ঢাকা ০৩:৪১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি শেরগুল, সম্পাদক মাসুম Logo বাংলাদেশ সীমান্তে অত্যাধুনিক ড্রোন মোতায়েন ভারতের Logo গাজীপুরে কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে, নিহত ১ Logo বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক Logo উপজেলার সভায় সিদ্ধান্ত শায়েস্তাগঞ্জে আহলে সুন্নাতওয়াল জামাতের মাহফিল হবে নির্ধারিত তারিখে Logo শায়েস্তাগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি মঈনুল হাসান রতনের মায়ের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী পালিত Logo আজমিরীগঞ্জ কাকাইলছেওয়ে বিএনপির সমাবেশ অনুষ্টিত Logo রাখাইনে জান্তার সেনা সদর দপ্তর দখল করলো আরাকান আর্মি Logo গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের খসড়া তালিকা প্রকাশ Logo টাংগুয়ায় মোবাইল কোর্ট অভিযানে, দুইলক্ষ টাকার অবৈধ জাল জব্দ

প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় সেই আবেদ আলীসহ গ্রেপ্তার ১৭

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় সেই আবেদ আলী গ্রেপ্তার বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) পরীক্ষাসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবন ও পিএসসির ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তাসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সোমবার (৮ জুলাই) অভিযানে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিআইডির সাইবার বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি তৌহিদুল ইসলাম।

সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, আমরা নন ক্যডারের কিছু পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের তথ্য পেয়েছি। ওই সব পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। এখন পর্যন্ত আমরা ১৫ জনের বেশি গ্রেফতার করেছি। তাদের ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সিআইডি সূত্রে জানা গছে, গ্রেফতার ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন পিএসসির উপ-পরিচালক মো. আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান ও অফিস সহায়ক (ডিসপাস) সাজেদুল ইসলাম। এছাড়াও রয়েছেন সাবেক সেনা সদস্য নোমান সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ব্যবসায়ী মো. জাহিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত মো. মামুনুর রশীদ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিকেল টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুন হাসান, ব্যবসায়ী সহোদর সাখাওয়াত হোসেন ও বেকার যুবক লিটন সরকার। রয়েছেন আবেদ আলীর ছেলে সিয়ামও।

একটি বেসরকারি টেলিভিশনের অনুসন্ধানে গতকাল রোববার বেরিয়ে আসে এই প্রশ্নফাঁসের ঘটনা। গত ১২ বছরে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) পরীক্ষাসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে চক্রটির বিরুদ্ধে।

প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য সামনে আসার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর বিপুল সম্পদের তথ্য তুলে ধরছেন নেটিজেনরা। ছেলে ছাত্রলীগ নেতা, পড়েছেন বিদেশে, এরপর দেশের একটি ব্যয়বহুল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকার ভেতর তাঁর দুইটি বহুতল ভবন, মাদারীপুরে আলিশান রয়েছে এমন তথ্যও সামনে আসছে।

তবে সৈয়দ আবেদ আলীর ফেসবুক পেজে নিজের একটি হোটেলের তথ্য তুলে ধরেছেন তিনি নিজেই। ১৮ মে এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমাদের নতুন হোটেল এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলাম আজ। হোটেল সান মেরিনা, কুয়াকাটা।’

এই হোটেলের কাজে গিয়ে কুয়াকাটার সৈকতে তিনি নামাজ পড়ছিলেন। সেই নামাজের ছবি ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন। সেটি এখন রীতিমতো ভাইরাল।

গতকাল রোববার (৭ জুলাই) থেকে মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাপ-ছেলেকে নিয়ে রীতিমতো ঝড় উঠেছে। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের ছবি দিয়ে তীব্র সমালোচনা করছেন। দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি করছেন কেউ কেউ।

বেসরকারি টেলিভিশনটিতে প্রচারিত খবর থেকে জানা যায়, গত ১২ বছরে বিসিএসসহ নন-ক্যাডার নিয়োগের অন্তত ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটির ১২ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে।

গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত রেলওয়ের ৫১৬টি পদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিসিএসের প্রশ্নফাঁস চক্রে পিএসসির অন্তত ১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত। এর মধ্যে বিভিন্ন ইউনিটের উপ-পরিচালক, সহকারী পরিচালক, চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক, সাবেক সচিবের পিএসও রয়েছেন।

বিসিএসের প্রশ্নফাঁস চক্রের মূলহোতা পিএসসির অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম গণমাধ্যমটিকে জানান, ‘পিএসসির উপ-পপ্রশ্ন ফাঁস হয়। পিএসসির একজন সদস্যের অফিসে সংরক্ষিত ট্রাঙ্ক থেকে আবু জাফর রেলওয়ের প্রশ্ন আমাকে বের করে দিয়েছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, আমি এটাও জানি ৪৫তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস করা হয়।

বিসিএসের প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কমিশনের ক্ষমতাবলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠতে পারে। সেটি প্রমাণ হতে হবে। প্রমাণ হলে, কমিশন যদি মনে করে তাহলে প্রশ্নফাঁস হওয়া বিসিএসের কার্যক্রম বাতিলও হতে পারে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৯:২৪:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪
৫২ বার পড়া হয়েছে

প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় সেই আবেদ আলীসহ গ্রেপ্তার ১৭

আপডেট সময় ০৯:২৪:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪

প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় সেই আবেদ আলী গ্রেপ্তার বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) পরীক্ষাসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবন ও পিএসসির ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তাসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সোমবার (৮ জুলাই) অভিযানে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিআইডির সাইবার বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি তৌহিদুল ইসলাম।

সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, আমরা নন ক্যডারের কিছু পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের তথ্য পেয়েছি। ওই সব পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। এখন পর্যন্ত আমরা ১৫ জনের বেশি গ্রেফতার করেছি। তাদের ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সিআইডি সূত্রে জানা গছে, গ্রেফতার ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন পিএসসির উপ-পরিচালক মো. আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান ও অফিস সহায়ক (ডিসপাস) সাজেদুল ইসলাম। এছাড়াও রয়েছেন সাবেক সেনা সদস্য নোমান সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ব্যবসায়ী মো. জাহিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত মো. মামুনুর রশীদ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিকেল টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুন হাসান, ব্যবসায়ী সহোদর সাখাওয়াত হোসেন ও বেকার যুবক লিটন সরকার। রয়েছেন আবেদ আলীর ছেলে সিয়ামও।

একটি বেসরকারি টেলিভিশনের অনুসন্ধানে গতকাল রোববার বেরিয়ে আসে এই প্রশ্নফাঁসের ঘটনা। গত ১২ বছরে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) পরীক্ষাসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে চক্রটির বিরুদ্ধে।

প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য সামনে আসার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর বিপুল সম্পদের তথ্য তুলে ধরছেন নেটিজেনরা। ছেলে ছাত্রলীগ নেতা, পড়েছেন বিদেশে, এরপর দেশের একটি ব্যয়বহুল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকার ভেতর তাঁর দুইটি বহুতল ভবন, মাদারীপুরে আলিশান রয়েছে এমন তথ্যও সামনে আসছে।

তবে সৈয়দ আবেদ আলীর ফেসবুক পেজে নিজের একটি হোটেলের তথ্য তুলে ধরেছেন তিনি নিজেই। ১৮ মে এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমাদের নতুন হোটেল এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলাম আজ। হোটেল সান মেরিনা, কুয়াকাটা।’

এই হোটেলের কাজে গিয়ে কুয়াকাটার সৈকতে তিনি নামাজ পড়ছিলেন। সেই নামাজের ছবি ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন। সেটি এখন রীতিমতো ভাইরাল।

গতকাল রোববার (৭ জুলাই) থেকে মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাপ-ছেলেকে নিয়ে রীতিমতো ঝড় উঠেছে। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের ছবি দিয়ে তীব্র সমালোচনা করছেন। দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি করছেন কেউ কেউ।

বেসরকারি টেলিভিশনটিতে প্রচারিত খবর থেকে জানা যায়, গত ১২ বছরে বিসিএসসহ নন-ক্যাডার নিয়োগের অন্তত ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটির ১২ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে।

গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত রেলওয়ের ৫১৬টি পদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিসিএসের প্রশ্নফাঁস চক্রে পিএসসির অন্তত ১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত। এর মধ্যে বিভিন্ন ইউনিটের উপ-পরিচালক, সহকারী পরিচালক, চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক, সাবেক সচিবের পিএসও রয়েছেন।

বিসিএসের প্রশ্নফাঁস চক্রের মূলহোতা পিএসসির অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম গণমাধ্যমটিকে জানান, ‘পিএসসির উপ-পপ্রশ্ন ফাঁস হয়। পিএসসির একজন সদস্যের অফিসে সংরক্ষিত ট্রাঙ্ক থেকে আবু জাফর রেলওয়ের প্রশ্ন আমাকে বের করে দিয়েছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, আমি এটাও জানি ৪৫তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস করা হয়।

বিসিএসের প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কমিশনের ক্ষমতাবলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠতে পারে। সেটি প্রমাণ হতে হবে। প্রমাণ হলে, কমিশন যদি মনে করে তাহলে প্রশ্নফাঁস হওয়া বিসিএসের কার্যক্রম বাতিলও হতে পারে।