বপ্নের ধান গোলায় তোলা নিয়ে দেখা দিয়েছে দুশ্চিন্তা। তারা বলছেন- বৈশাখ মাস শুরু হয়ে গেলেও জেলার বাহির থেকে এখনও শ্রমিক আসা শুরু করেনি। যে কারণে অল্প সংখ্যক দেশীয় শ্রমিক দিয়ে চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না। এছাড়াও নামে মাত্র যেসকল দেশীয় শ্রমিক ধান কাটছেন তারাও মুজুরি নিচ্ছেন বেশি।
হবিগঞ্জ জেলা একটি হাওর-বাওর বেষ্টিত জেলা। এ জেলার বেশিরভাগ মানুষ কৃষি কাজের সাথে জড়িত। কৃষি কাজের উপরই নির্ভর করে তাদের জীবন জীবিকা। তাইতো বৈশাখ মাস শুরু হলেই ধুম পড়ে ধান কাটার। উৎসবের মতো কৃষকরা গোলায় ভরে ধান। হবিগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যমতে- এবার জেলার ৯টি উপজেলায় শতাধিক হাওরে ১ লাখ ২৩ হাজার ৮৮৪ হেক্টর জমিতে ৩ ধরনের বোরো ধান আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে ৫০ হাজার ৮৮৫ হেক্টর হাইব্রিড, উফসী জাতের ৭২ হাজার ৮০১ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ধান আবাদ হয় ৫০ হেক্টর জমিতে। হাইব্রিড জাতে হেক্টরপ্রতি ৪ দশমিক ৬৮ টন, উৎসীতে ৬ দশমিক ৯৩ টন ও স্থানীয় জাতের ধান থেকে প্রতি হেক্টর থেকে ১ দশমিক ৯ টন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। সে অনুযায়ী বোরো থেকে হবিগঞ্জে ৫ লাখ ২৬ হাজার ৩৪৯ টন চাল উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ধানের হিসাবে গেলে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৭ লাখ ৮৬ হাজার ৫১৮ টনে।
শ্রমিক সংকট নিয়ে বানিয়াচং উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের লাদেন চৌধুরী বলেন- হাওরে ধান পেকে গেছে। কিন্তু স্থানীয় শ্রমিককের জন্য গত তিন দিন যাবত ঘুরছি পাচ্ছি না। শ্রমিকের সংখ্যা কম হওয়ায় তাদের চাহিদা যেমন বেশি আবার সময় মতো তাদেরকে পাওয়া যাচ্ছে না। যে কারণে ঝড় বা শিলাবৃষ্টি হলে পাকা ধানের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বদলপুর গ্রামের কৃষক মতিউর রহমান বলেন- স্থানীয় শ্রমিক দিয়ে হাওরের সকল ধান কাটা সম্ভব না। জেলার বাহির থেকে শ্রমিক না আসলে এই সংকট কাটবে না। বৈশাখের শুরুতে জেলার বাহির থেকে কিছু কিছু শ্রমিক এসেছে তবে তা যথেষ্ট নয়। লাখাই উপজেলার স্বজন গ্রামের বাসিন্দা সুশীল দাস বলেন- এরই মধ্যে আমার অন্তত ৫ ক্ষের জমির ধান পেকে গেছে। শ্রমিক না পাওয়ায় কাটাতে পারছি না। তিনি বলেন- পাকা ধান বেশিদিন জমিতে থাকলে ঝড়ে যাবে। তাই আমি দেশী শ্রমিকদের খুঁজতেছি।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জ জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আক্তারুজ্জামান বলেন- এখনও পুরোপুরি ধান কাটা শুরু হয়নি। হাওরে যেসকল ধান পেকেছে তা স্থানীয় শ্রমিকরা কাটছেন। একই সাথে হারভেস্টার মেশিন দিয়েও ধান কাটা হচ্ছে। তিনি বলেন- আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই জেলার বাইরে থেকে শ্রমিক আসা শুরু করবে। তারা আসলেই শ্রমিক সংকট কেটে যাবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৩:২২:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
৪৯ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, আজকের তারুণ্যের প্রতি আমাদের অনেক প্রত্যাশা। এই জাতি অর্ধশতাব্দি ধরে পিছিয়ে আছে সঠিক ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে। অনেক অনেক নেতা আমরা পেয়েছি। অনেক বড় পরিচয় আমরা তাদের দিয়েছি। অনেক সম্মোধন আমরা করেছি। তারা কর্যত দায়িত্ব পেয়েই প্রমাণ করেছেন যে তারা এটার জন্য সঠিক ছিলেন না। যেমন শেখ মুজিবুর রহমানকে বলা হতো গণতন্ত্রের জন্য তিনি লড়াই করেছেন কিন্তু দায়িত্ব পেয়ে তিনি সবচেয়ে বড় স্বৈরাচার হয়েছেন। ঠিক তেমনি হাসিনাও। বাবা আর মেয়ে মিলে যৌথ চ্যাম্পিয়ান। এই ধরণের মানসিকতার দল একটি জাতি ও মানবতার জন্য ধ্বংস আর ধ্বংস। আমরা এধরণের ফ্যাসিবাদ থেকে স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত একটি বাংলাদেশ দেখতে চাই। যে বাংলাদেশের জন্য আবু সাঈদ, মুগ্ধ আর ওয়াসিমরা রক্তি দিয়েছেন। সেই বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব নতুন প্রজন্মকে নিতে হবে। নিজেদেরকে গড়তে হবে বাংলাদেশ গড়ার জন্যও প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ তোমাকে আল্লাহ একটি মেধার সম্পদ দিয়েছেন। সেই সম্পদ, দেশ জাতি ও উম্মাহর জন্য কাজে লাগাতে হবে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে শিল্পকলা একাডেমীর অডিটোরিয়ামে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা নিজেকে জানার চেষ্টা করো। নিজের লক্ষ্য ও গোল ঠিক করো। আল্লাহর কাছে দোয়া করো, যেন তিনি সঠিক ও যথার্থ লক্ষ্য ঠিক করার তাওফিক দান করেন। আগামীর বাংলাদেশ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আবু সাঈদ, মুগ্ধ আর ওয়াসিমের বাংলাদেশ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। এই সমাজেই এই মানুষ তৈরী হয়েছেন যারা- সমাজের পরিবর্তনের জন্য অবলিলায় নিজেদের রক্ত দিয়েছেন। মেহরীনের মতো শিক্ষকরা এখনো আছেন। যারা শুধু শিক্ষক নন, মায়ের মতো নিজের জীবনে বিপন্ন করে অন্তত বিশটি শিশুকে বাঁচিয়েছেন। কতো মহান আর মহৎ হৃদয়ের মানুষ। এই দেশে যেন আর হাসিনারা তৈরী না হয়। এই দেশে আর যাতে ফ্যাসিবাদ তৈরী না হয়। আর যেন স্বৈরশাসন তৈরী না হয়। হাসিনাও তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তেন। দিনের বেলায় তাহাজ্জুদগুজারি এরকম নেতা নেত্রীর হাত থেকে যেন আল্লাহ বাংলাদেশকে রক্ষা করেন। শুধূ নামাজ দিয়ে ভাল ও খারাপ মানুষ চিনতে পারবেন না। আমার চরিত্র, লেনদেনসহ সামগ্রীক জীবন দিয়েই বুঝতে হবে। ইসলামী ছাত্রশিবিরের শহর সভাপতি তারেক আজিজের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী কাজী দাইয়ান আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও শাবিপ্রবির সভাপতি তারেক মনোয়ার, জেলা জামায়াতের আমীর ইঞ্জিনিয়ার এম শাহেদ আলী, ইউনিভার্সেল কলেজের প্রভাষক রেজাউল ইসলাম, বিশিষ্ট সমাজসেবক ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি এম. ফরিদ উদ্দিন, সাবেক জেলা সভাপতি এডভোকেট কামরুল ইসলাম, জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা, অভিভাবকরা। সংগীত পরিবেশনা করে মৌলভীবাজার সাংস্কৃতিক সংসদ-মৌসাস ও জলপ্রপাত সাংস্কৃতিক সংসদ। জেলা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় চার শত জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

হবিগঞ্জে হাওরে ধানকাটা শ্রমিকের তীব্র সংকট

আপডেট সময় ০৩:২২:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

হবিগঞ্জের হাওরে ধানকাটা শ্রমিকের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। যে কারণে পাকা ধান এখন কাটতে পারছেন না অনেক কৃষক। এমতাবস্থায় অতিবৃষ্টি ও শিলা বৃষ্টির আশঙ্কায় দিন কাটছে হাওর পারের কৃষকদের। কৃষকরা জানান- এবার চৈত্র মাসে হাওরে বৃষ্টি হয়নি। যে কারণে বৈশাখ মাসে অতিবৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আগে রোপনকৃত পাকা ধান কাটতে তোরজোর চালাচ্ছেন তারা। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে তা ব্যহত হচ্ছে। ফলে সময় মতো কৃষকের স্বপ্নের ধান গোলায় তোলা নিয়ে দেখা দিয়েছে দুশ্চিন্তা। তারা বলছেন- বৈশাখ মাস শুরু হয়ে গেলেও জেলার বাহির থেকে এখনও শ্রমিক আসা শুরু করেনি। যে কারণে অল্প সংখ্যক দেশীয় শ্রমিক দিয়ে চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না। এছাড়াও নামে মাত্র যেসকল দেশীয় শ্রমিক ধান কাটছেন তারাও মুজুরি নিচ্ছেন বেশি।
হবিগঞ্জ জেলা একটি হাওর-বাওর বেষ্টিত জেলা। এ জেলার বেশিরভাগ মানুষ কৃষি কাজের সাথে জড়িত। কৃষি কাজের উপরই নির্ভর করে তাদের জীবন জীবিকা। তাইতো বৈশাখ মাস শুরু হলেই ধুম পড়ে ধান কাটার। উৎসবের মতো কৃষকরা গোলায় ভরে ধান। হবিগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যমতে- এবার জেলার ৯টি উপজেলায় শতাধিক হাওরে ১ লাখ ২৩ হাজার ৮৮৪ হেক্টর জমিতে ৩ ধরনের বোরো ধান আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে ৫০ হাজার ৮৮৫ হেক্টর হাইব্রিড, উফসী জাতের ৭২ হাজার ৮০১ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ধান আবাদ হয় ৫০ হেক্টর জমিতে। হাইব্রিড জাতে হেক্টরপ্রতি ৪ দশমিক ৬৮ টন, উৎসীতে ৬ দশমিক ৯৩ টন ও স্থানীয় জাতের ধান থেকে প্রতি হেক্টর থেকে ১ দশমিক ৯ টন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। সে অনুযায়ী বোরো থেকে হবিগঞ্জে ৫ লাখ ২৬ হাজার ৩৪৯ টন চাল উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ধানের হিসাবে গেলে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৭ লাখ ৮৬ হাজার ৫১৮ টনে।
শ্রমিক সংকট নিয়ে বানিয়াচং উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের লাদেন চৌধুরী বলেন- হাওরে ধান পেকে গেছে। কিন্তু স্থানীয় শ্রমিককের জন্য গত তিন দিন যাবত ঘুরছি পাচ্ছি না। শ্রমিকের সংখ্যা কম হওয়ায় তাদের চাহিদা যেমন বেশি আবার সময় মতো তাদেরকে পাওয়া যাচ্ছে না। যে কারণে ঝড় বা শিলাবৃষ্টি হলে পাকা ধানের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বদলপুর গ্রামের কৃষক মতিউর রহমান বলেন- স্থানীয় শ্রমিক দিয়ে হাওরের সকল ধান কাটা সম্ভব না। জেলার বাহির থেকে শ্রমিক না আসলে এই সংকট কাটবে না। বৈশাখের শুরুতে জেলার বাহির থেকে কিছু কিছু শ্রমিক এসেছে তবে তা যথেষ্ট নয়। লাখাই উপজেলার স্বজন গ্রামের বাসিন্দা সুশীল দাস বলেন- এরই মধ্যে আমার অন্তত ৫ ক্ষের জমির ধান পেকে গেছে। শ্রমিক না পাওয়ায় কাটাতে পারছি না। তিনি বলেন- পাকা ধান বেশিদিন জমিতে থাকলে ঝড়ে যাবে। তাই আমি দেশী শ্রমিকদের খুঁজতেছি।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জ জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আক্তারুজ্জামান বলেন- এখনও পুরোপুরি ধান কাটা শুরু হয়নি। হাওরে যেসকল ধান পেকেছে তা স্থানীয় শ্রমিকরা কাটছেন। একই সাথে হারভেস্টার মেশিন দিয়েও ধান কাটা হচ্ছে। তিনি বলেন- আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই জেলার বাইরে থেকে শ্রমিক আসা শুরু করবে। তারা আসলেই শ্রমিক সংকট কেটে যাবে।