ঢাকা ১২:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

নবীগঞ্জে টমটম-সিএনজি ভাড়া নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ১, আহত অর্ধশত

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে টমটম ও সিএনজি ভাড়া নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে পূর্বঘোষণার মাধ্যমে চার গ্রামের লোকজনের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড চৌরাস্থায় সংঘটিত এ ঘটনায় সাব্বির মিয়া (৩২) নিহত হয়েছেন এবং অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

কীভাবে ঘটল সংঘর্ষ

সবজির চড়া দামে বিপাকে আড়াইহাজারের ক্রেতারা
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে জামারগাঁও-রাধাপুর গ্রামের ব্যবসায়ী ফয়সল আহমদের সঙ্গে কাকুড়া করিমপুর গ্রামের টমটম চালক রাশেদ ও সিএনজি চালক মোহাম্মদ আলীর ভাড়া নিয়ে কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এর জেরে রাত থেকেই উভয় পক্ষ প্রস্তুতি নিতে থাকে এবং বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

পরদিন সকাল ৮টার দিকে রাধাপুর ও করিমপুর গ্রামের মানুষ মাইকিং করে সংঘর্ষে নামে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ৫০ জন আহত হন, যার মধ্যে ২০ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সংঘর্ষ চলাকালে রাধাপুর গ্রামের আব্দুর রউফের ছেলে সাব্বির মিয়া একা পড়ে গেলে প্রতিপক্ষের হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

উত্তেজনার পেছনের কারণ

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, টমটম ও সিএনজি চলাচলকে কেন্দ্র করে গত দুই সপ্তাহ ধরে কাকুড়া-করিমপুর ও রাধাপুর-জামারগাঁও গ্রামের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। একপক্ষে নেতৃত্ব দেন মাখন মিয়া ও ইলিয়াছ মিয়া, অপর পক্ষে ছিলেন সাবেক মেম্বার আব্দুল বারিক রনি ও ফখরুল ইসলাম।

সাবেক মেম্বার ফখরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, “আমাদের লোকজনকে কয়েকদিন ধরে মারপিট করা হচ্ছে। সোমবার রাতে ব্যবসায়ী ফয়সল আহমদকে পিটিয়ে টাকা লুট করা হয়েছে। আজকে কৃষক সাব্বিরকে একা পেয়ে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।”

অন্যদিকে কাকুড়া গ্রামের মাখন মিয়া দাবি করেন, “আমাদের টমটম চালক রাশেদ ও সিএনজি চালক মোহাম্মদ আলীকে আগে মারপিট করা হয়েছিল। পরে আমাদের গ্রামে এসে লাঠিসোটা নিয়ে আক্রমণ করায় সংঘর্ষ হয়েছে।”

পুলিশের বক্তব্য

নবীগঞ্জ থানার ওসি শেখ মো. কামরুজ্জামান জানান, “ঘটনার তদন্ত চলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৪:৫৫:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৪ বার পড়া হয়েছে

নবীগঞ্জে টমটম-সিএনজি ভাড়া নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ১, আহত অর্ধশত

আপডেট সময় ০৪:৫৫:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে টমটম ও সিএনজি ভাড়া নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে পূর্বঘোষণার মাধ্যমে চার গ্রামের লোকজনের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড চৌরাস্থায় সংঘটিত এ ঘটনায় সাব্বির মিয়া (৩২) নিহত হয়েছেন এবং অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

কীভাবে ঘটল সংঘর্ষ

সবজির চড়া দামে বিপাকে আড়াইহাজারের ক্রেতারা
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে জামারগাঁও-রাধাপুর গ্রামের ব্যবসায়ী ফয়সল আহমদের সঙ্গে কাকুড়া করিমপুর গ্রামের টমটম চালক রাশেদ ও সিএনজি চালক মোহাম্মদ আলীর ভাড়া নিয়ে কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এর জেরে রাত থেকেই উভয় পক্ষ প্রস্তুতি নিতে থাকে এবং বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

পরদিন সকাল ৮টার দিকে রাধাপুর ও করিমপুর গ্রামের মানুষ মাইকিং করে সংঘর্ষে নামে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ৫০ জন আহত হন, যার মধ্যে ২০ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সংঘর্ষ চলাকালে রাধাপুর গ্রামের আব্দুর রউফের ছেলে সাব্বির মিয়া একা পড়ে গেলে প্রতিপক্ষের হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

উত্তেজনার পেছনের কারণ

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, টমটম ও সিএনজি চলাচলকে কেন্দ্র করে গত দুই সপ্তাহ ধরে কাকুড়া-করিমপুর ও রাধাপুর-জামারগাঁও গ্রামের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। একপক্ষে নেতৃত্ব দেন মাখন মিয়া ও ইলিয়াছ মিয়া, অপর পক্ষে ছিলেন সাবেক মেম্বার আব্দুল বারিক রনি ও ফখরুল ইসলাম।

সাবেক মেম্বার ফখরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, “আমাদের লোকজনকে কয়েকদিন ধরে মারপিট করা হচ্ছে। সোমবার রাতে ব্যবসায়ী ফয়সল আহমদকে পিটিয়ে টাকা লুট করা হয়েছে। আজকে কৃষক সাব্বিরকে একা পেয়ে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।”

অন্যদিকে কাকুড়া গ্রামের মাখন মিয়া দাবি করেন, “আমাদের টমটম চালক রাশেদ ও সিএনজি চালক মোহাম্মদ আলীকে আগে মারপিট করা হয়েছিল। পরে আমাদের গ্রামে এসে লাঠিসোটা নিয়ে আক্রমণ করায় সংঘর্ষ হয়েছে।”

পুলিশের বক্তব্য

নবীগঞ্জ থানার ওসি শেখ মো. কামরুজ্জামান জানান, “ঘটনার তদন্ত চলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”