ঢাকা ০৯:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নতুন দলের আত্মপ্রকাশ ‘২৬ ফেব্রুয়ারি’, শীর্ষ ছয়টি পদ নিয়ে সমঝোতা

শায়েস্তাগঞ্জের বাণী ডেস্ক ,

জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে আসছে নতুন রাজনৈতিক দল। তবে কিছুদিন ধরেই আলোচনায় আছে কবে হবে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ। কারা আসছে সেই নতুন দলের নেতৃত্বে। কোথায় হতে পারে আত্মপ্রকাশের অনুষ্ঠান। অবশেষে জানা গেল ২৬ ফেব্রুয়ারি হতে পারে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ। আর আত্মপ্রকাশের অনুষ্ঠানটি হতে পারে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির একজন দায়িত্বশীল নেতা জানান, নতুন দলের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের আয়োজনটি হতে পারে ২৬ ফেব্রুয়ারি। ঢাকায় অনুষ্ঠান করে দলের ঘোষণা দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানটি হতে পারে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে।

এদিকে দীর্ঘ কয়েকদিনের অস্থিরতার পর নতুন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পদে কারা থাকবেন, তা অনেকটাই চূড়ান্ত হয়েছে। দলের সাংগঠনিক কাঠামোতে ‘সমঝোতার’ ভিত্তিতে নতুন দুটি পদও সৃষ্টি করা হচ্ছে। আহ্বায়ক, সদস্যসচিব, মুখপাত্র এবং মুখ্য সংগঠকের পাশাপাশি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব নামে দুটি পদ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সামনের সারিতে থাকা ছাত্রনেতারাই নতুন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পদগুলোতে আসছেন। এই দলের আহ্বায়ক পদে নাহিদ ইসলামের মনোনয়ন নিয়ে শুরু থেকেই জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের কারও কোনো আপত্তি ছিল না। সদস্যসচিব হিসেবে কে আসবেন, মূলত তা নিয়ে মতবিরোধ ছিল। সমঝোতার ভিত্তিতে এই পদে আখতার হোসেনের নাম অনেকটাই চূড়ান্ত। তিনি এখন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব।

নতুন দলের আহ্বায়কের দায়িত্ব নিতে যেকোনো সময় অন্তর্বর্তী সরকার থেকে পদত্যাগ করতে পারেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। দলের মুখ্য সংগঠক ও মুখপাত্র পদে দেখা যেতে পারে সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে।

অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক কমিটিতে থাকা ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতাদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক পদে আলী আহসান জোনায়েদের (শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি) নাম বিবেচনায় আছে। আর দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব পদে আসতে পারেন জাতীয় নাগরিক কমিটির বর্তমান আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। নতুন দলে যুক্ত হতে যাওয়া জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিনজন নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব বিষয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।

শীর্ষ ছয়টি পদের বাইরে নতুন দলে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে পারেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, তাসনিম জারা ও আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম সদস্যসচিব অনিক রায়, মাহবুব আলম ও অলিক মৃ। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদকেও দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখা যেতে পারে।

এর আগে গত কয়েক সপ্তাহে নাগরিক কমিটির শীর্ষ পদে কারা আসবেন, তা নিয়ে মতবিরোধ তৈরি হয়। জাতীয় নাগরিক কমিটির বিভিন্ন ভাবধারার রাজনীতি করা তরুণরা রয়েছেন। এরমধ্যে একটি অংশ সাবেক ছাত্রশিবিরের নেতা রয়েছেন। এছাড়াও বাম ঘরানার ও মধ্যমপন্থি রাজনীতি করা তরুণরাও রয়েছেন। ছাত্রশিবিরের তরুণরা নতুন দলের শীর্ষ পদে নিজেদের পছন্দের নেতা বসাতে চাইছিলেন।

বিষয়টি শেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আসে। এসময় শিবিরের নেতা আরেফীন মোহাম্মদ, রাফে সালমান রিফাত গণঅভ্যুত্থানে নিজেদের অবদানের কথা তুলে ধরেন।

তবে নাগরিক কমিটির শীর্ষ এক নেতা বলেছেন, নতুন দল গঠনের আগে এ ধরনের মতবিরোধকে তারা স্বাভাবিকভাবেই দেখছেন। আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে তার সমাধানও হয়েছে। তবে কেবল অভ্যুত্থানের অবদান নয়, বরং রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা ও নাগরিক কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রম বিবেচনায় রয়েছে বলেও জানান তিনি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৮:২৮:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
২ বার পড়া হয়েছে

নতুন দলের আত্মপ্রকাশ ‘২৬ ফেব্রুয়ারি’, শীর্ষ ছয়টি পদ নিয়ে সমঝোতা

আপডেট সময় ০৮:২৮:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে আসছে নতুন রাজনৈতিক দল। তবে কিছুদিন ধরেই আলোচনায় আছে কবে হবে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ। কারা আসছে সেই নতুন দলের নেতৃত্বে। কোথায় হতে পারে আত্মপ্রকাশের অনুষ্ঠান। অবশেষে জানা গেল ২৬ ফেব্রুয়ারি হতে পারে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ। আর আত্মপ্রকাশের অনুষ্ঠানটি হতে পারে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির একজন দায়িত্বশীল নেতা জানান, নতুন দলের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের আয়োজনটি হতে পারে ২৬ ফেব্রুয়ারি। ঢাকায় অনুষ্ঠান করে দলের ঘোষণা দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানটি হতে পারে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে।

এদিকে দীর্ঘ কয়েকদিনের অস্থিরতার পর নতুন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পদে কারা থাকবেন, তা অনেকটাই চূড়ান্ত হয়েছে। দলের সাংগঠনিক কাঠামোতে ‘সমঝোতার’ ভিত্তিতে নতুন দুটি পদও সৃষ্টি করা হচ্ছে। আহ্বায়ক, সদস্যসচিব, মুখপাত্র এবং মুখ্য সংগঠকের পাশাপাশি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব নামে দুটি পদ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সামনের সারিতে থাকা ছাত্রনেতারাই নতুন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পদগুলোতে আসছেন। এই দলের আহ্বায়ক পদে নাহিদ ইসলামের মনোনয়ন নিয়ে শুরু থেকেই জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের কারও কোনো আপত্তি ছিল না। সদস্যসচিব হিসেবে কে আসবেন, মূলত তা নিয়ে মতবিরোধ ছিল। সমঝোতার ভিত্তিতে এই পদে আখতার হোসেনের নাম অনেকটাই চূড়ান্ত। তিনি এখন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব।

নতুন দলের আহ্বায়কের দায়িত্ব নিতে যেকোনো সময় অন্তর্বর্তী সরকার থেকে পদত্যাগ করতে পারেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। দলের মুখ্য সংগঠক ও মুখপাত্র পদে দেখা যেতে পারে সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে।

অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক কমিটিতে থাকা ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতাদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক পদে আলী আহসান জোনায়েদের (শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি) নাম বিবেচনায় আছে। আর দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব পদে আসতে পারেন জাতীয় নাগরিক কমিটির বর্তমান আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। নতুন দলে যুক্ত হতে যাওয়া জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিনজন নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব বিষয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।

শীর্ষ ছয়টি পদের বাইরে নতুন দলে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে পারেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, তাসনিম জারা ও আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম সদস্যসচিব অনিক রায়, মাহবুব আলম ও অলিক মৃ। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদকেও দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখা যেতে পারে।

এর আগে গত কয়েক সপ্তাহে নাগরিক কমিটির শীর্ষ পদে কারা আসবেন, তা নিয়ে মতবিরোধ তৈরি হয়। জাতীয় নাগরিক কমিটির বিভিন্ন ভাবধারার রাজনীতি করা তরুণরা রয়েছেন। এরমধ্যে একটি অংশ সাবেক ছাত্রশিবিরের নেতা রয়েছেন। এছাড়াও বাম ঘরানার ও মধ্যমপন্থি রাজনীতি করা তরুণরাও রয়েছেন। ছাত্রশিবিরের তরুণরা নতুন দলের শীর্ষ পদে নিজেদের পছন্দের নেতা বসাতে চাইছিলেন।

বিষয়টি শেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আসে। এসময় শিবিরের নেতা আরেফীন মোহাম্মদ, রাফে সালমান রিফাত গণঅভ্যুত্থানে নিজেদের অবদানের কথা তুলে ধরেন।

তবে নাগরিক কমিটির শীর্ষ এক নেতা বলেছেন, নতুন দল গঠনের আগে এ ধরনের মতবিরোধকে তারা স্বাভাবিকভাবেই দেখছেন। আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে তার সমাধানও হয়েছে। তবে কেবল অভ্যুত্থানের অবদান নয়, বরং রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা ও নাগরিক কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রম বিবেচনায় রয়েছে বলেও জানান তিনি।