ঢাকা ০৪:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo তারেক রহমানের অপেক্ষায় দেশবাসী Logo হবিগঞ্জ থেকে ঢাকায় যাচ্ছেন বিএনপির অর্ধলক্ষাধিক নেতাকর্মী Logo শায়েস্তাগঞ্জে কৃষি জমির টপসয়েল বিক্রির হিড়িক, জড়িত প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্র Logo হবিগঞ্জ বালিভর্তি ট্রাক থেকে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় জিরা জব্দ Logo হাদিকে গুলি: হবিগঞ্জ সীমান্তে বিজিবির সতর্কতা জারি Logo শায়েস্তাগঞ্জ খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় উপজেলা যুবদলের দোয়া মাহফিল Logo চুনারুঘাট উপজেলায় বিএনপির স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে বন কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগ Logo হবিগঞ্জের বাহুবলে ট্রাক-চাপায় স্কুলশিক্ষক নিহত Logo হবিগঞ্জ বেপরোয়া ট্রাক চাপায় নারী নিহত Logo বেইলিব্রিজ ভেঙে হবিগঞ্জ-বানিয়াচং সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

কমেছে চায়ের উৎপাদন, লক্ষ্যমাত্রা পুরণ না হওয়ার শঙ্কা

শায়েস্তাগঞ্জের বাণী ডেস্ক ,

উৎপাদনের মৌসুমে দেশের অন্যতম ন্যাশনাল টি কোম্পানি(এনটিসির) ১২টি চা বাগান বন্ধ ছিলো। মজুরি না পেয়ে এসব বাগেনের শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করেন প্রায় তিন মাস। এর প্রভাব পড়েছে দেশের জাতীয় চা উৎপাদনে।

এছাড়া টাকার অভাবে সব বাগানে সময়মতো সার দিয়ে পরিচর্যা না করতে পেরে গত বছরের চেয়ে উৎপাদন কমেছে। এছাড়া চা চাষের জন্য প্রয়োজন পরিমিত বৃষ্টি কিন্তু তুলনামূলক ভাবে বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হওয়ায় চা উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটেছে।

চা বোর্ড সুত্রে জানা গেছে, এ বছর দেশের ছোট বড় ১৬৯ টি বাগানে ১০ কোটি ৮০ লাখ কেজি চা পাতা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ৬ মাসে উৎপাদন হয়েছে ৭ কোটি ৬৬ লাখ। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ মাসে লক্ষমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি। কারন শেষের তিন মাসে চা বাগানে সবুজ চা পাতা তেমন সংগ্রহ করা যায়নি। ২০২৩ সালে দেশের সব বাগান মিলে ১০কোটি ২৯ লাখ চা পাতা তৈরি করা হয়েছিল। নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ কোটি ১৩ লাখ চা পাতা উৎপাদন করা কথা। কিন্তু এটি সম্ভব হয়নি। কারন এই সময় চা বাগানে তেমন পাতা মিলেনি।

হবিগঞ্জ-মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর চা বাগানের ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম ফকির বলেন, এনটিসি ১২বাগানে দীর্ঘদিন বাগান বন্ধ থাকায় লক্ষমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। কারন আগস্ট থেকে নভেম্বর তিন মাস ১৫ হাজার শ্রমিক বাগানে কাজ থেকে বিরত ছিল। এটি উৎপাদনে সরাসরি প্রভাব পড়েছে।

বাংলাদেশ চা বাগান মালিক অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি কামরান টি রহমান বলেন, ২০২৪ সালে দেশের চা বাগানগুলোতে অনেক সমস্যা মোকাবেলা করতে হয়েছে। ক্রমাগত লোকসানের কারনে অনেক চা বাগানের কারখানা দিনের পর দিন বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকের মুজুরি দিতে না পারায় এনটিসির ১২টি বাগান তিন মাসের মত বন্ধ ছিল। টাকার অভাব অনেক বাগান মালিক বাগানে সময় মত প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করতে পারেনি। এছাড়া ২০২৪ সালে বৃষ্টি হয়েছে তুলনামূলক বেশি।

তিনি বলেন, সব মিলিয়ে গেল বছর চা বাগানে আশানুরূপ উৎপাদন হয়নি। সমস্যা লেগেই ছিল। এ বছর চায়ের উৎপাদন কম হওয়ায় চট্রগাম, শ্রীমঙ্গল ৩০ টি নিলাম বাজারে চা সরবরাহ কমেছে।

এ বছর নিলাম প্রতি কেজি চায়ের গড় দাম ২১০টাকা ৫৬পয়সা। গত বছর ছিল ১৯২ টাকা। সরবরাহ কমে যাওয়ায় চায়ের দাম এবার কিছুটা বেড়েছে। গত বছর এক কেজি চায়ের উৎপাদন খরছ ছিল ২২৬ টাকা। এ বছর চা সংশ্লিষ্ট সব উপকরণের দাম বাড়ার কারনে উৎপাদন খরছ আরো বেড়েছে।

একদিকে চায়ের উৎপাদন কমেছে, অপরদিকে বেড়েছে খরছ। তাই এ বছর বাগান মালিকদের লোকসানের মুখে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিস্টরা।

চা বেচাকেনা মধ্যস্থতাকারি ন্যাশনাল ব্লেকার্সের সিনিয়র ম্যানেজার অনজন দেব বর্মণ জানান, নিলামে গত বছরের চেয়ে এ বছর চায়ের সরবরাহ কমেছে। তবে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে চায়ের চাহিদা সাড়ে ৯ কোটি কেজি চা পাতা। যে পরিমাণ চা পাতা বাগানে উৎপাদিত হবে দেশের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।

সিলেট, মৌলভীবাজার হবিগঞ্জ ও চট্রগাম মিলে দেশে ছোট বড় ১৬৯ চা বাগানে রয়েছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৬:০০:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৫
১০০ বার পড়া হয়েছে

কমেছে চায়ের উৎপাদন, লক্ষ্যমাত্রা পুরণ না হওয়ার শঙ্কা

আপডেট সময় ০৬:০০:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৫

উৎপাদনের মৌসুমে দেশের অন্যতম ন্যাশনাল টি কোম্পানি(এনটিসির) ১২টি চা বাগান বন্ধ ছিলো। মজুরি না পেয়ে এসব বাগেনের শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করেন প্রায় তিন মাস। এর প্রভাব পড়েছে দেশের জাতীয় চা উৎপাদনে।

এছাড়া টাকার অভাবে সব বাগানে সময়মতো সার দিয়ে পরিচর্যা না করতে পেরে গত বছরের চেয়ে উৎপাদন কমেছে। এছাড়া চা চাষের জন্য প্রয়োজন পরিমিত বৃষ্টি কিন্তু তুলনামূলক ভাবে বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হওয়ায় চা উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটেছে।

চা বোর্ড সুত্রে জানা গেছে, এ বছর দেশের ছোট বড় ১৬৯ টি বাগানে ১০ কোটি ৮০ লাখ কেজি চা পাতা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ৬ মাসে উৎপাদন হয়েছে ৭ কোটি ৬৬ লাখ। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ মাসে লক্ষমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি। কারন শেষের তিন মাসে চা বাগানে সবুজ চা পাতা তেমন সংগ্রহ করা যায়নি। ২০২৩ সালে দেশের সব বাগান মিলে ১০কোটি ২৯ লাখ চা পাতা তৈরি করা হয়েছিল। নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ কোটি ১৩ লাখ চা পাতা উৎপাদন করা কথা। কিন্তু এটি সম্ভব হয়নি। কারন এই সময় চা বাগানে তেমন পাতা মিলেনি।

হবিগঞ্জ-মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর চা বাগানের ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম ফকির বলেন, এনটিসি ১২বাগানে দীর্ঘদিন বাগান বন্ধ থাকায় লক্ষমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। কারন আগস্ট থেকে নভেম্বর তিন মাস ১৫ হাজার শ্রমিক বাগানে কাজ থেকে বিরত ছিল। এটি উৎপাদনে সরাসরি প্রভাব পড়েছে।

বাংলাদেশ চা বাগান মালিক অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি কামরান টি রহমান বলেন, ২০২৪ সালে দেশের চা বাগানগুলোতে অনেক সমস্যা মোকাবেলা করতে হয়েছে। ক্রমাগত লোকসানের কারনে অনেক চা বাগানের কারখানা দিনের পর দিন বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকের মুজুরি দিতে না পারায় এনটিসির ১২টি বাগান তিন মাসের মত বন্ধ ছিল। টাকার অভাব অনেক বাগান মালিক বাগানে সময় মত প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করতে পারেনি। এছাড়া ২০২৪ সালে বৃষ্টি হয়েছে তুলনামূলক বেশি।

তিনি বলেন, সব মিলিয়ে গেল বছর চা বাগানে আশানুরূপ উৎপাদন হয়নি। সমস্যা লেগেই ছিল। এ বছর চায়ের উৎপাদন কম হওয়ায় চট্রগাম, শ্রীমঙ্গল ৩০ টি নিলাম বাজারে চা সরবরাহ কমেছে।

এ বছর নিলাম প্রতি কেজি চায়ের গড় দাম ২১০টাকা ৫৬পয়সা। গত বছর ছিল ১৯২ টাকা। সরবরাহ কমে যাওয়ায় চায়ের দাম এবার কিছুটা বেড়েছে। গত বছর এক কেজি চায়ের উৎপাদন খরছ ছিল ২২৬ টাকা। এ বছর চা সংশ্লিষ্ট সব উপকরণের দাম বাড়ার কারনে উৎপাদন খরছ আরো বেড়েছে।

একদিকে চায়ের উৎপাদন কমেছে, অপরদিকে বেড়েছে খরছ। তাই এ বছর বাগান মালিকদের লোকসানের মুখে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিস্টরা।

চা বেচাকেনা মধ্যস্থতাকারি ন্যাশনাল ব্লেকার্সের সিনিয়র ম্যানেজার অনজন দেব বর্মণ জানান, নিলামে গত বছরের চেয়ে এ বছর চায়ের সরবরাহ কমেছে। তবে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে চায়ের চাহিদা সাড়ে ৯ কোটি কেজি চা পাতা। যে পরিমাণ চা পাতা বাগানে উৎপাদিত হবে দেশের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।

সিলেট, মৌলভীবাজার হবিগঞ্জ ও চট্রগাম মিলে দেশে ছোট বড় ১৬৯ চা বাগানে রয়েছে।