ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় মুষলধারে বৃষ্টি, ভোগান্তি চরমে
আষাঢ়ের শেষ দিকে দেশজুড়ে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা আগেই জানানো হয় আবহাওয়া অধিদফতরের পক্ষ থেকে। অনেক জেলায় খুব বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে সে তুলনায় ঢাকায় বেশ কম। অবশ্য আজ শনিবার (২৯ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকার ভিবিন্ন এলাকায় মুষলধারে বৃষ্টিতে হতে দেখা গেছে। সাপ্তাহিক সরকারি ছুটির দিন হলেও বেসরকারি চাকরিজীবী কিংবা খেটে খাওয়া মানুষ যারা জীবিকার টানে ঘরের বাইরে বের হয়েছেন তারা পড়েছেন বৃষ্টির বিড়ম্বনায়।
বৃষ্টির গতি অনেক বেশি থাকায় অনেকেই যানবাহন কিংবা রিকশায় উঠতে না পেরে আশ্রয় নিয়েছেন রাস্তার পাশের ভবনের নিচে, কেউ আবার আশপাশের দোকানে আশ্রয় নিয়েছেন।
ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার ও বান্দরবন জেলার পাহাড়ী এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
এদিকে, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে আগামী ৩দিন বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আজ দেশের ৬ বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। অন্য দুই বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
শুক্রবার রাতে দেওয়া পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ স্থানে; ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সে. হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
আবহাওয়া অফিস আরো জানায়, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ বিহার, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল এবং বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
পাহাড় ধসের সতর্কতা: দেশের পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধসের সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া বিভাগ। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান এলাকায় ভূমিধসের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা: বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের প্রভাবে গভীর সঞ্চরণশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বৃষ্টি ১ থেকে ১০ মিলিমিটার হলে সেটিকে হালকা বৃষ্টি বলা হয়। আর ১১ থেকে ২২ মিলিমিটারের মধ্যে বৃষ্টি হলে তা মাঝারি ধরনের বৃষ্টি। মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টি বলা হয় ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার হলে। আর ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটারের বৃষ্টি হচ্ছে ভারী বৃষ্টি। যদি ৮৮ মিলিমিটারের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়, তবে তা অতি ভারী বৃষ্টি হিসেবে ধরা হয়।