ঢাকা ০৫:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo হবিগঞ্জে জেলায় এসএসসি পরীক্ষায় পাশের হার ৬৫.১৪ শতাংশ, ১০ বছরে চরম বিপর্যয় Logo চিচিঙ্গা চাষে সফল বাহুবল উপজেলার কৃষক নুরুল Logo নবীগঞ্জে সংঘর্ষের ৩ দিন পর ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার ,পুলিশ বাদী হয়ে ০৮ সাংবাদিক সহ ৩২ জন সহ অজ্ঞাত ৪/৫ হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা Logo চুনারুঘাটে ড্রাগন চাষে সফল সৌদি প্রবাসি জহুর হোসেন Logo শ্রীমঙ্গলে সেপটিক ট্যাংকের বিষক্রিয়ায় ৪ জনের মৃত্যু Logo নবীগঞ্জ শহরসহ ৭টি গ্রামের মানুষ জন শুন্য যৌথবাহিনী অভিযান ১৩ জন আটক Logo হবিগঞ্জে চালককে হত্যা করে ইজিবাইক ছিনতাই Logo নবীগঞ্জে ভয়াবহ সংঘর্ষ নিহত ১ আহত কয়েক শতাধিক Logo জুলাই অভ্যুত্থানে নৃশংস হামলার আসামি ও দালাল সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মৌলভীবাজারে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি Logo ৪দিনের উত্তেজনার পর নবীগঞ্জে কয়েক হাজার মানুষের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত কয়েক শতাধিক

নবীগঞ্জে সংঘর্ষের ৩ দিন পর ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার ,পুলিশ বাদী হয়ে ০৮ সাংবাদিক সহ ৩২ জন সহ অজ্ঞাত ৪/৫ হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা

মোঃ সাগর আহমেদ নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ)প্রতিনিধি

নবীগঞ্জে দুই সাংবাদিকের বিরোধকে কেন্দ্র করে পৌর এলাকার ৭টি গ্রামের সংঘর্ষের ঘটনায় টানা ৩ দিন ১৪৪ ধারা অব্যাহত থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে প্রত্যাহার করা হয়। এতে শহরে প্রানচাঞ্চল‍্য ফিরে এসেছে। সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে এবং কিছু কিছু দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে। যানবাহন চলাচলও স্বাভাবিক হয়েছে। শহরে সুনশান নীরবতা লক্ষ্য করা গেছে। সাধারণ মানুষ এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে এখনও ভীতি কেটে উঠেনি। এখনও জন শুন্য রয়েছে নবীগঞ্জ শহরের ৭টি গ্রাম। এ ঘটনায় পুর্ব তিমিরপুর, পশ্চিম তিমির পুর, চরগাও, আনমনু, রাজাবাদ, নোয়াপাড়া ও পিরিজপুর এসব গ্রামে যৌথবাহিনীর চিরুনি অভিযান চলছে। এঘটনায় বুধবার রাতে পুলিশ বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৬ জন সাংবাদিকের নাম উল্লেখসহ ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৪/৫ হাজার জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নবীগঞ্জ থানার এসআই রিপন দাশ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। নবীগঞ্জ থানার মামলা নং ১০। তারিখ ০৯/০৭/২০২৫ই। অপরদিকে এঘটনা নিস্পত্তির জন্য গত বুধবার বিকেলে শহরের বাহিরে সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সালিশ প্রক্রিয়ার জন্য নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি বাজার হাফিজিয়া সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় । উক্ত সভায় ১৭ সদস্য বিশিষ্ট সালিশ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে নবীগঞ্জের চলমান বিবাদের মিমাংসার অগ্রগতি সাধন ৫টি বিষয় প্রধান্য দেওয়া হয়েছে। সালিশ বোর্ড গঠন। উভয় পক্ষের সম্মতি গ্রহণ, প্রশাসনের সাথে সমন্বয় সাধন করা, নিহত ফারুক মিয়ার জন্য শোক প্রকাশ করা হয়, অহেতুক নিরীহ জনসাধারণকে প্রশাসন হয়রানী না করা ও সংঘর্ষে জড়িত উভয় পক্ষ পরিবেশ শান্ত থাকার আহ্বান।
উল্লেখ্য স্থানীয় দুই সাংবাদিক সেলিম তালুকদার ও আশাহিদ আলী আশার মধ্যে একে অপরকে কটুক্তি করা নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। এ বিরোধ গড়ায় কয়েক গ্রামবাসীর সংঘর্ষে। প্রথমে সেলিম তালুকদারের পক্ষে পূর্ব তিমিরপুর এবং আশাহীদ আলী আশার পক্ষে আনমনু গ্রামবাসী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পরে তাদের পক্ষ নিয়ে আরও কয়েক গ্রামের মানুষ সংঘর্ষে জড়ায়। শেষ পর্যন্ত সংঘর্ষ রূপ নেয় দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে। আশাহিদ আলী আশার পক্ষে মৎস্যজীবী সম্প্রদায় এবং সেলিম তালুকদারের পক্ষে অমৎস্যজীবী সম্প্রদায় অবস্থান নেয়। সোমবার নবীগঞ্জ বাজারে কয়েক ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে পূর্ব তিমিরপুর গ্রামের বাসিন্দা এম্বুলেন্স চালক ফারুক মিয়া (৪২) মারা যান। আহত হন শতাধিক মানুষ। এ সময় নবীগঞ্জ বাজারের শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যানবাহন, বেসরকারি হাসপাতাল ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করা হয়। এতে ব‍্যবসায়ীদের অন্তত ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা। এক পর্যায়ে এ সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম‍্যাজিস্টেট মোঃ রুহুল আমীন পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেন। ৩ দিন পর বৃহস্পতিবার ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মো. কামরুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের একটি মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল অব্যাহত রয়েছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৭:০০:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
২ বার পড়া হয়েছে

নবীগঞ্জে সংঘর্ষের ৩ দিন পর ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার ,পুলিশ বাদী হয়ে ০৮ সাংবাদিক সহ ৩২ জন সহ অজ্ঞাত ৪/৫ হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট সময় ০৭:০০:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

নবীগঞ্জে দুই সাংবাদিকের বিরোধকে কেন্দ্র করে পৌর এলাকার ৭টি গ্রামের সংঘর্ষের ঘটনায় টানা ৩ দিন ১৪৪ ধারা অব্যাহত থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে প্রত্যাহার করা হয়। এতে শহরে প্রানচাঞ্চল‍্য ফিরে এসেছে। সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে এবং কিছু কিছু দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে। যানবাহন চলাচলও স্বাভাবিক হয়েছে। শহরে সুনশান নীরবতা লক্ষ্য করা গেছে। সাধারণ মানুষ এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে এখনও ভীতি কেটে উঠেনি। এখনও জন শুন্য রয়েছে নবীগঞ্জ শহরের ৭টি গ্রাম। এ ঘটনায় পুর্ব তিমিরপুর, পশ্চিম তিমির পুর, চরগাও, আনমনু, রাজাবাদ, নোয়াপাড়া ও পিরিজপুর এসব গ্রামে যৌথবাহিনীর চিরুনি অভিযান চলছে। এঘটনায় বুধবার রাতে পুলিশ বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৬ জন সাংবাদিকের নাম উল্লেখসহ ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৪/৫ হাজার জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নবীগঞ্জ থানার এসআই রিপন দাশ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। নবীগঞ্জ থানার মামলা নং ১০। তারিখ ০৯/০৭/২০২৫ই। অপরদিকে এঘটনা নিস্পত্তির জন্য গত বুধবার বিকেলে শহরের বাহিরে সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সালিশ প্রক্রিয়ার জন্য নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি বাজার হাফিজিয়া সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় । উক্ত সভায় ১৭ সদস্য বিশিষ্ট সালিশ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে নবীগঞ্জের চলমান বিবাদের মিমাংসার অগ্রগতি সাধন ৫টি বিষয় প্রধান্য দেওয়া হয়েছে। সালিশ বোর্ড গঠন। উভয় পক্ষের সম্মতি গ্রহণ, প্রশাসনের সাথে সমন্বয় সাধন করা, নিহত ফারুক মিয়ার জন্য শোক প্রকাশ করা হয়, অহেতুক নিরীহ জনসাধারণকে প্রশাসন হয়রানী না করা ও সংঘর্ষে জড়িত উভয় পক্ষ পরিবেশ শান্ত থাকার আহ্বান।
উল্লেখ্য স্থানীয় দুই সাংবাদিক সেলিম তালুকদার ও আশাহিদ আলী আশার মধ্যে একে অপরকে কটুক্তি করা নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। এ বিরোধ গড়ায় কয়েক গ্রামবাসীর সংঘর্ষে। প্রথমে সেলিম তালুকদারের পক্ষে পূর্ব তিমিরপুর এবং আশাহীদ আলী আশার পক্ষে আনমনু গ্রামবাসী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পরে তাদের পক্ষ নিয়ে আরও কয়েক গ্রামের মানুষ সংঘর্ষে জড়ায়। শেষ পর্যন্ত সংঘর্ষ রূপ নেয় দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে। আশাহিদ আলী আশার পক্ষে মৎস্যজীবী সম্প্রদায় এবং সেলিম তালুকদারের পক্ষে অমৎস্যজীবী সম্প্রদায় অবস্থান নেয়। সোমবার নবীগঞ্জ বাজারে কয়েক ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে পূর্ব তিমিরপুর গ্রামের বাসিন্দা এম্বুলেন্স চালক ফারুক মিয়া (৪২) মারা যান। আহত হন শতাধিক মানুষ। এ সময় নবীগঞ্জ বাজারের শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যানবাহন, বেসরকারি হাসপাতাল ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করা হয়। এতে ব‍্যবসায়ীদের অন্তত ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা। এক পর্যায়ে এ সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম‍্যাজিস্টেট মোঃ রুহুল আমীন পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেন। ৩ দিন পর বৃহস্পতিবার ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মো. কামরুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের একটি মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল অব্যাহত রয়েছে।