পর্যটনের অপার সম্ভাবনা মাধবপুর
নৈসর্গিক সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক লিলা ভূমি হচ্ছে সিলেট বিভাগের সিংহদ্বার নামে খ্যাত হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা। এখানে পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। রয়েছে প্রাকৃতিক নানা লৈসর্গিক দৃশ্য। রয়েছে পাহাড়, হাওর, রাবার বাগান, চা বাগান ও শাহজীবাজার ফ্রট্স ভ্যালি, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত বুলেট এবং পাশে রয়েছে লাল শাপলা লেক। এসব সৌন্দর্যময় জায়গা দেখতে খুব সহজেই যে কেউ সড়ক ও রেলপথ আসতে পারেন। রাজধানী ঢাকা থেকে সড়ক ও রেলপথ আসতে সময় লাগে ৩ ঘন্টা।
নানা সীমাবদ্ধতা ও সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগক্তরা কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করার কারণে এখনো সেভাবে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটেনি। পর্যটনের বিকাশ ঘটলে সরকার ও উদ্যোক্তরা এ খাত থেকে অনেক অর্থ আয় করতে পারত। পর্যটকদের জন্য হোটেল, মোটেল, রেস্তরাঁ, থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করলে দেশি-বিদেশি পর্যটক ও ভ্রমন পিপাসুদের সংখ্যা অনেক বেড়ে যেত।
মাধবপুর পৌর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি মাসুকুর রহমান মাসুক বলেন, মাধবপুর উপজেলা পর্যটক শিল্পের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কৃষি ও শিল্পের পরই মাধবপুরে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু বিগত সরকারের আমলে আমাদের এলাকার বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী থাকার পরও তিনি এ শিল্পের বিকাশে কোন কাজ করেনি।
শাহজিবাজারের প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। এখানে রয়েছে হবিগঞ্জ গ্যাস ফিল্ড, ফ্রর্টসভ্যালী,রাবার বাগান। ফ্রটুস ভ্যালিতে রয়েছে দেশি বিদেশি প্রায় দু’শত ফলের বাগান। যা সহজেই দেশি বিদেশি পর্যটকদের মন কাড়ে। প্রতি বছর শাহজিবাজার প্রাকৃতিক নৈসর্গিক দৃশ্য দেখতে দেশের নানা প্রাপ্ত থেকে পর্যটকরা ঘুরতে আসেন। ঢাকা সিলেট মহাসড়কের পাশে এসব জায়গা অবস্থিত বলে যোগাযোগব্যবস্থা খুবই আনন্দদায়ক।
ঢাকা সিলেট রেললাইন পার হলেই চোখ পড়বে সবুজ গালিচার চা বাগান। দেখে মনে হবে কোন নামকরা শিল্পী ছবির আলপনা এঁকে রেখেছে। চা বাগানের দৃশ্য যে কোন পর্যটকদের মন আকর্ষণ করবে। চা বাগান কর্তৃপক্ষ পর্যটকদের জন্য সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করলে চা বাগান এ শিল্প থেকে অনেক টাকা আয় করার সুযোগ রয়েছে। কারন চা বাগান এখন শুধু চা চাষ করে তেমন লাভবান হচ্ছে না। চা চাষের পাশাপাশি চা বাগানে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানো এখনই উপযুক্ত সময়। উপজেলার ৫ টি চা বাগানে যাওয়ার যোগাযোগব্যবস্থা খুবই উন্নত।
তেলিয়াপাড়া চা বাগান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত একটি ঐতিহাসিক স্থান। তেলিয়াপাড়া ম্যানেজার বাংলোয় বসে ৪ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধের আনুষ্টানিক শুভ সুচনা হয়েছিল । লাল শাপলা শোভিত লেকের পাশেই দাড়িয়ে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের লাল বুলেট। লাল শাপলার লেক পর্যটকদের খুব আকৃষ্ট করবে। এ ছাড়া রয়েছে চৌমুহনী রাবার ড্যাম। সোনাই নদীতে রাবার ড্যামের পানিতে সাতার কাটতে ভীড় জমায়।
তেলিয়াপাড়ায় পর্যটকদের থাকার জন্য টি ল্যান্ড নামে একটি পর্যটক ভবন করা হয়েছে। এখানে ভ্রমন পিপাসুরা রাতে থাকার ও খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে পর্যটকদের ভীড় বাড়াতে সরকারি ভাবে উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদ বিন কাসিম বলেন, মাধবপুর পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানোর অনেক সুযোগ রয়েছে। কারন মাধবপুরে প্রাকৃতিক যে নৈসর্গিক স্থান রয়েছে। তা অতুলনীয়। মাধবপুরে সরকারি ভাবে পর্যটন শিল্পের বিকাশে পর্যটন শিল্প ও কর্পোরেশনের সাথে যোগাযোগ করব।